বৃহস্পতিবার ● ২৫ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ছেলেধরা নয়-বলৎকার শেষে মাদ্রাসা ছাত্রকে গলা কেটে হত্যা : চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার
ছেলেধরা নয়-বলৎকার শেষে মাদ্রাসা ছাত্রকে গলা কেটে হত্যা : চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গায় মাদ্রাসা ছাত্র আবির হোসেন হত্যা কান্ডে প্রাথমিক তদন্ত এবং উক্ত হত্যা কান্ডের বিষয়ে ডাক্তারদের মতামতের ভিত্তিতে জানা গেছে বলৎকার পূর্বক ভিকটিমকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মাহাবুবুর রহমান পিপিএম তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাস্টাসে এই সব তথ্য জানান। তিনি আরো জানান, “ছেলে ধরা” গুজবের সাথে এই ঘটনার কোন সম্পর্ক নেই। চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গায় মাদ্রাসা ছাত্র আবির হোসেন হত্যা কান্ডের রহস্য উৎঘটন করতে মাঠে নেমেছে র্যাবের ডগ স্কোয়াড। বুধবার বেলা আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে র্যাবের ডগ স্কোয়াাড বাহিনী ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে এসে অভিযান শুরু করেছে। জানাগেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা নূরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রথম শ্রেনীর ছাত্র আবির হোসেন (১১) মাদ্রাসা ছাত্রের মস্তক বিহিন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে আবির হোসেন তার কয়েককজন সহপাঠির সাথে রাতে এশার নামাজ পড়ার জন্য রুমের বাইরে আসে ওযু করার জন্য। এসময় অন্যরা ওযু সেরে নামাজ পড়তে যাচ্ছিল তখন আবির হোসন বসে ওযু করছিল। তার সহপাঠিদের বলে তোরা যা আমি আসছি। এরপর রাতে খাবার খাওয়াার সময় তার অনুপস্থিতির বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। সাথে সাথে মাদ্রাসার হুজুর, সহপাঠি ও গ্রামবাসী মিলে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে তার কোন সন্ধান পায়নি। রাতে বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানায়। বুধবার সকালে কয়রাডাঙ্গা গ্রামের একটি ইটভাটার পাশে ভালাইপুর মাঠের একটি আম বাগানে স্থানীয়রা আবিরের মাথা বিহিন লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চুয়াাডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এঘটনার সাথে কে বা কারা জড়িত রয়েছে তাদের অতি দ্রুত সনাক্ত এবং গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যহত রয়েছে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা থেকে র্যাব’র ডগ স্কোয়াড ঘটনাস্থলে পৌছে রহস্য উৎঘটনের জন্য অভিযান শুরু করেছে। এ ঘটনার আনুমানিক ৮ঘন্টা পর চুয়াডাঙ্গা পুলিশ মাহাবুবুর রহমান পিপিএম তার ফেসবুক স্ট্যাস্টাসে উল্লেখ করে জানান, প্রাথমিক তদন্ত এবং উক্ত হত্যা কান্ডের বিষয়ে ডাক্তারদের মতামতের ভিত্তিতে জানা যায় যে, বলৎকার পূর্বক ভিকটিমকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ময়না তদন্তে মৃতদেহ থেকে সোয়াব এবং ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে। উক্ত ঘটনার সাথে কে বা কারা জড়িত রয়েছে তাদের অতি দ্রুত সনাক্ত এবং গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যহত রয়েছে। তিনি আরো জানান, “ছেলে ধরা” গুজবের সাথে এই ঘটনার কোন সম্পর্ক নেই।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা দৌলতপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী মোহম্মদ আলী হোসেনের পুত্র। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবুল হোসেন মোল্ল্যা জানান,আবিরের বাবা মোহম্মদ আলী হোসেনের আগের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। ১০ বছর আগে সে কালীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের মৃত নাজেম মন্ডলের মেয়ে গোলাপী খাতুনকে বিয়ে করে এ গ্রামেই সংসার শুরু করে। এরপর থেকে প্রায় ১০ বছর ধরে এ গ্রামটিতেই বসবাস করে আসছে। টানাটানির সংসারে থেকে অনেক কষ্ট করে বছর খানেক আগে সে সংসারের সুদিন ফেরাতে দুবাই পাড়ি দেয়। ওই গ্রামের বাসিন্দা এমদাদ হোসেন জানান, মা-বাবা সাংসারিক শত অভাবের মধ্যদিয়েও আবিরের বাবা দুবাই গেছে সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে। আবিরের ছোট আকিদ নামেরও তাদের আরেকটি ৩ বছরের শিশু সন্তান রয়েছে। সংসারের টানাটানির মধ্যদিয়েও সন্তানদের মানুষ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল এ দম্পতি। কিন্তু এরইমধ্যে মা বাবার বুক খালি করে দিল সন্ত্রাসীরা। আরো উল্লেখ্য, দৌলতপুর গ্রামের তার এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে বছর খানেক আগে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের নুরানী হাফেজিয়া এতিমখানায় শিশু আবিরকে ভর্তি করে। এরপর থেকে সে এ প্রতিষ্ঠানটিতে লেখাপড়া করে আসছিল। আবিরের প্রতিবেশি ও তার শিক্ষক তামিম বিন ইউসুফ জানান, আবিরের বাবা প্রবাসে যাওয়ার কিছুদিন আগে আবিরকে চুয়াডাঙ্গর একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে। সেখানে হাফেজী পড়ছিল। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন জানান, হত্যার শিকার হওয়া শিশুটির বাবা মা অত্যন্ত নিরীহ প্রকৃতির মানুষ। এমন ক্ষতি অপুরণীয় ও অকল্পনীয়। মাদ্রাসার মোহতামিম আবু হানিফ জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাতে এশার নামাজের পর থেকে আবিরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি মাদ্রাসা কমিটি ও পুলিশকে জানানোর পরও খোঁজ মিলছিল না। পরে সকালে মাদ্রাসার পেছনের আমবাগান থেকে আবিরের মাথাবিহীন লাশ পাওয়া যায়। এদিকে, এ ঘটনার পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মাদ্রাসা ছেড়ে নিজ নিজ বাড়িতে যেতে শুরু করে মাদ্রাসার ছাত্ররা।
ছেলেধরা গুজবে কান দিবেন না, গুজব ছড়াবেন না-ঝিনাইদহে পুলিশ সুপারের কড়া হুশিয়ারি
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান বলেছেন, ছেলেধরা গুজবে কান দিবেন না, গুজব ছড়াবেন না। যদি কাউকে সন্দেহ হয় তবে গণপিটুনির ঘটনা না ঘটিয়ে পুলিশের খবর দিন। কেউ আইন হাতে তুলে নিবেন না। বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে জেলা পুলিশ আয়োজিত ছেলেধরা সন্দেহে গুজব ছড়ানো ও গণপিটুনি প্রতিরোধ সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। পুলিশ সুপার আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে এ পর্যন্ত যে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে তার প্রত্যেকটি ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরী করা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের সামিল। আসুন আমরা সকলে সচেতন হই, গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান দেওয়া থেকে বিরত থাকি। কাউকে ছেলেধরা হিসেবে সন্দেহ হলে গণপিটুনি না দিয়ে তাকে পুলিশের নিকট সোপর্দ করি। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কনক কুমার দাস, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সালাহউদ্দিন, ডিবি ওসি আনোয়ার হোসেন, ডিএসবি ওসি আতিকুর রহমানসহ সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঝিনাইদহে ডিবির নতুন ওসি আনোয়ার হোসেনের যোগদান
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি ওসি) হিসেবে সদ্য যোগদান করেছেন আনোয়ার হোসেন। ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। ২০০৫ সালে তিনি প্রথম ওসি হিসেবে রাজবাড়ি জেলার পাংশা থানায় যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি নড়াইল জেলার কালিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন, কুষ্টিয়া সদর, নড়াইল সদর, মেহেরপুরের গাংনী ও ঝিনাইদহের শৈলকুপা, মহেশপুর এবং কালীগঞ্জ থানায় সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বাড়ি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলায়। তিনি ঝিনাইদহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি হিসেবে যোগদানের পর জেলা পুলিশ সুপার এর নির্দেশনা মোতাবেক জেলায় চলমান মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখাসহ আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বস্তরের মানুষের সহযোগীতা কামনা করেন। গত ২২ জুলাই তিনি ঝিনাইদহে যোগদান করেন।
ঝিনাইদহে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতীকী অনশন
ঝিনাইদহ :: ৫ দফা দাবীতে ঝিনাইদহে প্রতীকী অনশন কর্মসূচী পালন করেছেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা। বুধবার সকালে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়ে এ কর্মসূচী চলে দুপুর পর্যন্ত। শিক্ষক নেতা মুহঃ আব্দুল মমিন এর সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও জেলা শাখার সভাপতি মহিউদ্দিন, শিক্ষক নেতা মনিরুজ্জামান, আলমগীর হোসেন, মাসুদ করিম, মিজানুর রহমান, মিঠু মালিতা, জালাল উদ্দিন, ইয়াকুব আলী, ইসাহাক আলী, নাজমুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, আলী আকবর, মনীন্দ্র বিশ্বাস, আব্দুল হালিম, রেজাউল করিম, কৃপা সিন্ধু প্রমুখ। এসময় বক্তারা বলেন, আমলা তান্ত্রিক জটিলতার ফলে অন্যায়ভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ১০% টাকা কর্তন করার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এই অমানবিক প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে হবে। এছাড়াও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গা উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া, অবসর সুবিধা বোর্ড, ও শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করেণের দাবি জানান তারা। কর্মসূচীতে জেলা ও উপজেলার বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীরা অংশ নেন।