বৃহস্পতিবার ● ২২ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের দুর্গন্ধে রোগীদের দুর্ভোগ
গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের দুর্গন্ধে রোগীদের দুর্ভোগ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালটি অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে এখন নিজেই অসুস্থ। মূল ড্রেনের মুখ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতায় তীব্র দুর্গন্ধ। ফলে আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাসহ ওয়ার্ডগুলোতে ভর্তিকৃত রোগীদের হাসপাতালে অবস্থান করা দুঃসহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হাসপাতালের চারপাশে পরিবেষ্টিত মূল ড্রেনটি নির্মাণ কাজের পাথর দিয়ে ভরাট হয়ে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ওই ড্রেনে জমানো পানি হাসপাতালে চারপাশে উপচে পড়ে এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও তীব্র দুর্গন্ধের সৃষ্টি করছে। তদুপরি এই ড্রেনের জমানো পানিতে অবলীলাক্রমে মশারা বংশ বৃদ্ধি করে চলেছে। যা ক্রমাবর্ধমান ডেঙ্গু রোগের সহায়ক হয়ে উঠছে। এছাড়া হাসপাতালের চারপাশে জমে রয়েছে নানা বর্জ্য। যা থেকেও দুর্গন্ধ হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো এবং চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে।
এদিকে রোগীর চাপে বেহাল ২৫০ বেডের এই হাসপাতালটি। বেডে ঠাঁই না পেয়ে ওয়ার্ডের মেঝেতে এবং করিডোরগুলোর দু’পাশে বিছানা পেতে চিকিৎসাধীন রয়েছে রোগীরা। হাসপাতালের ওয়ার্ডে এবং করিডোরে পা ফেলারও তিলমাত্র স্থান নেই। তদুপরি ভর্তিকৃত রোগীদের দেখতে আসা আত্মীয়-স্বজন এবং পরিচর্যাকারীদের ভীড় এবং প্রতিনিয়ত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও সঙ্গীদের এই হাসপাতালটি সর্বক্ষণই যেন একটি জনাকীর্ণ বাজারে পরিণত হয়। এতে চিকিৎসা নিতে আসা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চরম বিপাকেও পড়তে হয়। তদুপরি এহেন অবস্থায় হাসপাতালে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার লেশমাত্রও খুঁজে পাওয়া দায়। গোটা হাসপাতাল চত্বরে চারপাশে ফেলা বর্জ্য এবং টয়লেটের দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়ে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই চিকিৎসা নিতে হয় রোগীদের।
গাইবান্ধা পৌরসভার প্যানেল মেয়র তানজিমুল ইসলাম পিটার হাসপাতালে অসুস্থ রোগীদের দেখতে গিয়ে পরিস্থিতির উন্নয়নে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. আসাদুজ্জামানের কাছে অভিযোগ করলে তিনি উল্টো পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে ড্রেনটির উন্নয়ন করার অনুরোধ জানান। এব্যাপারে প্যানেল মেয়র সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালটিতে বিরাজমান দুর্গন্ধে রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন বলেন, গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের ড্রেন নির্মাণ, সংরক্ষণ, ভবন নির্মাণ, ভবনের উন্নয়ন এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সরকারের গণপূর্ত বিভাগের। এটা পৌরসভার আওতাধীন নয়। এতদসত্ত্বেও জনস্বার্থে পৌরসভা থেকে হাসপাতালটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতিদিন দু’জন পরিচ্ছন্ন কর্মী সেখানে নিয়োজিত রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, হাসপাতালের উন্নয়ন ও নতুন ভবনের জন্য প্রায় ৩৭ কোটি টাকার একটি চলমান প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এতদসত্ত্বেও এই ড্রেনটির সংস্কার বা উন্নয়ন কেন হচ্ছে না তা বোধগম্য নয়।
এব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আসাদুজ্জামান জানান, ড্রেনটির মুখে জমা পাথরের কারণে ড্রেনে জলাবদ্ধতা এবং পানি উপচে পড়ে এই দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।