মঙ্গলবার ● ১ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » রোহিঙ্গা শিক্ষাথী ভর্তিসহ নানা অভিযোগ সিবিআইইউ’র কুতুবের বিরুদ্ধে
রোহিঙ্গা শিক্ষাথী ভর্তিসহ নানা অভিযোগ সিবিআইইউ’র কুতুবের বিরুদ্ধে
উখিয়া প্রতিনিধি :: রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া সহ নানা অভিযোগ উঠেছে সিবিআইইউ’র কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (সিবিআইইউ) পর্যটন নগরীর মানুষের জীবনমান উন্নয়নসহ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হলেও এই বিদ্যাপীঠের সুনাম ক্ষুন্নের পাশাপাশি বিপথে ঠেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তিনি নিজেকে কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র, কখনো গণসংযোগ কর্মকর্তা, কখনো রেজিষ্ট্রারার পরিচয় দিয়ে থাকেন।
সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় শিক্ষার্থীদের ভর্তির চেয়ে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে বেশি উৎসুক এই কর্মকর্তা। কেননা, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গা ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই কর্মকর্তা। পরে ভর্তিকৃত মেয়ে শিক্ষার্থীদের সুকৌশলে হোটেল-মোটেলে নিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টিও ওপেন সিক্রেট।
এছাড়াও তিনি এক সময়ের ছাত্র শিবিরের সক্রিয় কর্মী হলেও পরে কক্সবাজার শহর ছাত্রদলের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক এবং কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। অবশ্যই বর্তমানে তিনি শহর যুবলীগের দায়িত্বে আছেন। সম্প্রতি শহরের জাদিপাহাড়ে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ইয়াবাকারবারী রফিকের সাথেও তার ছিল দহরম-মহরম সম্পর্ক। যার বহি: প্রকাশ ঘটে দেয়ালে সাটানো রং-বেরংয়ের পোষ্টারে। এই কুতুব ইতিপুর্বে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে র্যাংগস শো-রুম থেকেও চাকুরিচ্যুত হওয়ার বিষয়টি সুত্রে জানা গেছে।
সম্প্রতি বহুল আলোচিত রোহিঙ্গা তরুণী রাহি খুশিকে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করিয়েছিলো এই কুতুব উদ্দিন। রাহি খুশি ছাড়াও ৬০ থেকে ৭০ জন রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীকে সিবিআইইউতে ভর্তি করিয়েছেন তিনি। এদের মধ্য ইংরেজী বিভাগের ছাত্র নয়াপাড়া রেজিষ্টার্ড ক্যাম্পের হাফেজ মোহাম্মদ হাশেমের ছেলে মোহাম্মদ করিম। আইন বিভাগের ছাত্র একই ক্যাম্পের সুলতান আহমদের ছেলে মোহাম্মদ আনিস, লোকমান হাকিমের মেয়ে রোজিনা আক্তারসহ আরও অনেকে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে কুতুব উদ্দিন নিজেকে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র সহকারি রেজিষ্ট্রার কাম পাবলিক রিলেশন অফিসার পরিচয় দিয়ে বলেন, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীর ভর্তির বিষয়টি সঠিক নয়। এছাড়াও শিক্ষার্থী ভর্তি সংক্রান্ত কোন কাজ তিনি করেন না। এ সংক্রান্ত কাজ করার জন্য আলাদা লোক আছে। তিনি শুধুমাত্র সাংবাদিকসহ বিভিন্ন দপ্তরের মানুষের সম্পর্ক উন্নয়নের দায়িত্বে আছেন বলে জানান।
তিনি ছাত্র দল বা শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি এ প্রতিবেদককে যাচাই করার কথা বলে বর্তমানে শহর যুবলীগের দায়িত্বে আছেন বলে দাবী করেন। জেলা যুবলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারে বলেও জানান এই কুতুব। সম্প্রতি বন্দুকযুদ্ধে নিহত ইয়াবাকারবারি রফিকের সাথে তার সখ্যতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা পাশাপাশি বাসায় থাকতাম। সে সূত্রে রফিক যদি আমার ছবি সহ পোষ্টার ছাপালে আমি কি করতে পারি ? অর্থ আতœসাতের দায়ে চাকুরিচ্যুতির বিষয়ে তিনি র্যাংগস চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে বলেন। তার কথা মতে, র্যাংগসের অফিসিয়াল ৮৮০২৯৬৬৩৫৫১ নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ না পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীলদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিবিআইইউ’র ফাউন্ডার লায়ন মুজিবুর রহমানের ব্যবহৃত ০১৭১৫৬০৪৫৮৬ নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিবিআইইউ’র চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপি সময় স্বল্পতার কারণে সংক্ষিপ্ত এক ফোনালাপে তিনি বলেছেন, কেবল কুতুব উদ্দিন নয় দায়িত্বশীল যে কোন ব্যক্তির কারণে যদি সিবিআইইউ’র সুনাম ক্ষুন্ন হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিটি অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার বলে তিনি জানান।