বুধবার ● ১৯ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ » স্বামী-স্ত্রী মিলে মুয়াজ্জিনকে পরিকল্পনা করে গলা ও পরুষাঙ্গ কেটে হত্যা
স্বামী-স্ত্রী মিলে মুয়াজ্জিনকে পরিকল্পনা করে গলা ও পরুষাঙ্গ কেটে হত্যা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার কারণেই মুয়াজ্জিন সোহেল রানাকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে স্বামী রাজু আহম্মেদ। বুধবার সকালে হত্যাকারী রাজু আহম্মেদকে সদর উপজেলার বাগুটিয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান জানান, কালীগঞ্জের বলরামপুর গ্রামের হাকিম আলীর মেয়ের জুলিয়া ও কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের বকতিয়ার আলীর ছেলে সোহেল রানা চাপালী মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতো। এসময় তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পেলে গত ৪ মাস আগে জুলিয়ার বাবা-মা তাকে সদর উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামের চাঁদ আলীর ছেলে রাজু আহম্মেদ’র সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের পরও জুলিয়ার সাথে সোহেলের সম্পর্ক ছিল। মোবাইলে কথা বলা ও দেখা করত। এছাড়াও তাদের মাঝে অনৈতিক সম্পর্ক চলতে থাকে। বিষয়টি স্বামী রাজু আহম্মেদ জানতে পারে। সোমবার স্বামী রাজু আহম্মেদ স্ত্রী জুলিয়ার মাধ্যমে মোবাইলে মুয়াজ্জিন সোহেল রানাকে ডেকে আনে। প্রেমিকার ফোন পেয়ে রাজু জুলিয়ার সাথে দেখা করতে আসে। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে রাজু ও তার ২ জন সহযোগী সোহেল রানাকে ধরে নিয়ে মাঠের পাট ক্ষেতে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে পাটক্ষেতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রিংকু হোসেন বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কনক কুমার দাস ও সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান খান অভিযান চালিয়ে প্রেমিকা জুলিয়া খাতুনকে আটক করে। সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দী প্রদাণ করে। পরবর্তীতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বুধবার সকালে রাজু আহম্মেদকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও নিহতের মোবাইল ফোন। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দালালদের খপ্পরে পড়ে ৬ বছরেও সন্ধান মেলেনি ঝিনাইদহে ১৯ যুবকের
ঝিনাইদহ :: সাগর পথে অবৈধভাবে বিদেশে গিয়ে ৬ বছরে নিখোঁজ রয়েছেন ঝিনাইদহের চারটি ইউনিয়নের ১৯ জন যুবক। ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে গিয়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে এ সব যুবক নিখোজ হয়। এখন পরিবারগুলোতে অন্ধকার নেমে এসেছে। কোথায় আছে, কীভাবে আছে কোন খোঁজ খবরই মিলছে না তাদের। বেঁচে আছে কি-না তাও বলতে পারছেন না কেউ। পরিবারের মাঝে এখনও চলছে আর্তনাদ আর আহাজারি । তারপরও তাদের ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছেন স্বজনরা। এলাকার বেশ কয়েকজন আদম ব্যাপারি দালাল সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে তারা। পুলিশ প্রশাসন বলছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। এ দিকে দালাল সিন্ডিকেট নিউজ বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছে। সুত্রমতে, নিখোজদের মধ্যে একজনের স্ত্রী হলো শেফালি বেগম। কান্না থামছে না এখনও তার। চোখের পানি ঝরতে ঝরতে এখন তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তবুও এখনও পথ চেয়ে বসে আছেন স্বামী লাল চাদের ফেরার অপেক্ষায়। বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গাড়ামারা গ্রামে। মোজাহিদ ও মোস্তাক নামের দুই ছেলে নিয়ে তার সংসার। সংসারের অভাব অনটন কুরে কুরে খায় তাদের। একটু সুখের আশায় স্বামী লাল চাদ স্থানীয় দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে সাগর পথে মালেশিয়া যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। আর কথা হয়নি স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে। ২০১৩ সালের শেষের দিকে নিখোজ হওয়ার পর একে একে ৬টি বছর পার হয়ে গেছে। দেখা হওয়া তো দুরের কথা। আর কোনদিন কথা হবে কিনা তাও জানে না শেফালি বেগম। তার পরও স্বামী ও দুই ছেলে অপেক্ষার প্রহর গুনছে। শুধু শেফালি বেগমের স্বামী নয়, এ ভাবে তার মতো করে নিখোঁজ রয়েছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ১৯ জন মানুষ। তাদের কারোরই কোন সন্ধান নেই। প্রতিটি পরিবারের একই অবস্থা। সচ্ছলতার পরিবর্তে ক্ষুধা আর দারিদ্র্য নিত্যদিনের সঙ্গী তাদের। এখন সবাই অপেক্ষায় আছে তাদের ফিরে আসার। নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে সদর উপজেলার হলিধানি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের ৩জন তারা হলো আব্দুল হামিদ,লাবলুর রহমান জিতু, আরাফাত রিপন হোসেন, একই ইউনিয়নের গাড়ামারা গ্রামের ৮ জন,তারা হলো রিপন হোসেন, ফরিদ হোসেন, আবু বক্কর, নাজমুল হক, লাল চাদ, মাসুদ রানা মবু, আলমগীর হোসেন, অলিয়ার রহমান, ফুরসন্ধি ইউনিয়নের মিয়াকুন্ডু গ্রামে ৪ জন, তারা হলো ইউনুচ আলী,বাবু জোয়ারদার, বিপুল জোয়ারদার,ওলিয়ার রহমান ও ঘোড়শাল ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামে ৩ জন তারা হলো তারিক মন্ডল, উলাফত মন্ডল, শহিদুল ইসলাম ও মধুহাটি ইউনিয়নের মহামায়া গ্রামের ১ জন তিনি হলো জালাল উদ্দিন রয়েছেন। নিখোঁজের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামের আদম ব্যাপাড়ি পিকুল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে পানি পথে এ অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সে এলাকার অনেক যুবকদের পাঠিয়েছে তার পরে এখনও তাদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। রিপন হোসেন এ দালালদের মাধ্যমে গিয়ে এখনও নিখোজ রয়েছে। দালাল পিকুলের একটি বড় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে থাকে বলে তারা আরও অভিযোগ করেন। যার কারনে নিখোজের অনেকেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস পাই না। তাদের মধ্যে বাবা গোলাম রসুল ছেলে রিপনের ফেরত পেতে তারা র্যাবের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয় এলাকাবাসি ও কুমড়াবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে সাগর পথে এলাকার দালাল পিকুল হোসেন সহ, কুমড়াবাড়িয়ার টিটু হোসেন, রামনগর গ্রামের সাত্তার, নাটাবাড়িয়া গ্রামের আবুল কালামসহ একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট রয়েছে। এরা কম টাকায় এলাকার যুবকদের প্রলোভন দেখিয়ে মালেয়েশিয়া, সৌদি, কাতার, ইরান, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে আদম ব্যবসা করে চলেছে। জড়িত আদম ব্যাপাড়িদের বিরুদ্ধে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে দালাল সিন্ডকেটের হোতা পিকুল হোসেন মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, তিনি অবৈধ পানি পথের এ ব্যবসা করেন না। এ ছাড়াও অপর সিন্ডিকেটের হোতা টিটু হোসেন এর সাথে ফোনে বক্তব্য নিলে তিনি অস্বীকার করেছেন। তিনি বিদেশে লোক পাঠান না বলে দাবি করেন। এলাকাবাসি আরও জানিয়েছে, তারা এ অবৈধভাবে মানুষ বিদেশে পাঠানোর ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছে। স্থানীয় কিছু হলুদ সাংবাদিক ও কাতলামারি পুলিশ ক্যাম্পকে ম্যানেজ করে রম-রমা এ পানি পথের ব্যবসা বীরদর্পে করে আসছে। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে দিন দিন নিখোজের তালিকা বড় হতে পারে বলে ধারনা করছেন। অপরদিকে সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান খান জানিয়েছেন, দালাল সিন্ডিকেট সদস্যরা যেখানেই থাকুক না কেনো তাদের খুজে বের করে আনা হবে। ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান জানান, এ মানব পাচার ও অবৈধভাবে যারা যুবকদের সাগর পথে বিদেশে পাঠিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা যত ক্ষমতাশালী হোক না কেনো অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হবে। আর এ সিন্ডিকেটের সাথে কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে ব্যবস্থা বলে তিনি হুশিয়ারি করেন।
পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ : নেপথ্যে পরকীয়া
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তবে নেপথ্যে স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার ঘটনা রয়েছে বলে তার স্বামী শোভন জানায়। আহত অবস্থায় নববধুকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, গত ১২ মে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শেরকান্দি গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে পুলিশ সদস্য শাহজালাল রহমান শোভনের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার উমেদপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম সাচ্চু মিয়ার মেয়ে শাহিনা খাতুনের। বর্তমানে শোভন ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনসে কর্মরত আছেন। গত ৮ জুন থেকে ঝিনাইদহ শহরের হামদহ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে তারা বসবাস শুরু করে। শাহিনা খাতুন অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই কারণে-অকারণে তাকে মারধর করে পুলিশ সদস্য শোভন। মঙ্গলবার সকালে শাহিনা খাতুন ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার কথা বললে গালি-গালাজ ও মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে দুপুরে তাকে ঘরের মধ্যে আটকে রড দিয়ে মারধর করে। এমনকি তাকে গলায় রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে। এসময় সে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে তাকে উদ্ধারের জন্য দরজা খুলতে বলে। শোভন দরজা খুলে দিলে মেয়েটি ঘর থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে শোভন তাকে ধারালো বঠি দিয়ে তাড়া করে। তখন পরিবারের লোকজন শাহিনাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য শাহজালাল রহমান শোভন বলেন, আমি আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোন প্রায়ই বিজি পাই, সে রুবেল নামে একটা ছেলের সাথে কথা বলতো যার নাম¦ার ০১৯২৬২০৭০৭২। মোবাইল এত বিজি কেন এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে কোন জবাব দেয়নি। এছাড়াও পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে তাকে চড়-থাপ্পড় মারতে বাধ্য হয়েছি।
ঝিনাইদহে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে ওরিয়েন্টশন কর্মশালা
ঝিনাইদহ :: জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে ঝিনাইদহে সাংবাদিকদের সাথে ওরিয়েনটেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে এ এ কর্মশালার আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় জানানো হয়, আগামী ২২ জুন ৬ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী ২৫ হাজার ৫’শ ৩ জন ও ১২ মাস থেকে ৬৯ মাস বয়সী এক লাখ ৯৬ হাজার ৬’শ ৫১ জন শিশুকে ভিটামির এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এ জন্য জেলার ৬টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভা এলকায় ১৮’শ ৭১টি কেন্দ্র খোলা হবে। এ কাজে ৩ হাজার ৭’শ ৪২ জন স্বেচ্ছাসেবি এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ৪’শ ৯৪ জন মাঠকর্মী সহায়তা করবেন। কর্মশালায় সিনিয়র সাংবাদিক বিমল কুমার সাহা, মিজানুর রহমান, মাহমুদ হাসান টিপু, শেখ সেলিমসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ অংশ নেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা: প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ। এসময় সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনকে সফল করার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।