সোমবার ● ২৮ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী ঝাপান খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল
ঝিনাইদহে গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী ঝাপান খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাদামতলা বাজারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা। রোববার বিকালে বাদাম তলা বাজারে এ খেলার আয়োজন করে বাজার কমিটি। দুপুরের পর থেকেই ঝাপান খেলা দেখতে বাজারে ভীড় করে শত শত মানুষ। দুপুরের পর থেকে শুরু হয় এই প্রতিযোগিতা। ৬টি সাপুড়ে দলের অর্ধ শতাধিক সাপের মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে প্রতিটি সাপ প্রদর্শন করে নিজেদের আকর্ষণীয় কসরত। বাদ্যের তালে তালে সাপুড়েকে নিজে নাচতে হয় আর সাথে ফনা তুলে সাপও বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে। সাপুড়ের ইশারায় সাপের এই অঙ্গ ভঙ্গি প্রদর্শন মানুষকে দেয় অনাবিল আনন্দ। আর তাই আর এই দুর্লভ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন দর্শনার্থীরা। ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা নীলা আশিকী নামের এক গৃহবধু বলেন, আমি জীবনের প্রথম ঝাপান খেলা দেখছি। এখানে এসে দেখছি। আমার খুব ভালো লেগেছে। আমি চাইবো এ ধরনের আয়োজন যেন প্রতি বছর করা হয়। সাদিয়া আফরিন নামের অপর এক গৃহবধু বলেন, আমি শহরে থাকি। ঝাপান খেলার কথা শুনে আমার বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি। আমিও দেখছি ওরাও দারুন উপভোগ করছে। সাপ সম্পর্কে ওদের ধারণা হচ্ছে। পোড়াহাটি এলাকার রাশেদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে বয়োবৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, শিশুরা উপস্থিত থেকে নিবিড় দৃষ্টিতে উপভোগ করেন। খেলাকে ঘিরে এখানে সৃষ্টি হয় উৎসবের আমেজ। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য যে এত মনোমুগ্ধকর ঝাপান খেলা না দেখলে বোঝা যাবে না। শৈলকুপা থেকে আসা লিটন সাপুড়ে বলেন, মুলত আমাদের পেশা এটা না। আমরা মানুষকে আনন্দ দিই। আর খেলা করে আনন্দ পাই। এজন্যই দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ঝাপান খেলা করি। এ ব্যাপারে আয়োজক বাদাম তলা বাজার কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য শওকত আলী বলেন, চিরায়ত বাংলার ঐহিত্যবাহী এ খেলা দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে আর এলাকার মানুষকে একটু আনন্দ দিতেই এ আয়োজন। খেলায় সকলকে পেছনে ফেলে প্রথম হয় জেলার শৈলকুপা উপজেলার ভাটই এলাকার সোহেল সাপুড়ে।
বিদেশ থেকে স্ত্রীর পাঠানো অর্থ দিয়ে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে
ঝিনাইদহ :: প্রথম স্ত্রীকে বিদেশ পাঠিয়ে তার পাঠানো অর্থ দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে আরাম আয়েশে সময় কাটাচ্ছে রিয়াজ বাঘা নামে এক যুবক। অন্যদিকে দেশে ফিরে প্রথম স্ত্রী মিতু স্বামী ও সন্তানের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। মিতু ঝিনাইদহ শহরের ক্যাডেট কলেজ এলাকার আবাসন প্রকল্পের শাহিন শেখের মেয়ে। মিতু জানান, ২০০৫ সালে ঢাকায় গার্মেন্টে কাজ করার সুবাদে বাস ড্রাইভার রিয়াজের সাথে তার বিয়ে হয়। রিয়াজের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাতলা গ্রামে। তার পিতার নাম ইব্রাহীম বাঘা। বিয়ের পর মিতু রিয়াজের ঘরে জন্ম নেয় সাকিব ও জান্নাতুল নামে দুই সন্তান। মিতুর ভাষ্যমতে ২০১৮ সলের ৬ জুন সে সৌদি আরব যায় কাজ করতে। সেখানে সে এক বছর চাকরী করে। মালিক ইন্তেকাল করলে মিতু দেশে ফিরে আসে। ততক্ষন মিতুর সর্বনাশ ঘটে গেছে। স্বামীর বাড়িতে ফিরে তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। কারণ তার পাঠানো অর্থে স্বামী রিয়াজ বাঘা ওই এলাকার নলভাঙ্গা তালতলি গ্রামের নাজমা খাতুনকে দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার পাতে। স্বামীর বাড়িতে নির্যাতনের এক পর্যায়ে মিতুকে বাড়ি বের করে দেওয়া হয়। নাবালক দুই সন্তান ফেলে মিতু ঝিনাইদহের আবাসন প্রকেল্প বসবাস করছে। দুই নাবালক সন্তানদেরকেও স্বামী রিয়াজ বাঘা প্রতিনিয়ত মারধর ও নির্যাতন করছে। তাদেরকে খেতে দেওয়া হয় না। মিতু আভিযোগ করেন, তিনি এক বছরে প্রতি মাসে ২৩ হাজার টাকা করে তার স্বামী ও শ্বশুরের কাছে পাঠাতেন। সেই হিসেবে সে ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু তার টাকায় স্বামী রিয়াজ বাঘা আনন্দ ফুর্তি করে দ্বিতীয় বিয়ে করে এখন তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। তিনি নাবালক দুই সন্তান ফিরে পেতে ঝিনাইদহের একটি আদালতে মামলা করেছেন। এছাড়া স্বামীর সংসারে ফিরতে ও খোরপোষের দাবীতে লিগ্যাল এইড অফিসে অভিযোগ করেছেন। গত ১৫ অক্টোবর আদালতের নোটিশ পেয়েও তার স্বামী ঝিনাইদহে আসেন নি বলে মিতু জানান। মিতুর আইনজীবী এড বাচ্চু মিয়া জানান, নাবালক সন্তান উদ্ধারের জন্য মিতু মামলা করেছেন। আদালত তার স্বামীর ঠিকানায় নোটিশ পাঠিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মিতুর স্বামী রিয়াজ বাঘার ০১৭৩৩৭৭৩২৩৫ নাম্বারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।