শুক্রবার ● ১৫ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » কৃষি » কাউখালীতে সাংবাদিক জুয়েলের উপর হামলা ও বাড়িঘর ভাংচুর
কাউখালীতে সাংবাদিক জুয়েলের উপর হামলা ও বাড়িঘর ভাংচুর
কাউখালী প্রতিনিধি::কাউখালী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জুয়েলকে শারীরিক নির্যাতন ও মোটরসাইকেলসহ বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে৷ এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে ১৪ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এক শালিশী বৈঠকে ঘটনার সমাধান হয়েছে৷
হামলাকারী মেহেদেী হাসান সানি ও মোঃ মাহফুজ দোষ স্বীকার করে পা ধরে ক্ষমা চায়৷ ভাংচুরের ক্ষতিপূরণেরও দায়িত্ব নেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ সরকার৷
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌচামং(এসএম) চৌধুরী, ইউএনও আফিয়া আখতার, থানার ওসি আব্দুল করিম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ সরকার, কাউখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফুল হক মাহবুব, সহসভাপতি ওমর ফারুক, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন৷
বৈঠকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌচামং(এসএম) চৌধুরী বলেন, রাজনীতির উর্দ্ধে আমরা মানুষ ও সামাজিক জীব৷ এধরণের ঘটনা কোন ভাবেই কাম্য নয়৷ এতে করে দলের ও সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়৷
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া আখতার বলেন, ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কার জনক, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরণে ঘটনার পুনরাবৃত্তির বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে৷
থানার অফিসার উনচার্জ আব্দুল করিম বলেন, যেটা হয়েছে সেটা অবশ্যই নিন্দনীয়৷ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ ও এলাকার শান্তি শৃঙখলা স্থিতিশীল রাখতে উভয় পক্ষকে নিয়ে এই সালিশি বৈঠকের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ সরকার বলেন, যে ঘটনা ঘটে গেছে তার জন্য দলের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি৷ ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনা আর ঘটবেনা ও ভাংচুরের ক্ষতিপূরণেরও দায়িত্ব নিচ্ছি৷ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন বলেন, মতপার্থক্য থাকলেও কারো উপরে ও বাড়িতে গিয়ে হামলার ঘটনা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়৷
বুধবার (১৩ জানুয়ারী) সন্ধ্যা ৬.৩০ ঘটিকার সময় উপজেলা সদরের রিক্সস্ট্যান্ড এলাকায় মাহফুজ ও মেহেদি হাসান দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার পথে একটি সিএনজি অটোরিক্সাকে ধাক্কা দেয়৷ এতে সিএনজি ড্রাইভারের সাথে বাক বিতন্ডা শুরু হয়৷ মুহুর্তেই লোক জমায়েত হয়ে পড়ে৷ পরিস্থিতি বিশৃংখল হতে দেখে লোকজনের ভেতর এত জোড়ে গাড়ী চালানো ঠিক না বলায় মোটসাইকেল আরোহী দুজনই জুয়েলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়৷
এর পরে প্রেসক্লাব থেকে সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে জুয়েল পোয়াপাড়া বাড়ীর গেইটে পৌঁছানোর সাথে সাথে মাহফুজ ও মেহেদী তাদের ৫/৬ জন সহযোগী অতর্কিত পেছন দিক থেকে বাঁশের লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে
এলোপাতাড়ি হামলা চালায়৷ আঘাতে মোটরসাইকেলসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জুয়েল দ্রুত ঘরের মধ্যে আশ্রয় নেনে৷ এসময় মোটরসাইকেলটিও ভাংচুর করে হামলাকারীরা শালাকে শেষ করে দেব বলে চিত্কার করতে থাকে৷
এসময় প্রাণ ভয়ে ঘরের শিশু ও মহিলারা চিত্কার করে সাহায্য চাইতে থাকলে হামলাকারীরা বড় বড় ইট ছুড়ে ঘরের চালা ও বেড়া ভাংচুর চালায়৷ এতে সন্ত্রাসীদের ছোড়া ইটের আঘাতে কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ ঘরের মূল্যবান জিনিষপত্রের মারাত্মক ক্ষতি হয়৷ ভাংচুরের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে৷
এসময় কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া আখতার ও থানার ওসি আব্দুল করিম ফোনে জুয়েলের সাথে কথা বলে পরিস্থিতির খোঁজ খবর নেন৷ বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে রাতেই ফোনে কাউখালী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইপ্রু চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বিষয়টির যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে মামলা দায়ের না করার অনুরোধ জানান জুয়েলকে৷
এর আগে গত ১৯ মার্চ রাতেও এই গ্রুপটি একইভাবে জুয়েলে বাড়িতে ভাংচুর চালালে অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামী করে ২০ মার্চ কাউখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (নম্বর-৬৪৩) রম্নজু করেন৷ গত ২০ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় দায়িত্ব পালন করে আসা সাংবাদিক জুয়েল অভিযোগ করেন মূলত হত্যার উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে৷