বৃহস্পতিবার ● ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » স্বাস্থ্য সচিবের নিজ জেলার হাসপাতালের বেহাল দশা
স্বাস্থ্য সচিবের নিজ জেলার হাসপাতালের বেহাল দশা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: রোগীর অসহ্য চাপে স্বাস্থ্য সচিবের নিজের জেলা সদরের হাসপাতালে মানবিক বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। এক’শ বেডের হাসপাতালে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৪২০ জন রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের না পারছে কোন বেড দিতে, না পারছে খাবার দিতে। খাবার না পেয়ে রোগীরা প্রায় প্রতিদিন হৈচৈ করছে। এদিকে বর্হিবিভাগে রোগীর অসহ্য চাপ। গতকাল বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ১২৫৯ জন। জরুরী বিভাগে চিকিৎসা গ্রহন করে বাড়ি ফিরে গেছেন ৮৫ জন। হাসপাতালটি সরেজমিন পরিদর্শন করে বুধবার অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যাবস্থার এই নাজুক চিত্র দেখা গেছে। হাসপাতালের সাধারণ বেড ও কেবিন ছাড়াও মেঝে, বারান্দা ও সিড়িঘরে বিছানা পেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। রোগী আর স্বজনদের আনাগোনায় তিল ধরানোর ঠাঁই নেই হাসপাতালের কোথাও। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর এ ধরণের রোগীর চাপ দেখা যায়নি বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে সাধারণ বেড রয়েছে ৭০টি। পেয়িং বেড এবং কেবিন রয়েছে আরো ৩০টি। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত দেখা গেছে ৯টি মহিলা মেডিসিন বেডের বিপরীতে ভর্তি হয়েছেন ৮৭ জন, মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ৯টি বেডের বিপরীতে ৩৬ জন, ৮টি শিশু বেডের বিপরীতে ১১৯ জন শিশু, ৫টি ইওসি বেডের বিপরীতে ৮৪ জন গর্ভবতী নারী, ডায়ারিয়া ৬টি বেডের বিপরীতে ২০ জন, পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ১৫টি বেডের বিপরীতে ৩৯ জন এবং পুরুষ সার্জারী বিভাগে ১৮টি বেডের বিপরীতে ৭১ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার আরতি রায় জানান, নার্স সংকটের মধ্যে এ ধরণের রোগীর চাপে আমরা হাফিয়ে উঠছি। এ ভাবে সুষ্ঠ সেবা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন শত শত নতুন রোগীর চাপে চিকিৎসক ও নার্সদের মন মানসিকতা স্বাভাবিক থাকছে না বলে নার্সদের অনেকেই মনে করেন। তাদের ভাষ্য দীর্ঘদিন নাসিং সুপার ভাইজারের পদ খালী। ভারপ্রাপ্ত দিয়ে এই পদ চালানো হচ্ছে। সেবা তত্বাবধায়কের পদ খালী থাকায় নার্সরা ছুটি নিতে এখানে সেখানে দৌড়াদৌড়ি করছেন। হাসপাতালের পরিসংখ্যান অফিসার আব্দুল কাদের জানান, ৪০ জন চিকিৎকের মধ্যে হাসপাতালে ২২টি পদে ডাক্তার রয়েছে। এরমধ্যে ৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। বাকী পদ বছরের পর বছর শুন্য থাকছে। তিনি বলেন, আউটডোর ও ইনডোরে রোগীর এই ভয়াবহ চাপে হাসপাতালে কর্মরত প্রায় সবাই নাকাল। আড়াই’শ বেডের বিল্ডিং হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত এই বেহাল দশা ভোগ করতে হবে বলে চিকিৎসক ও নার্সরা মনে করনে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ আইয়ুব আলী জানান, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটি মাত্র পথ হচ্ছে শুন্য পদে অতি সত্তর নিয়োগ ও নতুন ভবনের নির্মান কাজ দ্রুত শেষ করে হস্তান্তর করা। তা না হলে রোগীদের এই চাপ সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ছে। উল্লেখ্য বর্তমান স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আসাদুল ইসলামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার সলেমানপুর গ্রামে। তাই অনেকেই স্বাস্থ্য সচিবের নিজ জেলার নাজুক স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলো চালু না হওয়ায় রসিকতা করে নানা মন্তব্য করেন।
ঝিনাইদহ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক বাসা থেকে ঘুষের ৩৩ লাখ টাকা উদ্ধার
ঝিনাইদহ :: সদ্য প্রয়াত ঝিনাইদহ বিআরটিএ’র সহকারী পরচিালক বিলাস সরকারের বাসা থেকে উদ্ধার হয়েছে ঘুষের ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। বুধবার সন্ধ্যার দিকে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ শহরের কলাবাগান পাড়ার ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এই টাকা উদ্ধার করেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বিলাস সরকারের মৃত্যুর পর ওই বাড়ি প্রশাসন সিলগালা করে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে তার পরিবারের দেওয়া তথ্যমতে এই অভিযান চালানো হয়। কারণ বিলঅস সরকার কলাবাগান পাড়ার ভাড়া বাড়িতে তার বৃদ্ধা মাকে নিয়ে থাকতেন। দাম্পত্য কলহের কারণে স্ত্রী সন্তানরা এখানে থাকতেন না। জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ গনম্ধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযানের কথা স্বীকার করে জানান, উদ্ধারকৃত ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে উদ্ধারকৃত এই টাকা যানবাহনের রেজিষ্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নামে ঘুষ হিসেবে গ্রহন করা হয়েছিল। উল্লেখ্য গত ১০ সেপ্টম্বর ঝিনাইদহ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক বিলাস সরকার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
এমপি হাইকে হত্যার পরিকল্পনা ফাঁস
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাইকে হত্যার পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার পর পলাতক রয়েছে গাড়াগঞ্জ এলাকার এক নেতা। পরিকল্পনার কথোপকথনের অডিও রেকর্ড পুলিশে হাতে আসার পর দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতে ১৬৪ ধারায় একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। গ্রেফতার দু’জন হল-শৈলকুপা উপজেলার বেষ্টপুর গ্রামের সবুর ওরফে ধোলা এবং একই গ্রামের খবিরুল। জবানবন্দিতে ধোলা কয়েকজনের নাম বলেছে। তাদের ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা করেছেন এমপি আব্দুল হাইয়ের পিএস হাশিম রেজা রিয়াদ। সূত্র জানায়, এমপি আবদুল হাইয়ের ব্যক্তিগত সহকারী হাসিম রেজা বুধবার শৈলকুপা থানায় মামলা করেন এবং পুলিশের হাতে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড তুলে দেন। উপজেলার বেষ্টপুর গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে সবুর ওরফে ধোলাকে মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ধোলাকে ঝিনাইদহের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করা হয়। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ধোলা ষড়যন্ত্রকারী কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছে। শুক্রবার খবিরুলকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ বলছে, হাইকে হত্যার ষড়যন্ত্র দলীয় লোকজন করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। পুলিশ জানায়, প্রবীণ নেতা আবদুল হাই খোলামেলা চলাফেরা করেন। তার ব্যক্তিগত কোনো দেহরক্ষী নেই। ষড়যন্ত্র টের পাওয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান পিপিএম সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। গোপনীয়তা রক্ষা করে তদন্তসহ গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, গ্রেফতার দু’জন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে এবং শিগগিরই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
নির্মানাধীন বাড়ীর ৫ তলা থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের আরাপপুর নির্মানাধীন বাড়ীর ৫ তলা থেকে পড়ে কামাল (৪৫) নামে এক নির্মান শ্রমিকের মারা গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যায় কামাল। কামাল কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার বাসিন্দা। স্থানীয়রা জানান, নির্মান শ্রমিক কামাল শহরের আরাপপুর পৌর মার্কেটের পিছনের একটি নির্মানর্ধীন ৫তলায় ছাদে কাজ করছিল। বাশের মই দিয়ে পাড় পাশে যেতে গিয়ে নিচেয় পড়ে যায়। সেসময় তিনি মারাত্বকভাবে আহত হন। অন্যান্য শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসকে খোবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার আরো অবনতি হলে কর্তবতরত ডাক্তার তাকে ঢাকায় রেফার্ড করে। পরে সন্ধ্য্যায় ঢাকায় নেওয়ার সময় পথমধ্যে কামাল মারা যায়।