শনিবার ● ১৯ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বগুড়ায় ‘বাংলাদেশে নারীর নিরাপদ অভিবাস’ শীর্ষক দিনবাপী কর্মশালা
বগুড়ায় ‘বাংলাদেশে নারীর নিরাপদ অভিবাস’ শীর্ষক দিনবাপী কর্মশালা
বিশেষ প্রতিনিধি :: গত ১৬ অক্টোবর ২০১৯ সকালে বগুড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশে নারীর নিরাপদ অভিবাস’ শীর্ষক দিনবাপী এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লাইট হাউস সংস্থার প্রধান নির্বাহী মোঃ হারুন-অর-রশীদ। ব্রিটিশ হাই কমিশনের আর্থিক সমর্থনপুষ্ট “এ্যানহ্যান্সিং কমিউনিটি ক্যাপাসিটি এ্যাণ্ড রেজিলিয়েন্স” প্রকল্পের আওতায় লাইট হাউস এ কর্মশালাটি আয়োজন করে।
নারী অভিবাসীদের মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে বগুড়া জেলায় কর্মরত সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থা ও দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ কর্মশালাটি। এতে কর্মকর্তাগণ তাদের নিজ নিজ মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন। কর্মশালার মূল-প্রবন্ধে অভিবাসীদের বিশষতঃ নারীদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমস্যা উত্তোরণের উপায়গুলো তুলে ধরা হয়। কর্মশালার আলোচকগণ বলেন, নারী অভিবাসীদের অনেকেই কোন কিছু যাচাই-বাছাই না করেই দালালদের ফাঁদে পড়ে বিদেশে পাড়ি জমায় এবং সেখানে গিয়ে নির্মমতার শিকার হয়। অনেক ক্ষেত্রে নারী অভিবাসীরা নিয়োগ-কর্তার দ্বারাও অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন। কর্মশালায় নির্মমতার শিকার কয়েক জন নারী তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা সহভাগিতা করেন। তারা বলেন, তাদের মত আর কেউ যেন বিদেশে গিয়ে এরূপ বঞ্ছনার শিকার না হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ বলেন, বিদেশে যাওয়ার পূর্বে সেদেশের রীতি-নীতি, ভাষা ও সংস্কৃতি জানা আবশ্যক। বৈধ কাগজ-পত্র ছাড়া এবং কাজের বেতন-ভাতা নিশ্চিত না হয়ে কোন মতেই বিদেশের মাটিতে পা রাখা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে যেতে হবে এবং তাদের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। টাকা-পয়সা লেন-দেনের ক্ষেত্রে অবশ্যই যথাযথ প্রমাণ রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, বিদেশে যাওয়ার জন্য যত্র-তত্র দালালদের হাতে টাকা-পয়সা দেওয়া ঠিক নয়। এতে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি লাইট হাউসের প্রধান নির্বাহী মোঃ হারুন-অর-রশীদ বলেন, বাংলাদেশে অবস্থিত ব্রিটিশ হাই কমিশনের অর্থায়নে লাইট হাউস উল্লেখিত প্রকল্পটির মাধ্যমে বাংলাদেশের নারী অভিবাসী কর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। এর মাধ্যমে বিদেশে গমনেচ্ছু মোট ৩০০ নারী কর্মীদের বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ সহায়তা প্রদান করা হবে। বিদেশের মাটিতে নারী কর্মীদের ন্যায় মজুরী, কাজের পরিবেশ এবং আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা যাতে নিশ্চিত হয় সেই লক্ষ্যে আমরা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধান নির্বাহী আরো বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হবে এবং তাদের দক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। এছাড়া ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের (ইউডিসি) মাধ্যমে বিশেষ প্রচার-প্রচারণা করা হবে। আমরা জানি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে এ দেশের অভিবাসীদের রেমিটেন্স ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখছে। তাই তাদের বিশেষভাবে নারী অভিবাসীদের নিরাপদ অভিবাসন অতিশয় কাম্য।
লাইট হাউস দেশের একটি অন্যতম জাতীয় পর্যায়ের বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা যা ১৯৯২ সাল হতে দেশের দারিদ্র বিমোচন এবং পিছিয়ে পড়া সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ভাগ্যো পরিবর্তনে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি বগুড়ায় প্রতিষ্ঠালাভ করলেও বর্তমানে ইহা দেশের মোট ২৯ টি জেলায় ১৫ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ইতিমধ্যে লাইট হাউস ১১০ টি প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন সম্পন্ন করেছে যা মাধ্যমে দেশের প্রায় ৯১ লক্ষ সুবিধাবঞ্চিত অসহায় জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়েছেন।।