শনিবার ● ১৯ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » দালালের দখলে ঝিনাইদহ বিআরটিএ : দেখার যেন কেউই নেই
দালালের দখলে ঝিনাইদহ বিআরটিএ : দেখার যেন কেউই নেই
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ বিআরটিএ’র অফিস এখন ঘুষ দূর্নীতির মাত্রা বেড়ে দ্বিগুন ও দালাল দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে মর্মে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। সহকারি পরিচালক বিলাস সরকারের মৃত্যুর পরে গত ১৬ই সেপ্টেম্বর নতুন যোগদান করেন এস এম মাহফুজুর রহমান। তিনি যোগদানের পরে ঘুষ দূর্নীতির মাত্রা বেড়ে দ্বিগুন পরিমানে। পুরো অফিসই এখন পরিচালিত হচ্ছে বেশ কিছু দালাদের সমন্বয়ে। অফিস সূত্রে জানা গেছে, সর্বমোট সাতজন ষ্টাফ এখানে নিয়মিত কাজ করেন। আর তারা হলেন ফরহাদ উদ্দীন, মাইদুল হাসান, সাহাবুদ্দীন, রবিউল ইসলাম, জাহিদুল হাসান, মফিজ, শহিদুল ইসলাম ও বাবুল আক্তার। সরজমিনে বিআরটিএ’র অফিসে গিয়ে আলোচিত দালাল জন, মুক্তার, আনোয়ার, সামিউল, মুন্নু, ফারুক সহ নাম না জানা আরও বেশ কয়েক কয়েক জন দালালকে দেখা যায়। যারা কেউই বিআরপিএ অফিসের স্টাফ নাই। বিভিন্ন কক্ষে তাদের কাজ করতে দেখা যায়। এসব দালালদের তারা কে কোন পোষ্টে আছে প্রশ্ন করলে তারা সাংবাদিকদের জানায়, আমরা সবাই স্যারের লোক। সাধারন মানুষকে হয়রানি ও ঘুষ নেওয়ার ব্যাপক অভিযোগও রয়েছে বিআরটিএ অফিস ও তাদের পৌষ্য আলোচিত দালালদের বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক গ্রাহক বলেন, গাড়ির রুট পার্মিট নেওয়ার জন্য গেলে ফিল্ড ম্যাকানিক্যস বাবুল আক্তার ও দালাল আনোয়ার মিলে তার নিকট থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করে। এছাড়া বিআরটিতে কাজ করতে আসা প্রায় সবার কাছেই হয়রানি ও ঘুষ নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। হয়রানি ও ঘুষ ছাড়া এই বিআরটিএ অফিসে কোন কাজ হয়না বলে জানান উপস্থিত ভুক্তভুগীরা। ঘুষ না দিলে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হয়। এবিষয়ে বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক এস এম মাহফুজুর রহমান জানান, আমি এখানে যোগদানের আগে থেকে এরা এই অফিসে কাজ করে আসছে। আমি এদের অনেককে ভাল করে চিনিওনা, রেকর্ডরুমে আবর্জনার মধ্যে এরা কাজ করে অভ্যস্ত। আমার অফিসের নিয়মিত কর্মচারীরা রেকর্ড রুমে কোথায় কোন ফাইল আছে তা জানেনা তাই এসব বহিরাগত কর্মীদিয়েই কাজটি করতে হয়। তিনি আরো বলেন কেউ আমার লোক নাই সবাই আপনাদের ঝিনাইদহের লোক। ঝিনাইদহবাসী বিআরটিএ’র এসকল ঘুষ দূর্নীতি ও দালালদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন। ঝিনাইদহরে আপামর সাধারণ জনগন বিআরটিএ অফিসের হয়রানি ও দালালদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানিয়েছেন।
অষ্টম শ্রেণ্রীর ছাত্রী ধর্ষিত ধর্ষক শিলু হাসান গ্রেফতার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার চিথলিয়াপাড়া গ্রামে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নির্যাতিতার পিতা হাসান আলী বাদি হয়ে হরিণাকুন্ডু থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছে। মামলা নং ১২। হরিণাকুন্ডু থানার এসআই আব্দুল জলিল জানান, দীর্ঘ ২ বছর ধরে শিশুকলি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে শিলু হাসান। প্রেমের সুবাদে স্কুলছাত্রীকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৌহিক সম্পর্ক করে পার্বতীপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে শিলু হাসান। সর্বশেষ চিথলিয়াপাড়ার বাচ্চুর বাড়িতে নিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি বাড়ি এসে তার মাকে ঘটনাটি জানায়। এরপর মেয়েটির পিতা হাসান আলী বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে হরিণাকুন্ডু থানায় ধর্ষক শিলু হাসানকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। পুলিশ ধর্ষক শিলুকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। গতকাল শনিবার মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল জলিল জানান।
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, আহত-১৫
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে । এতে নারী সহ কমপক্ষে ১৫-২০জন আহত হয়েছে। ২৪টি বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে । শৈলকুপার তেঘরিয়া গ্রামে আজ দুপুর ১২টার দিকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ থেমে থেমে কয়েক ঘন্টাব্যাপী চলে । পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে, আটক করা হয়েছে ৪জন কে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, সারুটিয়া ইউনিয়নে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে বিভিন্ন গ্রামে আওয়ামীলীগের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়ে আসছে বিএনপি ও জামায়াত- শিবিরের নেতা-কর্মীরা । নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নায়েব আলী পরাজিত ও দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হওয়ার পর থেকে সংঘর্ষ চলে আসছে। ইউনিয়নটিতে বিএনপি-জামায়ত নেতা-কর্মীরা তুচ্ছ ঘটনায় একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে।
আজ শনিবার দুপুরে তেঘরিয়া গ্রামের নৌকা সমর্থক মিরাজ কে তার দুভাই ফিরোজ ও হাফিজ সামাজিক দল পরিবর্তনের জন্য চাপ দেয়। এনিয়ে ভায়ে ভায়ে দ্বন্দ্বের জেরে গ্রামে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এসংঘর্ষে সারুটিয়া ইউনিয়ন শিবিরের সভাপতি নাদপাড়া গ্রামের হাফিজুর রহমান, শিবির কর্মী ইলিয়াস, ফিরেজ ও নাদপাড়া গ্রামের বিএনপি ওয়ার্ড সভাপতি ডাক্তার মজিবর রহমান, জিয়া, রহিম সহ বিএনপি-শিবিরের নেতা-কর্মীরা তেঘরিয়া গ্রামের আওয়ামী কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালায় । এতে তেঘরিয়া গ্রামের রুমি খাতুন, আব্দুল হাকিম, রুবেল হোসেন, বকুল হোসেন, সোরাপ, ইউনুস, আজিম, আকুল, আজব, আকাম, তারেক, আব্দুর রশিদ, আব্বাস, পারুল খাতুন, সেলিনা খাতুন, কাজলী সহ ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজন কে গুরুত্বর অবস্থায় শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা জানিয়েছে তেঘরিয়া গ্রামের শফিকুল, আকরাম মাস্টার, বসির মন্ডল সহ পাশর্^বর্তী গ্রামের নাদপাড়া গ্রামের হাফিজুর রহমান, ইলিয়াস হোসেন, ফিরোজ হোসেন, দাউদ হোসেন, মেহেদী, রফিকুল, শরিফুল সহ বেশ কয়েকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে । কমপক্ষে ২৪টি বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে ।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মসলেম মন্ডল জানান, সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান এর ইন্ধনে বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীরা এমন হামলা চালিয়ে আসছে। আজকের হামলায় ইউপি চেয়ারম্যান মামুন সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন ইউপি চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান মামুন।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানিয়েছেন, দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকজন কে আটক করা হয় । সেখানে পুলিশ মোতায়েন আছে বলে পুলিশ জানান।