সোমবার ● ২২ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে : খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে পানিবন্দী মানুষ
গাইবান্ধায় বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে : খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে পানিবন্দী মানুষ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। নদীর বাঁধ ভাঙ্গা পানি এখনও নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বন্যা কবলিত এলাকার পানিবন্দী পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি সংকট, স্যানিটেশনের অব্যবস্থা, গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা ও গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা এবং জেলার ৪৯টি ইউনিয়নের ৩৮৩টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৩২৮ জন। ৪৪ হাজার ৭৯২টি বসতবাড়ি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮০টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৭৪ হাজার ১০৪ জন বন্যার্ত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এ পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ১৫০ মে. টন চাল, ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৬ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া গেছে। সেখান থেকে ইতোমধ্যে ৯শ’ ৫০ মে. টন চাল, ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৫ হাজার ৬শ’ শুকনো খাবার দুগর্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ কাজ চলছে। গাইবান্ধা সদর উপজেলার গোদারহাট, কুঠিপাড়া, কোনারপাড়া, ধুতিচোরা, বাগুড়িয়া ও কামারজানি এলাকার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শন ও বন্যাদুর্গত মানুষের সাথে মতবিনিময় শেষে গিদারী ইউনিয়নের গোরাইন গ্রামে বন্যার্ত পরিবারের মাঝে ত্রান সামগ্রী (খাবারের কার্টুন, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও বিশুদ্ধ পানির জ্যারিকেন) বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (২১ জুলাই) ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ১০১ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া করতোয়া নদীর পানি নতুন করে বৃদ্ধি না পেলেও এখনও বিপদসীমার ৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাইবান্ধায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গুমাণীগঞ্জ ও মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নে বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার (২১ জুলাই) বেলা ১১টায় গুমাণীগঞ্জ ইউনিয়নের খরিয়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী তার দুই বছরের শিশু নিশাতকে বাড়ির উঠানে বসিয়ে রেখে উঠান ঝাড়ু দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে নিশাতের মা লক্ষ করেন শিশুটি সেখানে নেই। এরপর বাড়ির চারপাশে খোঁজ করে শিশুটিকে না পেয়ে তিনি প্রতিবেশীদের বাড়িতে খোঁজ করেন। এ সময় প্রতিবেশীরা মিলে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে বাড়ির পাশে খালে আসা বন্যার পানি থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
অপরদিকে, একই উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছা. জান্নাতি খাতুন বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে গোসল করার সময় ডুবে গেলে তার মৃত্যু হয়। জান্নাতি মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের জিরাই গ্রামের আব্দুল মজিদের মেয়ে বলে জানা গেছে।