রবিবার ● ২৮ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ » বলৎকার শেষে ঠান্ডা মাথার খুনী মাদ্রাসার সুপার মুফতি হানিফ গ্রেফতার
বলৎকার শেষে ঠান্ডা মাথার খুনী মাদ্রাসার সুপার মুফতি হানিফ গ্রেফতার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা দৌলতপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী মোহম্মদ আলী হোসেনের পুত্র ও চুয়াডাঙ্গায় নিহত মাদ্রাসা ছাত্র আবির হুসাইনকে বলাৎকার ও মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করে হত্যা মামলায় মাদ্রাসা সুপারিনটেনডেন্ট মুফতি আবু হানিফকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আবু হানিফ জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী বলে জানায় পুলিশ। গত শুক্রবার বিকেলে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ঘটনার দিন মঙ্গলবার থেকে ওই শিক্ষক পুলিশ হেফাজতে ছিলেন। গত ৪ দিন টানা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার)। গ্রেফতারকৃত আবু হানিফ আলমডাঙ্গার খাদিমপুর গ্রামের ছামসুল মন্ডলের ছেলে। আবু হানিফ জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী বলে জানায় পুলিশ। তিনি শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, বলাৎকারের ঘটনা যাতে ফাঁস না হয় এজন্য তাকে পরিকল্পিত ভাবে গলাটিপে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনাটি ভিন্ন খাতে দেওয়ার জন্যই সুকৌশলে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। যাতে করে খুব সহজে ছেলেধরা গুজব বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আরো জানান, গত ৪ দিনে আমরা চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি নিয়ে খুব সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করেছি। কারণ মামলাটি ছিল খুব স্পর্শকাতর। অন্য ৪ শিক্ষককে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। আলমডাঙ্গা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ আসাদুজ্জামান মুন্সি জানান, মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেনীর ওই ছাত্রকে বেশ কিছুদিন বলাৎকার করে আসছিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট আবু হানিফ। তার সাথে দীর্ঘদিন ধরে বলাৎকার করা বিষয়টি ওই ছাত্র অন্যান্যদের জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মাদ্রাসার সুপার। পরিকল্পনার অংশ হিসাবে মাদ্রাসার অদূরে একটি আম বাগানে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় প্রথমে গলাটিপে খুন করা হয় আবির হুসাইনকে। এরপর হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে শরীর থেকে মাথাটি বিচ্ছিন্ন করে পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। আলোচিত এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মাহবুবুর রহমান জানান, মাদ্রাসার সুপার আবু হানিফ জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী। ২০১৩ সালে দামুড়হুদায় পুলিশের ওপর ভয়াবহ হামলা মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিল হানিফ। তিনি আরো জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ছেলেধরা গুজবে ভাসছে। মাদ্রাসার ওই ছাত্রকে হত্যার ঘটনার জন্য আবু হানিফ ঠিক এ সময়টিকে বেছে নেন। ঠান্ডা মাথায় খুন করে গুম করা হয় মাথা। যাতে সারা দেশে গুজব ছড়িয়ে নিজেকে আড়াল রাখা যায়।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা দৌলতপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী মোহম্মদ আলী হোসেনের পুত্র ও চুয়াডাঙ্গায় নিহত মাদ্রাসা ছাত্র আবির হুসাইনকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্র আবির হুসাইন মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর নিখোঁজ হয়। পরদিন সকালে মাদ্রাসার অদূরে একটি আম বাগানের ভেতর থেকে তার মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে ঘটনার দিনই মাদ্রাসার সুপার মুফতি আবু হানিফসহ পাঁচ শিক্ষককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার অদূরে একটি পুকুরে নিহত আবির হুসাইনের মাথাটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল।