সোমবার ● ২৪ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » দাদন ব্যবসায়ি চক্রের কবলে বিপন্ন গ্রহীতারা
দাদন ব্যবসায়ি চক্রের কবলে বিপন্ন গ্রহীতারা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সংঘবদ্ধ দাদন ব্যবসায়ি চক্রের খপ্পরে এবং নানাভাবে হয়রানির কবলে পড়ে আর্থিকভাবে সর্বসান্ত ও লাঞ্ছিত হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে অসহায় মানুষ। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও র্যাব কর্তৃপক্ষের কাছে এই দাদন ব্যবসায়ি চক্রের অবৈধ কারবার বন্ধে ও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।
আজ সোমবার গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাদন ব্যবসায়িদের হাতে নির্যাতিত ও নিপীড়িত আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভূক্তভোগীদের পক্ষে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দনগর গ্রামের শিক্ষক সফির উদ্দিন ও তার সহযোগী একই উপজেলার শিক্ষক মো. সাহারুল ইসলাম ও ছায়ফুল ইসলাম এ দাবি জানান। লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, গোবিন্দগঞ্জের দাদন ব্যবসায়ি চক্রের মো. আব্দুল হান্নান সরদার, মাদ্রাসা শিক্ষক আসাদুজ্জামান, স্টীল ফার্নিচার ব্যবসায়ি প্রদীপ কুমার দেব, শাহীন মিয়া, মিলন মিয়া, আব্দুল মান্নান শেখ, রেজাউল শেখ, খাজা মিয়া, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, শরিফুল ইসলাম, মোসলেম উদ্দিন, ইব্রাহিম শেখ, জাহাঙ্গীর শেখ, মো. সৌরভ মিয়া, মঞ্জুরুল হক এবং শিবগঞ্জ উপজেলার গুজিয়াহাটে পউস প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা বুলু মিয়া দীর্ঘদিন যাবত অধিক সুদে এবং চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ নিয়ে দাপটের সাথে দাদন ব্যবসা চালিয়ে এতদঞ্চলের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
অত্যাধিক প্রয়োজনে নিরুপায় হয়ে উক্ত সফির উদ্দিন, সাহারুল, ছায়ফুলসহ অন্যান্য ব্যক্তিরা দাদন ব্যবসায়ির কাছে দাদনের টাকা গ্রহণ করে এবং নিয়মিত সুদ ও দন্ডসুদ প্রদান করার পরও গত ২৫ মে গৃহীত সমুদয় টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু এতদসত্ত্বেও তাদের কাছে নেয়া চুক্তিপত্র ফেরত চাইলে দাদন ব্যবসায়িরা তা ফেরত দিচ্ছে না। উপরন্ত তাদের কাছ থেকে ওই চুক্তিপত্র ও স্বাক্ষরিত চেকের পাতা জিম্মি করে রেখে তাদের কাছে আরও অতিরিক্ত টাকা দাবি করছে। উক্ত টাকা দিতে অস্বীকার করলে ওই সংঘবদ্ধ চক্রটি দাদন গ্রহীতাদের অপহরণ, গুম, মারপিট করাসহ নানা ধরণের হুমকি প্রদান করে আসছে। ফলে এ সমস্ত অসহায় মানুষ দাদন ব্যবসায়িদের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এমনকি কর্মস্থলেও যেতে না পেরে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এমনকি দাদন ব্যবসায়িদের ভয়ে বিদ্যালয়ে যেতে না পারায় সাহারুল ইসলামকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।
মা ও শিশুর পুষ্টি উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে অবহিতকরণ সভা
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার মা ও শিশুর পুষ্টি উন্নয়নের লক্ষ্যে ৫ বছর মেয়াদী একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের অর্থায়নে ইকো কো-অপারেশন ও আরডিআরএস’র উদ্যোগে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
সোমবার গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাসটেইন্ড অপারচুনেটিস ফর নিউটেশন গভার্নেন্স ( সঙ্গ) নামে এই প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন এতে সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোছা. রোখছানা বেগম, ইকো কো-অপারেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর সেসা এসটেঞ্জার এবং আরডিআরএস ও ইকো কো-অপারেশনের আবুল কালাম আজাদ, হুমায়ুন খালিদ, মোস্তফা নুরুল ইসলাম রেজা, তাওফীকুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় মৌলিক পুষ্টি এবং জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটি সম্পর্কিত বক্তব্য উপস্থাপিত করেন সিভিল সার্জনের পক্ষে ডাঃ আবু আহম্মদ আল মামুন।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি, উদাখালী, কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন, সুন্দরগঞ্জের বেলকা, চন্ডিপুর, হরিপুর, শ্রীপুর ও তারাপুর ইউনিয়ন ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, ঘাগোয়া, গিদারী ইউনিয়নে এবং কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী রমনা ও চিলমারী ইউনিয়ন, রৌমারীর বন্দরে, দাঁতভাঙ্গা, যাদুরচর ইউনিয়ন ও রাজিবপুর উপজেলার চর রাজিবপুর ও মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পভূক্ত এলাকার ১ লাখ ২৮ হাজার পরিবারের ১০ থেকে ১৯ বছর বয়স্ক ৮০ কিশোর-কিশোরী, প্রজননক্ষম প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ৯৫ হাজার, প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ৯০ হাজার, ৫ বছরের কম বয়সী শিশু ৫৩ হাজার ও ২ বছরের কম বয়সী ২৫ হাজার শিশুকে এই প্রকল্পের আওতায় পুষ্টির উন্নয়নে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হবে। সভায় উল্লেখ করা হয় প্রকল্পভূক্ত গাইবান্ধা এবং কুড়িগ্রাম জেলায় অপুষ্টি রয়েছে যথাক্রমে শতকরা ৪৫ এবং ৪১ ভাগ। প্রকল্পের আওতায় অপুষ্টি নিরসনে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।