সোমবার ● ১৪ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে ধানের শীষ প্রার্থীদের ভোট বর্জন
কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে ধানের শীষ প্রার্থীদের ভোট বর্জন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ৫ম ধাপে অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। আজ সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে কোটচাদপুর উপজেলা নির্বাচনে ধানের শীষের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে ভোটারদের হুমকি, পোলিং এজেন্টদের ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট থেকে সরে দাড়ান। অন্যদিকে মহেশপুর উপজেলা নির্বাচনে ধানের শীষ প্রার্থী এস,এম শাহ জামান মোহন ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের আসতে বাধা প্রদান, পোলিং এজেন্টদের গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া ও কর্মীদের মারধরের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন। কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ভোটার শুন্য ভোট কেন্দ্র। ভোপারদের উপস্থিতি নগন্য। নির্বাচন কর্মীরা অলস সময় পার করছেন। ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিসার ও রির্টানিং কর্মকর্তা মোঃ রোকনুজ্জামান জানান, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলায় বিএনপির ভোট বর্জনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে মিডিয়াকর্মীদের মাধ্যমে শুনেছি। কোটচাঁদপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী শরিফুন্নেছা মিকি ও বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্দুর রাজ্জাক। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সাংবাদিক খায়রুল হোসেন সাথী। এ উপজেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৮ হাজার ৮৮২ জন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৫৩টি। মহেশপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ময়জদ্দীন হামীদ ও বিএনপি’র চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম শাহ জামান মোহন প্রতিদ্বন্দিতা করেন। চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ছিলেন মির সুলতানুজ্জামান লিটন। এ উপজেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৫২ হাজার ৯১ জন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১১২টি।
গৃহবধুর নগ্ন ছবি দেখিয়ে হুমকি ও চাঁদা দাবি আটক-২
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এক গৃহবধুর মোবাইলে নগ্ন ছবি দেখিয়ে হুমকি ও চাঁদা দাবির অভিযোগে ২ জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। গতকাল রবিবার রাতে মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে অ’ভিযান চালিয়ে তাদেরকে উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের মহনপুর গ্রাম থেকে আ’টক করা হয়। আটককৃতরা হল, উপজেলার মহনপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে ইয়াছিন (২১) ও একই গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে শিমুল হোসেন (২০)। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধুর মামলার বিররণী থেকে জানা গেছে, গত ০৭-১০-১৯ তারিখে আসামি ইয়াছিনের কাছে গৃহবধুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ঠিক করার জন্য দেন। এ সময় আসামি ইয়াছিন কৌশলে গৃহবধুর ওই মোবাইল থেকে তার ব্যাক্তিগত কিছু ছবি নেন। পরে অন্য আসামি শিমুল হোসেনের সাথে সেই ছবি শেয়ার করেন। এবং ওই ছবি ব্যবহার করে গৃহবধুর ইমো নাম্বারে পাঠিয়ে গৃহবধুকে ব্লাকমেইল করে নানা প্রকার হুমকি দিতে থাকেন। পরবর্তিতে গৃহবধুর কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। এমনকি টাকা না দিলে ওই গৃহবধুর ভিডিও প্রকাশ করবে বলেও হুমকি দেন। পরবর্তিতে ০৯-১০-১৯ তারিখে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধুরূ কোটচাঁদপুর থানায় এসে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে মোবাইল ট্রাকিংকের মাধ্যমে আসামীদের কে সনাক্ত করে পুলিশ। এবং রবিবার দিবাগত রাতে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। কোটচাঁদপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মাহবুবুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ভুক্তভোগী গৃহবধূর অ’ভিযোগের ভিত্তিতে আসামীদেরকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২৫(১)(ক)/২৬/৩৫ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। যার নং- ১৫। তাদের কে ঝিনাইদহ জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
হরিণাকুন্ডুতে একই পরিবারের সবাই প্রতিবন্ধী, নেই থাকার ঘর
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুু উপজেলার ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের একই পরিবারে ৪জন সদস্যই প্রতিবন্ধী। স্থানীয় মেম্বর জনাব সাইদুর রহমান আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, আমাদের গ্রামের শাহাদত মন্ডল সেও খোঁড়া ও তাঁর ছেলে শহিদুল ইসলাম (২৩) , তার (শহিদুল) আপন খালা হাসিরন নেছা (৬০) স্বামী মৃতঃ রোমজান আলী ও তাঁর ছোটখালা কুলসুম (৪১) এরা একী পরিবারের সকল সদস্যই প্রতিবন্ধী যা মাঝে একজনের পায়ে সমস্যা ও অন্য তিন জন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যা নজীর বিহীন। এ ব্যাপারে প্রতিবন্ধী শহিদুল ইসলামের বাবা শাহাদত মন্ডল বলেন, আমি একজন দুস্থ অসহায় গরিব মানুষ, তারপর আবার ঠিকমত চলতে পারি না । আমার পায়ে সমস্যা, এই নিয়ে নিরুপাই হয়ে পরের ক্ষেতে কাজ করে চালাতে হয় সংসার। যদি কাজ না হয়তো সেদিন না কেয়েই থাকতে হয়। কারণ আমার সংসারের আমি ছাড়া সবাই প্রতিবন্ধী। আর আমার দৈনিক আয় দুই শত টাকা। যা বর্তমান বাজারে কিছুই হয় না, যার ফলে খুব কষ্ট করে চলতে হচ্ছে। তাছাড়া আপনারা দেখুন আমার কোন ঘরবাড়ী নেই শুনেছি প্রধান মন্ত্রী অসহায় মানুষের ঘরবাড়ী তৈরী করে দিচ্ছেন, যদি আপনাদের মাধ্যমে একটি ঘর পাইতাম তাহলে এই প্রতিবন্ধী পাগলদের নিয়ে কোন রকম ঠাঁই গুজে থাকতে পারতাম। সরকারী কোন সহযোগিতা পান কিনা? জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার পরিবারে আমি সহ তিনজন সদস্য প্রতিবন্ধী তার মাঝে শহিদুল তিনমাস পর ২১শত টাকা পায় আর কুলসুম পাই ১৫শ টাকা এবং আর আমার আয় দিয়েই চলে আমাদের সংসার। ঘরের ব্যাপারে আবেদন করেছেন কি না ? জানতে চাইলে জানান, আবেদন কি? তখন দরখস্ত ও মেম্বর বা চেয়ারম্যান বললে বলেন, আমরা বলতে পারি না আমাদের হয়ে বলবে এমন কেও নেই। এমন অবাক করা কথা শোনার পর প্রতিবেশীদের নিকট জানকে চাইলে তাঁরা বলেন, আমাদের গ্রামের কেও ঘর পায়নি। আর তাই এদের ব্যাপারে বলা হয়নী। ইউপি চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ আলী জানান, ঘটনাটি আসলেই খুবি মর্মাহত এটা আমার জানার বাইরে ছিলো স্থানিয় ওয়ার্ড সদস্যরাও আমাকে কখনো বলেনী এমনকি তারাও কখোনো আসেনী তবে যখন জানলাম আমি এ ব্যাপারে খোজখবর নিয়ে ব্যাবস্থা করব এবং নিজেও তাদের দেখতে যাব।
শৈলকুপার “আবাইপুর ট্রাজেডী” দিবস পালন
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপার মুক্তিযোদ্ধারা সোমবার আবাইপুর ট্রাজেডী দিবস পালন করেছেন। ’৭১ এর ১৪ অক্টোবর ভোরে পাকসেনাদের সাথে মুখোমুখি যুদ্ধে ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। দেশ স্বাধীনের পর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দিনটি পালন করে আসছেন। সোমবার সকালে আবাইপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি ফলকে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন মুক্তিযোদ্ধাগন। এরপর আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ^াসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন শিকদার। আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলি মন্টু, মনোয়ার হোসেন মালিতা, বিশ^াস লুৎফর রহমান, রইচ উদ্দিন, হাজী ওয়াজেদ আলি, লুৎফর রহমান টুলু প্রমুখ। পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আতœার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল আনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে শৈলকুপায় মুক্তিযোদ্ধারা শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন। তারা পাক বাহিনী বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে কখনো চোরাগোপ্তা, কখনো সামনা সামনি আক্রমন চালাতে থাকে। বাগুটিয়া, ভবানীপুর ও নাগিরাটে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প স্থাপন করেন। ১৪ অক্টোবর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা খবর পান পার্শবর্তী মাগুরা জেলায় শ্রীপুরে পাক সেনা অবস্থান নিয়েছে। সিদ্ধান্ত নেন পাক বাহিনীকে প্রতিহত করার। ১৯৭১ সালের ১৪ অক্টোবর ভোর রাতে পাক বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান ৩ দিক থেকে ঘিরে ফেলে। তারা ভারি অস্ত্র দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর ব্যাপক গুলি বর্ষণ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধাগনও পাল্টা আক্রমন শুরু করে। দু পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলতে থাকে। এই যুদ্ধে ১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে এক পাক লেফট্যানেন্ট নিহত হয়। পাকি বাহিনী যুদ্ধবন্দী ৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সঙ্গে করে এনে শৈলকুপা ব্রীজের পাশে নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যার পর নদীর দক্ষিণ পাশে গনকবর দেয় হয়। আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে স্মৃতি ফলকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম লেখা আছে। তারা হলেন, নজরুল ইসলাম, আবুল হোসেন, আবু জাফর, চেতন জোয়ার্দ্দার, ইউসুফ আলি, আলি মুদ্দিন, সিমার, আবু সুফিয়ান, সিরাজুল ইসলাম, কাশেম আলি, আজিবর রহমান, শাহাদাৎ হোসেন, বাবর আলি, মকছেদ আলি, শহীদুল ইসলাম, রুস্তম আলি ও সৈয়দ আলি।