শুক্রবার ● ৩০ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » পাবনা » মেয়ের চিকিৎসার জন্য মানুষের দ্বাড়ে দ্বাড়ে মা
মেয়ের চিকিৎসার জন্য মানুষের দ্বাড়ে দ্বাড়ে মা
পাবনা প্রতিনিধি :: দুই ভাই বোনের মধ্যে বাবা মায়ের আদরের ছোট সন্তান তানিয়া খাতুন (১৪)। গ্রামের দাখিল মাদ্রাসায় ৮ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে। ক্লাসের ছাত্রী হিসেবে ভীষন মেধাবীর সুনাম রয়েছে তার। বাবা মারা গেছেন প্রায় চার বছর হয়ে গেছে। অভাবের সংসারে বাবার শুন্যতা মা কখনও বুঝতে দেয়নি। তানিয়ার স্বপ্ন ছিল কষ্ট করে লেখা পড়া করে অনেক বড় হবার। সংসারের অভাব দুর করে মায়ের মুখে হাঁসি ফোটাবে। কয়েক মাস আগেও মেয়েটি পাড়া প্রতিবেশী সবার সাথে হাঁসি ঠাট্টায় মেতে থাকতো। বাবা হারা শান্ত, ন¤্র, ভদ্র স্বভাবের মেয়েটি সবার কাছে ভীষন আদরের। কিন্তু আজ এই মেয়েটিই মৃত্যু শয্যায় শায়িত। তার জন্য কাঁদছেন আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীরা। তিন মাস আগে প্রচন্ড জ¦র থেকে শুরু তার শারীরিক অবস্থার অবণতি। একটু হাঁটা চলা ফেরা করলেই হাঁপিয়ে উঠতো সে। অনেক চিকিৎসা করার পরেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে সর্বশেষ ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ডাক্তারী পরীক্ষা নিরিক্ষায় তার হার্ডের ছিদ্র ধরা পড়ে। বর্তমানে শিশু তানিয়া ঢাকার শেরে বাংলা নগর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ডাক্তার বলেছে যত দ্রুত সম্ভব তার হার্ডের অপারেশন করাতে হবে। আর এর জন্য প্রয়োজন দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের কুবিরদিয়ার গ্রামের মৃত. ফরিদ হোসেন ও গৃহ কর্মী ফেলি খাতুনের মেয়ে তানিয়া খাতুন। সে কুবিরদিয়ার এম,কে,আর আহাম্মাদীয়া দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শেণির ছাত্রী। অসুস্থতার কারনে পড়াশুনার জন্য মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ হয়েছে প্রায় চার মাস। যেখানে অন্যসব শিশুরা পড়াশুনার জন্য মাদ্রাসায় যায় সে সময়ে তানিয়া রোগ যন্ত্রণায় হাসপাতালের বেডে দিন পার করে। প্রচন্ড কষ্ট আর শারীরিক ব্যাথায় দিনে দিনে সে যেন মৃত্যুর মুখে ধাবিত হচ্ছে। ঢাকার হৃদরোগ হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ডাক্তার তানিয়ার দ্রুত অপারেশনের তাগিদ দিচ্ছেন। কিন্তু তার মা যে মেয়ের অপারেশনের টাকা যোগাতে অক্ষম। কোথায় পাবে এতো টাকা? গত সপ্তাহে মেয়ের বাড়ি ফেরার ইচ্ছায় হাসপাতাল ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে এসেছে তারা। বাড়িতে এসে শিশু তানিয়ার অবস্থা আরো অবণতি হয়েছে। শরীর, মুখ চোখ ফুলে গিয়ে প্রচন্ড যন্ত্রণায় সারাদিন বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে সে। মা ফেলি খাতুন ও ভাবী সালমা বেগম তানিয়ার চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে সারাদিন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। তানিয়ার মা ঢাকায় একটি বাসা বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। মেয়ের পাশে সর্বসময় থাকার কারনে সে কাজটিও হারিয়েছেন তিনি।
তানিয়ার মা জানান, ছোট বেলা থেকেই আমার মেয়েটি একটু হাঁটা চলাফেরা করলেই হাঁপিয়ে যেতো। মাঝে মধ্যেই সে দ্রুত শ^াষ প্রশ^াস নিতো। চার মাস আগে প্রচন্ড জ¦র থেকে শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবণতি হতে থাকে। সর্বশেষ ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি ছিল। ডাক্তার বলেছে মেয়ের হার্টের ছিদ্র হয়েছে। দ্রুত অপারেশন প্রয়োজন। এর জন্য টাকা লাগবে আড়াই লাখ।
চোখের জল ফেলে সে আরো জানায়, এতো টাকা আমি কোথায় পাবো। মানুষের দ্বাড়ে দ্বাড়ে ঘুরছি। যে টুকু সাহায্য সহযোগীতা পাচ্ছি তা নিতান্তই সামান্য। ডাক্তার জানিয়েছে এখন তানিয়ার শরীরে ৩/৪ ব্যাগ রক্ত দিতে হবে। সে রক্তও যোগাড় করতে পারছি না। চোখের সামনে আমার মেয়েটি মৃত্যুর দিকে চলে যাচ্ছে আর আমি মা হয়ে তার জন্য কিছুই করতে পারছি না।
তানিয়ার পুরোপুরি সুস্থ হতে অপারেশনের জন্য প্রয়োজন আরও আড়াই লাখ টাকা-এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসক। একজন গরীব অসহায় মায়ের পক্ষে যা যোগাড় করা কোনমতেই সম্ভব নয়। চিকিৎসার খরচ যোগাতে সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তশালী মানুষের সহায়তা চেয়েছেন শিশুটির পরিবার।
তানিয়ার চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করতে চাইলে তানিয়ার মা বেলী খাতুনের সাথে যোগাযোগ করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন- ০১৩১০৯৭১৩৭৩ (বিকাশ পার্সোনাল)।
পাবনায় সরকারি গাছ বেচলেন চেয়ারম্যান
পাবনা প্রতিনিধি :: পাবনার ভাঙ্গুড়ার খাঁনমরিচ ইউপি চেয়ারম্যান আছাদুর রহমানের বিরুদ্ধে ময়দানদীঘি বাজারের সরকারি জায়গার বটগাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবারে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ময়দানদীঘি বাজারে একটি বটগাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ২০ হাজার টাকা। চেয়ারম্যান এ বটগাছটি ময়দানদীঘি গ্রামের ছকের দফাদারের ছেলে আব্দুল আজিজের কাছে বিক্রি করেন।
গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করে খাঁনমরিচ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আছাদুর রহমান বলেন, বাজার উন্নয়নের জন্য চারতলা ভবনের একটি মার্কেট নির্মাণ করা হবে। তাই গাছটি কাটা হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া ইউএনও সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, সরকারি জায়গার গাছ কাটার নিয়ম নেই। বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।