শুক্রবার ● ৩০ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » এবার সিসি ক্যামেরার আওতায় চালু হচ্ছে রাজশাহীর সেই বালুমহাল
এবার সিসি ক্যামেরার আওতায় চালু হচ্ছে রাজশাহীর সেই বালুমহাল
রাজশাহী প্রতিনিধি :: বৈধ-অবৈধ বিতর্ক এড়াতে এবং নিয়ম বর্হিভূতভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে কি না তার রেকর্ড রাখতে রাজশাহীতে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে একটি বালুমহাল। চরখিদিরপুর ও চরশ্যামপুর বালুমহালে ইতোমধ্যেই বসানো হয়েছে ১৬টি সিসি ক্যামেরা। দু-একদিনের মধ্যে এ বালুমহালে পুনরায় বালু উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ইজারাদার।
হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশনের আদেশের বরাদ দিয়ে গত ২৪ জুলাই রাজশাহী জেলা প্রশাসনের একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত বৈধ এই বালুমহালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল। এ নিয়ে গত ২০ আগাস্ট হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশনের শুনানি হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চের পর্যবেক্ষন মোতাবেক বালুমহালটিতে কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেয় ইজারাদার। যার অংশ হিসেবে সেখানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
বালুমহাল ইজারা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মারুফ হোসেন শাওন জানান, বালুমহালটিতে পুনরায় কার্যক্রম শুরুর জন্য গত ২২ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। আবেদনের সঙ্গে গত ২০ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশনের (রিট নং ৬৫২১/১৯) শুনানি শেষে বেঞ্চের পর্যবেক্ষনের আইনজীবীর সার্টিফিকেট ও দৈনিক কজলিস্ট সংযুক্ত করা হয়েছে। যার অনুলিপি গত ২৫ আগস্ট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে দেয়া হয়েছে। এর পর বালু উত্তোলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ওই এলাকায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। নিয়ম বর্হির্ভতভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে কিনা তা রেকর্ড রাখতে এই সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বালুমহাল ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে রিট পিটিশনকারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মো. সাখাওয়াত হোসাইন জানান, রিট পিটিশনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ পর্যবেক্ষন দিয়েছেন। পর্যবেক্ষনে হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছেন, ‘‘রাজশাহী নগরের বুলনপুর এলাকার বালু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের রিট পিটিশনের (রিট নং- ৬২০১/১৯) ভিত্তিতে যে আদেশ প্রদান করা হয়েছে বা ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) রাজশাহীকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বা যে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা চরখিদিরপুর ও চরশ্যামপুর বালুমহাল ইজারা প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স আমিন টেডার্স’ এর প্রতি প্রযোজ্য হতে পারে না।’’ এতএব এ বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলনের বাধা নেই।
জানা গেছে, দরপত্রে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ‘মেসার্স আমিন টেডার্স’ চরশ্যামপুর ও চরখিদিরপুর মৌজার ১২০ একরের বালুুমহাল দুই কোটি দুই লাখ টাকায় ইজারা পায়। ইজারার অর্থ পরিশোধ করে জেলা প্রশাসনের চিহ্নিত করে দেয়া পদ্মার চর থেকে গত ১৪ এপ্রিল থেকে বালু উত্তোলনের কার্যক্রম চালায় প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও বালু পরিবহনের জন্য ইজারার শর্ত মোতাবেক (সুবিধাজনক স্থান দিয়ে বালু পরিবহন) চরশ্যামপুর মৌজার উত্তর পাশে কাজলা মৌজার পদ্মা পাড়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি লিজ নিয়ে মজুদ করা হয়। সেখান থেকে বালু পরিবহনের জন্য তালাইমারি সড়ক ব্যবহারে সিটি করপোরেশনের কাছে টোল ইজারাও নেয়া হয়। কিন্তু বৈধ এই বালুমহালে বালু উত্তোলন কার্যক্রমের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশনের আদেশের বরাদ দিয়ে গত ২৪ জুলাই জেলা প্রশাসনের একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত বালুমহালের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে সেখানে কর্মরত আট শ্রমিককে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। এ নিয়ে বালু ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচী পালন করেন।