বুধবার ● ১০ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » জনবল সংকটে গাইবান্ধার পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত দরিদ্র মানুষ
জনবল সংকটে গাইবান্ধার পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত দরিদ্র মানুষ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: জনবল সংকট ও চিকিৎসক না থাকায় গাইবান্ধা সদর উপজেলার বালুয়া বাজার সংলগ্ন রামচন্দ্রপুর পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নানা সমস্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ফলে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্র সংশি্লষ্ট এলাকার দরিদ্র অসহায় মানুষ চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। প্রয়োজনীয় সংরক্ষণ ও যত্নের অভাবে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিশাল অবকাঠামো ও আবাসিক ভবনগুলোর বেহাল অবস্থা।
জানা গেছে, রামন্দ্রপুর ইউনিয়নের পার্বর্তীপুর মৌজায় ৬ একর জমির উপর পল্লীর অসহায় মানুষদের চিকিৎসাদানের লক্ষ্যে পাকিস্তান আমলে একটি প্রকল্পের আওতায় ১০ বেডের এই হাসপাতালটি স্থাপন করা হয়। সে সময় ওই হাসপাতালে দু’জন চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পদে ২৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগদান করা হয়। স্বাধীনতার পর থেকে এ হাসপাতালটিতে স্বাস্থ্য বিভাগের নজর কমতে থাকে। ফলে ক্রমান্বয়ে হাসপাতালটি থেকে রোগীরা চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে শুরু করে। ঢিমেতালে চলতে থাকে এর কার্যক্রম। ২০০৯-২০১০ অর্থ বছর পর্যন্ত হাসপাতালে যথারীতি বেড চালু থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে এরপর অভ্যন্তরীণ বিভাগ বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়। বেডগুলো এখন শূন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা যায়, এই পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে দু’জন মেডিকেল অফিসারসহ পদ রয়েছে ১৯টি। কিন্তু ২ জন মেডিকেল অফিসারের পদই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। বর্তমানে একজন উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার এবং একজন ফার্মাসিস্ট এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির বহিঃর্বিভাগে আগত রোগীদের চিকিৎসা প্রদান ও প্রয়োজনীয় প্রেসক্রিপশনসহ ওষুধ দিচ্ছেন। তদুপরি এ দু’জন কর্মকর্তাও নিয়মিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপস্থিত থাকেন না। পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, তাদের অনুপস্থিতিতে ওয়ার্ডবয় ও অফিস সহায়ক চিকিৎসা প্রদানের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
জানা গেছে, এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বাকি ১৭টি পদের মধ্যে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে দেয়া হয়েছে ১২ জনকে। শুধুমাত্র ৫ জন মাত্র এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত রয়েছেন। বাকি ১২ জনের মধ্যে চারজন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও দুই সহকারি নার্স ডেপুটেশনে কর্মরত রয়েছেন গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে। এছাড়া অপর ৬ জনকে গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে ডেপুটেশনে দেয়া হয়েছে।
রামচন্দ্রপুরের স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে আশেপাশের পল্লী এলাকার দরিদ্র মানুষদের মধ্যে এখনও প্রতিদিন গড়ে ৬৪ জন থেকে ১৫০ জন রোগী বহিঃর্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। কিন্তু চিকিৎসক, প্রয়োজনীয় জনবল সংকট থাকায় এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আগত রোগীরা সুষ্ঠু চিকিৎসা পাচ্ছেন না এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র তাদেরকে দেয়া হচ্ছে না।
তদুপরি এই হাসপাতালটিতে এখন জরাজীর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। হাসপাতালের মাঠে চড়ছে গরু, ছাগল ও ভেড়া। পার্শ্ববর্তী লোকজন মাঠে ধান, খড় এবং ঘুটে শুকাচ্ছে। ফলে বর্তমানে এই চিকিৎসা কেন্দ্রটির একেবারেই বেহাল অবস্থা। অপরদিকে হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারসহ অন্যান্য অবকাঠামো অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকায় সেগুলোর এখন জরাজীর্ণ দশা। অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া প্রায় জন শূন্য অবস্থার কারণে রাতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে সমাজ বিরোধী লোকজনের আড্ডাখানায় পরিণত হয়। অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগও রয়েছে প্রচুর।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
গাইবান্ধা :: জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে বুধবার গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মৎস্য সপ্তাহের প্রস্তুতিমূলক সভা জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর কবীর, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল দাইয়ান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এসএম ফেরদৌস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জয় ব্যানার্জি, বিটিভি গাইবান্ধা প্রতিনিধি আবেদুর রহমান স্বপন, সাংবাদিক সরকার মো. শহিদুজ্জামান, মৎস্য খামারী সাইফুল ইসলাম দুলু, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক মাহমুদা বেগম প্রমুখ।
১৭ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মৎস্য সপ্তাহের উলে¬খযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে প্রেস বিফ্রিং, আলোচনা সভা, বর্ণাঢ্য র্যালী, পোনা মাছ অবমুক্তকরণ, মৎস্য মেলা, সকল মৎসচাষীদের পুরস্কার প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা, গুণগত মৎস্য পোনা উৎপাদিত খামারীকে পুরস্কার প্রদান ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মৎস্য চাষ বিষয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে একই কর্মসূচি পালন করা হবে।