বুধবার ● ৩০ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » পাবনা » অবৈধ সোঁতিজাল দিয়ে চলছে অবাধে মাছ নিধন
অবৈধ সোঁতিজাল দিয়ে চলছে অবাধে মাছ নিধন
পাবনা প্রতিনিধি :: পাবনার চাটমোহরে বিভিন্ন নদী অবৈধ সোঁতিজাল দিয়ে চলছে মাছ নিধন। বিলুপ্ত হচ্ছে মাছের বংশ। সোঁতির জালের বেড়ার কারণে আবাদি জমি থেকে পানি নামছে ধীরে। রসুন ও সরিষার আবাদ পিছিয়ে পড়ায় ফলন নিয়ে শঙ্কিত কৃষক। সোঁতিজাল দিয়ে মাছ নিধনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। ভয়ে এ নিয়ে কোন কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ‘ম্যানেজ’ করেই মাছ নিধনে মেতেছেন সোঁতিজালের সঙ্গে জড়িতরা।
সরজমিনে দেখা গেছে, গুমানী নদীর ধর্মগাছা ব্রীজ, মুনিয়াদীঘি কৃষি কলেজ, ছাওয়ালদহ, চিনাভাতকুর কবরস্থান, কাটানদীর পাইকপাড়া পয়েন্ট, ডেফলচড়া সোঁতিজাল পাতা হয়েছে। রাত-দিন, সব সময় চলছে মাছ নিধন। ধর্মগাছা ব্রীজর অদুরেই গুমানী নদীর তিনভাগ ঘিরে দেওয়া হয়েছে বাঁশ-জালের বেড়া। এক পাশে ফাঁকা রেখে পাতা হয়েছে সোঁতি জাল। এ জালেই আটকা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছের ব্যাপারীরাও ভীড় করছেন সোঁতিতে। শেষ রাতে বেচা-কেনা চলে মাছের।
এলাকাবাসী বলেন, সোঁতির নৌকায় জেলেদের দেখা গেলেও পর্দার আড়ালে রয়েছে একধরনের সুবিধাবাদি চক্র।
কৃষকরা বলেন, সোঁতিজালের বেড়ার কারণে আবাদি জমি থেকে ধীরে নামছে পানি। আগামী সরিষা ও রসুনের আবাদ পিছিয়ে পড়বে। সরিষা ও রসুনের আবাদ পিছালে বোরো ধানের আবাদও পিছাবে। নাবি আবাদের কারণে এসব ফসলের ফলন কমে যাবে। সোঁতিজালের বেড়ায় বাধাগ্রস্থ হচ্ছে পানির স্বাভাবিক গতি। বেড়া সংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র ¯্রােত। ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে সংলগ্ন বসতবাড়ি ও আবাদি জমি। অপরদিকে, সোঁতিজাল অপসারণের জন্য অভিযান চালাচ্ছে মৎস্য অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন।
এলাকাবাসী আরো বলেন, প্রশাসনের এ ধরণের অভিযান লোক দেখানো। অভিযানের সঙ্গে জড়িতরা ঘটনাস্থল ত্যাগের দুই-তিন ঘন্টা পরই জাল মেরামত করে পুরোদমে চলছে মাছ নিধন। অভিযানের সময় সোঁতিজালের দুই-একটা বাঁশ কেটে দেওয়া হচ্ছে। জালের কিছু অংশ কেটে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জাল-বাঁশের পুরো বেড়া অপসারণ করা হচ্ছে না। তাছাড়া সোঁতি জালের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনছে না প্রশাসন।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, সোঁতিজাল দিয়ে মাছ শিকার মৎস্য আইনে নিষিদ্ধ এর শাস্তি সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমান বা দুই বছরের জেল, সোঁতি দিয়ে মাছ ধরা চলনবিল এলাকার মানুষের একটি ট্রাডিশন। প্রতিবছরই এ ঘটনা ঘটে। আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। সোঁতিজালের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে কোন ছার নেই।