শুক্রবার ● ১৯ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » রাজশাহীতে শিশুর গলা কাটার গুজব
রাজশাহীতে শিশুর গলা কাটার গুজব
রাজশাহী প্রতিনিধি :: রাজশাহীর বাগমারায় এক শিশুর গলা কাটার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে বাগমারা উপজেলার সর্বত্ব একই আলোচনা। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য অনেকেই গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ফোন করে জানতে চান।
গুজব ছড়িয়ে পড়ে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার সূর্যপাড়া গ্রামে এক শিশু গলা কাটার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে বাগমারাসহ আশপাশের এলাকার শিশুদের অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক জড়িয়ে পড়েছে। তবে গুজবে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়েছে। এই সঙ্গে গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে শোকেজের কাঁচ খসে পড়ে মিজানুর রহমান মিজান (৫) নামের এক শিশুর গলার পাশে কেটে যায়। রাতেই শিশুটি প্রথমে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শিশুটিকে হাসপাতালের ৩৩ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ওসি বলেন, রাতেই তিনি নিজে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই ঘরে শোকেজের খসে পড়া কাঁচের টুকরো পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে কোন কারণে শোকেজের কাঁচ খসে পড়ে শিশুটির গায়ের উপর পড়ে। মায়ের সঙ্গে শিশুটি মেঝেতে শুয়ে ছিল। কিন্তু এ ঘটনাটি ছেলে ধরা শিশুর গলা কাটার চেষ্টা চালিয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।
আহত ওই শিশুর পিতার নাম আতিকুর রহমান মিঠুন। শিশুটির মায়ের নাম ফিরোজা বেগম। তাদের বাড়ি উপজেলার সূর্যপাড়া গ্রামে।
শিশুটির দাদি রেখা বেগম জানান, তার ছেলে মিঠু খাটের উপর শুয়ে ছিল। আর ছেলের বউ নাতিকে নিয়ে মেঝেতে ছিল। গরমের কারণে দরজা খোলা ছিল। রাতে তাদের চিৎকার শুনে ঘরে গিয়ে শোকেজের কাচ ভাঙা পায়।
তবে পুত্রবধূ ফিরোজা বেগমের বরাদ দিয়ে রেখা বেগম আরও জানান, রাতে একজন লোক ঘরে প্রবেশ করে তার নাতির গলা কাটার চেষ্টা করে। এ সময় তার পুত্রবধূর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এতে শোকেজের কাঁচ ভেঙে পড়ে। তবে শিশুটির গলা কি ভাবে কেটে গেছে তা বলতে পারেননি তিনি।
প্রতিবেশী কলেজ শিক্ষক শাহিনুর রহমান বলেন, হৈচৈ শুনে রাতেই ওই বাড়িতে যায়। মিঠুন ও তার স্ত্রী ফিরোজার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাদের কথায় মনে হয়েছে একজন লোক তাদের ঘরে ঢুকেছিল এবং তার সঙ্গে মিঠুনের স্ত্রীর ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় ধাক্কা খেয়ে শোকেজের কাঁচ খসে পড়ে। এতে শিশুটির গলা কেটে যায়।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু ফিরোজা বলেছে, একজন লোক ঘরে ডুকে তার ছেলের গলা কাটার চেষ্টা করছিল সেই কথাটি ছড়িয়ে পড়েছে। এতে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শিশুদের স্কুলে পাঠাবে কিনা অনেকেই তার কাছে জানতেও চেয়ে বলে জানান এই শিক্ষক।
শিশুদের মাথা কাটার গুজবে আতংক না হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম।
তিনি বলেন, শিশু মিজানুর রহমানের গলা কেটে যাওয়ার বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে। কাঁচ পড়ে তার গলা সামান্য কেটে যায়। এটি শুধুই গুজব ছড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়। যারা এ ধরণের গুজব ছড়ানোর সাথে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শিশুদের গলা কাটা, মাথা কাটার বিষয়ে আতংকিত না হওয়ার জন্য অভিভাবকদের আহবান জানান তিনি।
রাজশাহীতে স্ত্রীর গলা কেটে থানায় হাজির স্বামী
রাজশাহী :: রাজশাহীর পবা উপজেলার দামকুড়া ইউনিয়নের কলারটিকর এলাকায় লাবলি বেগম (২৮) নামের এক গৃহবধূকে পায়ের রগ ও গলা কেটে হত্যা করেছে তার স্বামী। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ ঘটনার পর গৃহবধূর স্বামী শরিফুল ইসলাম রেন্টু নিজে থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে স্ত্রীকে হত্যার কথা জানায়।
রেন্টু পবা উপজেলার দামকুড়া থানার কলারটিকর গ্রামের কাশেম উদ্দিন খোকার ছেলে।
দামকুড়া থানার ওসি মাজারুল ইসলাম জানান, রেন্টু রাত সাড়ে তিনটার দিকে থানায় হাজির হয়ে স্ত্রীকে পায়ের রগ ও গলা কেটে হত্যার করার কথা জানিয়েছে। পরে পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর গলাকাটা লাশ পায়। সকালে পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগে পাঠায়।
ওসি বলেন, স্ত্রীর পরকিয়ার জেরে দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের মধ্যে বিবাদ চলছিল। এর জের ধরে স্ত্রীকে পায়ের রগ ও গলা কেটে হত্যা করে বলে রেন্টু প্রাথমিকভাবে পুলিশকে জানিয়েছে।