বৃহস্পতিবার ● ১১ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও করতোয়াসহ বিভিন্ন নদ নদীর পানি বৃদ্ধি
গাইবান্ধার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও করতোয়াসহ বিভিন্ন নদ নদীর পানি বৃদ্ধি
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গত সাত দিনের একটানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে গাইবান্ধার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, করতোয়া ও ঘাঘটসহ বিভিন্ন নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। সেইসাথে নদী ভাঙনের তীব্রতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
এতে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা এবং সদর উপজেলার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিচু এলাকাসহ চরাঞ্চলগুলোতে পানি উঠতে শুরু করেছে। ফলে বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ও অস্থায়ী নৌঘাটগুলো তলিয়ে গেছে। সুন্দরগঞ্জের বেলকা, তারাপুর, হরিপুর, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর, গাইবান্ধা সদরের কামারজানি ও মোল্ল¬ারচর, ফুলছড়ির এরেন্ডাবাড়ি, ফজলুপুর, কঞ্চিপাড়া, গজারিয়া, উড়িয়া ও ফুলছড়ি এবং সাঘাটার ভরতখালি, হলদিয়া, ঘুড়িদহ ইউনিয়নের চরাঞ্চলের নিচু এলাকাগুলো তলিয়ে যাওয়ায় ওইসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা বিঘিœত হচ্ছে। এছাড়া ফসলী ক্ষেত তলিয়ে গেছে অনেক এলাকায়।
এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ফলে গত দু’সপ্তাহে নদী ভাঙনে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ও শ্রীপুর ইউনিয়নের আবাদি জমি, রাস্তাসহ শতাধিক বাড়িঘর এবং দু’শতাধিক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। চন্ডিপুর ইউনিয়নের উজান বোচাগাড়ি গ্রামের ঠাকুরডাঙ্গী গ্রামের রাস্তাটি নদীতে বিলীণ হয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানা গেছে, সকল নদ নদীর পানি বাড়ছে। তবে এখনও প্রতিটি নদীর পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢল এই হারে অব্যাহত থাকলে বন্যারও আশংকা রয়েছে।
পাঁচদিনেও সমাধান হয়নি : ঢাকা-গাইবান্ধা বাস চলাচল অনিশ্চিত
গাইবান্ধা :: পরিবহন শ্রমিক ও বহিরাগত পরিবহন মালিকদের দ্বন্দ্বের কারণে গত ৬ জুলাই থেকে একটানা পাঁচদিন যাবত গাইবান্ধা থেকে ঢাকার সাথে চলাচলকারি দুরপাল্লার চেয়ারকোচগুলো বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে আলহামরা, এসআর, শ্যামলী, হানিফ, অরিন, একতা পরিবহনের গাড়িগুলো। মালিক ও শ্রমিক কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসন না হওয়ায় কবে নাগাদ চেয়ারকোচগুলো চালু হবে তা অনিশ্চিত। ফলে এ জেলার ঢাকায় যাতায়াতকারি বাসযাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শ্রমিকদের সূত্র জানা গেছে, দুরপাল্লার চেয়ারকোচগুলোর কাছে জেলা বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়ার সময় নানা ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রতিদিন পূর্বের ১৮০ টাকার পরিবর্তে ২৬০ টাকা করে দেয়ার দাবি জানায় তারা। সেইসাথে শ্রমিকরা মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধেরও দাবি জানায়। এ নিয়ে গাইবান্ধা জেলা পর্যায়ের মালিকদের সাথে শ্রমিক সংগঠনের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে গত ৬ জুলাই থেকে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মটর মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনের সাথে বিষয়টি নিস্পত্তি হয়। ফলে একদিন পরেই গাইবান্ধা থেকে ঢাকার চেয়ারকোচ চলাচলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে জেলা মটর মালিক সমিত্রি সুত্রে জানা গেছে।
কিন্তু ঢাকা বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের সাথে শ্রমিক সংগঠনের মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ, বর্ধিত চাঁদা প্রদান, সড়কে যানবাহনের নিরাপত্তা বিধানসহ অন্যান্য বিষয়ে নিস্পত্তি না হওয়ায় তারা গাইবান্ধায় একটানা পাঁচদিন যাবত চেয়ারকোচগুলো চলাচল বন্ধ রেখেছে।
এদিকে ৭টি পরিবহন কোম্পানীর প্রতিদিন গড়ে যেখানে ৪টি থেকে ৬টি পর্যন্ত চেয়ারকোচ গাইবান্ধা-ঢাকায় চলাচল করতো। সেখানে একটানা পাঁচদিন যাবত ওই সাতটি পরিবহনের সকল চেয়ারকোচ বন্ধ থাকায় যাত্রীদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলে গাইবান্ধার সর্বস্তরের বাসযাত্রীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে গাইবান্ধা-ঢাকায় বন্ধ থাকা চেয়ারকোচ চলাচল অবিলম্বে চালু করার দাবি জানানো হয়েছে।
গাইবান্ধায় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত
গাইবান্ধা :: বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার গাইবান্ধায় বর্ণাঢ্য র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। র্যালীটি স্থানীয় স্বাধীনতা প্রাঙ্গন থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘জনসংখ্যা ও উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ২৫ বছর: প্রতিশ্র“তি দ্রুত বাস্তবায়ন’।
পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সামাদ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারি পরিচালক ডাঃ ফারুক আলম নুর, সাদুল্যাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহরিয়ার খান বিপ¬ব, প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রহমান স্বপন, ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ইদু, মালিবাড়ি ইউনিয়নের এসএসিএমও মো. মনজুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে বাল্য বিয়ে ও জনসংখ্যা প্রতিরোধ করতে হবে। মেধা সম্পন্ন জাতি গঠন করতে মাঠ পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা সেবা কার্যক্রম আন্তরিকতার সাথে বাড়াতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, চরাঞ্চলের জীবন যাত্রার মান এখনও উন্নত হয়নি। সেখানে পরিবার পরিকল্পনা সেবা কার্যক্রম এখনও পিছিয়ে রয়েছে। অনুষ্ঠানে ৮ জন মাঠকর্মী ও ১০টি প্রতিষ্ঠানকে সাফল্যজনক কর্মকান্ডের জন্য পুরস্কৃত করা হয়।