রবিবার ● ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » নওগাঁ » নওগাঁয় দরিদ্র পরিবারে বিনামূল্যে ২১১টি ঘর প্রদান
নওগাঁয় দরিদ্র পরিবারে বিনামূল্যে ২১১টি ঘর প্রদান
সুদাম চন্দ্র, নওগাঁ প্রতিনিধি :: নওগাঁয় ২১১টি দরিদ্র পরিবার পাচ্ছে বিনামূল্যের ঘর। নির্মাণ কাজও শেষের দিকে। আধা পাকা ঘরগুলো দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাবিটা ও টিআর কর্মসূচির বিশেষ খাতের অর্থে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে। নওগাঁর ১১টি উপজেলায় এসব ঘর নির্মাণ হচ্ছে।
নওগাঁ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআইও) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, অসচ্ছল, দরিদ্র, ঘরহীন, নদীভাঙনসহ বিভিন্ন দুর্যোগে গৃহহীন পরিবার, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত মহিলা, প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষ, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ঘরগুলো পাচ্ছে। ইটের গাঁথুনি দিয়ে করা ঘরগুলোতে থাকবে কাঠের দরজা-জানালা, রঙিন টিনের ছাউনি। ১০ ফুট লম্বা ও ১০ ফুট আয়তনের দুই কক্ষের ঘরগুলোতে একটি রান্নাঘর ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্রিনও রয়েছে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো. হারুণ অর রশিদ বলেন, ‘দরিদ্রদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিনব ও চমৎকার একটি কর্মসূচি। দারিদ্রতা থেকে উত্তোরণের জন্য এবং দরিদ্র মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাবিটা ও টিআর কর্মসূচির বিশেষ খাতের অর্থে এই ঘরগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। গ্রামের অসচ্ছল, হতদরিদ্র, ঘরহীন, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত মহিলা, প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষ, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা ঘরগুলো বিনামূল্যে পাবেন। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্যে হলো- গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন করা। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সম্মিলিতভাবে এ কর্মসূচি সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। নওগাঁর ১১টি উপজেলায় বিভিন্ন জরিপের মাধ্যমে গৃহহীনদের দুর্যোগ সহনীয় ২১১টি বাড়ি দেওয়া হচ্ছে। নির্মাণ কাজ শেষের দিকে।থ
(পিআইও) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, নওগাঁ সদর উপজেলায় ২০টি, পোরশা উপজেলায় ২৪টি, সাপাহার উপজেলায় ২৩টি, নিয়ামতপুর উপজেলায় ২২টি, পত্মীতলা উপজেলায় ২১টি, ধামইরহাট উপজেলায় ১৯টি, বদলগাছী উপজেলায় ১৭টি, মহাদেবপুর উপজেলায় ১৮টি, মান্দা উপজেলায় ১৭টি, রানীনগর উপজেলায় ১৫টি ও আত্রাই উপজেলায় ১৫টিসহ মোট ২১১টি ঘর নির্মাণ কাজ চলছে।
নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের ভিক্ষুক আব্দুল জব্বার (৭৫) বলেন, ‘অনেকদিন আশ্রয়হীন ছিলাম, ভিক্ষা করে দিন কাটতো। ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বৃদ্ধ হয়েছি। বয়সের ভারে এখন আর চলতে পারি না। মানুষের দয়া আর দানের ওপর কোনও মতে বেঁচে আছি। সরকারের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আমার সামান্য জমিতে নতুন বাড়ি তৈরি হচ্ছে, শেষ বয়সে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভালোভাবে দিন কাটাতে পারবো।থ
রানীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের হরিষপুর গ্রামের লতিফুল বেওয়া (৬৫) বলেন, ‘নিজের সামান্য জমি থাকলেও ঘর বানানোর সামর্থ্য নেই। বেঁচে আছি প্রতিবন্ধী ভাতা আর গ্রামের মানুষের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে। জন্ম থেকেই ঝুপড়ির মধ্যে বসবাস করে আসছি। সরকারি খরচে দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি পাওয়ায় শেষ জীবনটা হবে সুখের, নতুন বাড়িতে ভালোভাবে থাকতে পারবো। থ
নওগাঁর মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গালপাড়ার আব্দুল গফুর সরদার (৬০) বলেন, ‘কোনও দিন পাকা ঘরে থাকার স্বপ্নও দেখিনি। বর্তমান সরকারের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় পাকা ঘর করে দিচ্ছে।থ নিজের সামান্য জমিতে সরকার ঘর করে দেওয়ায় সরকারকে তিনি ধন্যবাদ জানান।