সোমবার ● ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » সড়ক পাকাকরণ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুই উপজেলার জনগণ
সড়ক পাকাকরণ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুই উপজেলার জনগণ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: মাত্র ৩০০ মিটার সড়কের জন্য দুই উপজেলাবাসি চরম জনদুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ৬৬ বছরেও বিশ্বনাথ আরএইচডি শ্বাসরাম কুরুয়াবাজার সড়ক পাকাকরণ সম্পন্ন হয়নি আজও। এখনও বিশ্বনাথের ভৌগলিক অবস্থানে প্রায় ৩০০ মিটার রাস্তা রয়েছে কাচা। অল্প জায়গাটুকু পাকাকরণ না হওয়ায় বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলার জনসাধারণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থী ও দুই উপজেলার জনসাধারণ চলাচল করেন মারাত্বক কষ্টে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, বিশ্বনাথে সবচেয়ে পুরনো রাস্তা হচ্ছে বিশ্বনাথ আরএইচডি শ্বসরাম-কুরুয়াবাজার সড়ক। ১৯৫৩ সালে মুক্তিযুদ্ধের সেনাপতি বঙ্গবীর জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর পিতা বাহাদুর মফিজুর রহমান মাটি কাটা কাজের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে বিশ্বনাথ আরএইচডি শ্বাসরাম-কুরুয়াবাজার সড়ক। বিভিন্ন সরকারের আমলে অল্প অল্প করে সড়ক পাকাকরণের কাজ হয়। দু:খজনক হলেও সত্য আজ পর্যন্ত সড়কের পাকাকরণের কাজ সম্পন্ন হয়নি।
শ্বাসরাম রহমান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক আব্দুর কাইয়ুম শাকি বলেন, খুবই কষ্ট করে আমাদেরকে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত হলে মানুষ উপকৃত হবে। তিনি জরুরী ভিত্তিতে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রতি জোরদাবী জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থী এমদাদুর রহমান বলেন, আমরা খুব কষ্ট করে স্কুল, কলেজে যাই। আমাদের প্রাণের দাবি দ্রুত অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে আমাদের দুর্ভোগ লাগবে বর্তমান সরকার এগিয়ে আসবেন।
কৃষক আব্দুল কদ্দুছ বলেন, আমরা অবহেলিত। আমরা সামান্য জায়গা নিয়ে বিপাকে। প্রধানমন্ত্রীকে আমরা অনুরোধ করছি জরুরী ভিত্তিতে আমাদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে আমাদের দুর্ভোগ লাঘব করতে।
তরুণ সমাজকর্মী মো. কছির আলী বলেন, অল্প জায়গা পাকাকরণ না হওয়ায় দুই উপজেলাবাসি সড়ক দিয়ে চলাচল করছেন সীমাহীন কষ্ট করে। তিনি দ্রুত বিশ্বনাথ আরএইচডি শ্বাসরাম-কুরুয়াবাজার সড়কের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে দুই উপজেলার দুর্ভোগ লাঘব করার জন্য সরকারের প্রতি জোরদাবী জানান।
স্থানীয় মুরব্বী নুরুল হক লেচু মোল্লা বলেন, সবচেয়ে পুরাতন এই রাস্তাটি আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করে এক কিলোমিটার, আধা কিলোমিটার করে পাকা করালেও বর্তমানে তিনশত মিটার কাচা রাস্তা রয়ে গেছে। সামান্য রাস্তা পাকা না হওয়ায় আমরা সারা বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক বলেন এই রাস্তার জন্য এলাকার মানুষ সবচেয়ে বেশী দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। আমি চেষ্টা করছি এটির অসম্পুর্ন রাস্তাটি সম্পূর্ন করার জন্য।
উপজেলা প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ ভুইয়া বলেন, বিশ্বনাথ আরএইচডি শ্বাসরাম-কুরুয়াবাজার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কটির অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এব্যাপারে আমাদের নজর আছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুনু মিয়া বলেন, ইনশাআল্লাহ সড়কের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত হবে। আমি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উপজেলা প্রকৌশলীকে বলব।
বিশ্বনাথে অর্থনীতিতে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন
মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সম্ভাবনার তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিলে বিশ্বনাথে বেকারত্ব কমে আসার যেমন সম্ভাবনা রয়েছে তেমনি কর্মসংস্থানেরও সুযোগ বাড়বে। এবিষয়ে বিশেষ করে সচেতন মহল এগিয়ে আসার দরকার বলে মনে করেন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, প্রবাসী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা।
সম্ভাবনায় বিশ্বনাথ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৪৩৬টি গ্রামের প্রত্যেক বাড়ির পুকুরে মাছ চাষ, পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা এবং আমন ধান কর্তনের পর সবজি¦ চাষ। তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে উপজেলার অনেক বেকার যুবক, যুবতির বেকারত্ব দূর এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্ঠি হবে। এমন সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করছেন প্রবাসী অধ্যূষিত বিশ্বনাথ উপজেলাবাসি।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল সাংবাদিকদের বলেন, পতিত জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসার জন্য ইতিমধ্যে কৃষি অফিসারকে বলা হয়েছে। আর পুকুরে মাছ চাষ ও আমন ধান কর্তনের পর সবজি¦ চাষের জন্য মৎস্য অফিসার ও কৃষি অফিসারকে বলে দিবে। তিনি বলেন, এসব ব্যাপারে আমার প্রচেষ্ঠা আছে, প্রচেষ্ঠা অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম ভূইয়া সাংবাদিকদের বলেন, প্রতেক্য পুকুরে কিভাবে মালিকদের দিয়ে মাছ চাষ করানো যায় সেই প্রক্রিয়া আমাদের আছে। আমরা জরিফের মাধ্যমে এবং এলাকার লোকজনের মধ্যে আলোচনা করে পুকুরে মাছ চাষের আওতায় নিয়ে আসব।
কৃষি কর্মকর্তা মো. রমজান আলী বলেন, অনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে আমাদের যতটুকু করার আমরা করে যাচ্ছি।
জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত কৃষক বেলাল আহমদ ইমরান বলেন, বাজারের মাছ থেকে নিজের পুকুরে মাছ করে খাওয়া অনেক ভাল। একদিকে ফরমালিন মুক্ত মাছ খাওয়া যায় অন্যদিকে মাছ বিক্রি করে টাকা উপার্জন করা যায়। তিনি এ ব্যাপারে যুবকদেরকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন।
মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. মঈন উদ্দিন বলেন, বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করলে অবশ্য বিশ্বনাথের বৈল্পবিক পরিবর্তন হবে। নি: সন্ধেহে এধরনের কাজে যুবকেরা এগিয়ে আসলে আত্মসম্মানও বাড়বে। তিনি বলেন, এবিষয়গুলো অত্যান্ত ভাল। ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তা যদি উদ্বুদ্বকরণ সভা করেন অবশ্য যুবকেরা উদ্ধুদ্ধ হবে এবং কাজে এগিয়ে আসবে।