বৃহস্পতিবার ● ১৭ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » পাহাড়ে যারা খুন-চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস করছে তাদের জন্য ভয়ঙ্কর দিন আসছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পাহাড়ে যারা খুন-চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস করছে তাদের জন্য ভয়ঙ্কর দিন আসছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রাঙামাটি :: পাহাড়ে অযথা যারা রক্তপাত করছেন, যারা খুন-চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস করছে তাদের জন্য ভয়ঙ্কর দিন আসছে বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, যারা এই সব সন্ত্রাসে মদদ দিচ্ছে তাদেরকেও বিচারে মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর পাহাড়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে যা যা করার সবই করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসে যারাই জড়িত তাদের অবশ্যই চিহ্নিত করে খুঁজে বের করা হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে কেউ রেহায় পাবেন না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টির ইনষ্টিটিউট মিলনায়তনে তিন পার্বত্য জেলার আইন শৃংখলা বিষয়ক আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় এ সভার আয়োজন করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং এর সভাপতিত্বে সভায় রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, স্বারাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব মো. কামাল উদ্দিন, র্যাবের মহা পরিচালক বেনজির আহম্মদ, পুলিশ মহাপরিদর্শক ডক্টর মো. জাবেদ পাটোয়ারী, চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মতিউর রহমান, বিজিবির মহা পরিচালক, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, তিন পার্বত্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ ও বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তারা বক্ত্য রাখেন।
সভায় তিন পার্বত্য জেলার হেডম্যান কার্বারী, জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় প্রধান, সহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিবর্গ পার্বত্য এলাকায় বিরাজমান আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তা উত্তোরনে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ তুলে ধরেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের সমস্যার কথা আমি শুনেছি। অনেকেই বলেছেন পাহাড়ের খুন হলে কেউ থানায়ও যেতে পারছেন না। থানায় গেলে তিনি খুন হয়ে যাবে। এই ধরনের পরিস্থিতি রাঙামাটি সদরে বসে টের পাওয়া যাবে না। এটি উপলব্ধি করতে হলে দুর্গম এলাকায় যেতে হবে। তিনি অনেকেই বলেছে পার্বত্য অঞ্চলে সাইবার ক্রাইম হচ্ছে। বিভিন্ন সাইড থেকে পার্বত্য অঞ্চল ও দেশ বিরোধী বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথা উঠে এসেছে। ক্রাইম যখন বারে তখন সব কিছ্ বাড়ে আমাদের সামনে চলে আসে। তিনি বলেন, আমাদের সেনাবানিহী বলেন, পুলিশ বলেন, র্যাব বলেন, বিজিবি বলেন আমরা খুবই শক্তিশালী আমাদের নেটওয়ার্কের কারণে সুন্দরবনের চরমপন্থীরা আত্ম সমর্পন করেছে। সারা দেশে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অনেক মাদক ব্যবসায়ী আত্ম সর্ম্পন করেছে। সারাদেশে মাদকের জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। তিনি বলেন, সেই সাথে আমরা তিন পার্বত্য জেলায় যখন শুনেছি আমরা এখানে এসেছি। পার্বত্য অঞ্চলের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে আমরা কথা বলছি। আমরা জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে দিতে চাই আমাদের বাহিনীরা অনেক শক্তিশালী আমরা যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারি। কেউ যদি ঘরে বসে বসে মনে করে এই দুষকৃতিকারী, অস্ত্রবাজদের মদদ দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলবেন পার্বত্য অঞ্চলকে অচল করে দিবেন আপনাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে তা কখনো বাস্তবায়ন হবে না।
তিনি বলেন, আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আছে তারা অনেক ধর্য্য শীল। ধর্য্য ধরে আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি বলে আপনারা মনে করবেন না আমাদের কোন ক্যাপাসিটি নেই। তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই আমরা সমস্ত ঘটনা গুলো জেনে গেলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে নিদের্শনা চাইবো যে নির্দেশনা আসবে এই এলাকার শান্তি সুবাতাস যে ভাবে আসে আমরা সেই ভাবে কাজ করবো।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন সময়ের ব্যাপার। এই চুক্তি বাস্তবায়নে বিলম্ব হয় এই জন্য খুন করা যাবে, অপহরণ করা যাবে এটা শান্তি চুক্তির একটি লাইনেও লেখা নেই। পার্বত্য চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস আমরা কখনোই চাইবো না। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় সমস্ত কিছু শুনেছেন তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলবেন। আমি শুধু স্পষ্ট করেই বুঝি এই সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনবান্ধব সরকার। সুতরাং আগামী দিন গুলোতে কোন ধরনের জানমাল রক্ষা করার জন্য যা যা করা দরকার সরকার করবে। আগামীতে আমরা আর কোন ভাইকে বোনকে হারাতে চাই না। তিনি এই সকল সন্ত্রাসীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।