বুধবার ● ৩০ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » দর্শক শূন্যতায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সিনেমা হল
দর্শক শূন্যতায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সিনেমা হল
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধার জেলা ও উপজেলা এমনকি বড় বড় হাট-বাজারে আগে ছিল জমজমাট সব সিনেমা হল। আর তখন বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম হওয়ায় সিনেমা হলগুলোতে দর্শক সংখ্যাও ছিল অনেক বেশী। প্রতিটি হলে সকালে, দুপুরে, সন্ধ্যায় ও রাতে আগে চারটি প্রদর্শনী চললেও প্রতিটি প্রদর্শনীতে নারী ও পুরুষ দর্শকে পরিপূর্ণ থাকতো। কিন্তু এখন সে অবস্থা আর নেই। সেজন্য দর্শক শূন্যতায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গাইবান্ধার সিনেমা হলগুলো। বন্ধ সিনেমা হলগুলো ভেঙ্গে ফেলে সেখানে তৈরী করা হচ্ছে আধুনিক সব বিপনী বিতান। এতে সিনেমা হলে কর্মরত বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কর্মচারি বেকার হয়ে এখন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
জেলার ৭টি উপজেলায় সিনেমা হল ছিল ৩২টি। এরমধ্যে জেলা শহরে ছিল ৩টি সিনেমা হল। আর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরে ছিল ৩টি এবং মহিমাগঞ্জে ৩টি, পলাশবাড়ি সদরে ২টি এবং এ উপজেলার কোমরপুরে ২টি ও ঢোলভাঙ্গায় ২টি, সাদুল্যাপুর সদরে ১টি, ধাপেরহাটে ২টি ও নলডাঙ্গায় ২টি, সুন্দরগঞ্জ সদরে ২টি, বামনডাঙ্গায় ২টি, সাঘাটা সদরে ২টি ও বোনারপাড়ায় ২টি, ফুলছড়ি সদরে ২টি, কালিরবাজারে ১টি ও জুমারবাড়িতে ১টি। এছাড়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালীতে ১টি ও দারিয়াপুরে ইতোপূর্বে ছিল ২টি সিনেমা হল।
কিন্তু দর্শক শূন্যতায় এখন এই জেলায় নিয়মিত সিনেমা হল চালু রয়েছে মাত্র ২টি। এরমধ্যে ১টি হচ্ছে জেলা শহরে তাজ সিনেমা হল আর অপরটি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরের হিরক সিনেমা হল। এছাড়া মাঝে মাঝে অনিয়মিতভাবে চলে আরও ৩টি হল। এগুলো হলো- পলাশবাড়ির কোমরপুর, সুন্দরগঞ্জে এবং সাঘাটার জুমারবাড়িতে একটি সিনেমা হল।
জেলার দুটি প্রাচীন সিনেমা হল মায়া ও চৌধুরী সিনেমা হল ভেঙ্গে এখন সেখানে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া চৌধুরী সিনেমা হলের মালিক আব্দুল মান্নান চৌধুরী জানালেন, সিনেমা হল বন্ধের অন্যতম কারণ হলো হলে এখন দর্শক চাহিদা পূরণ করার মতো ভালো মানের সিনেমা তৈরী হচ্ছে না। তদুপরি দেশী বিদেশী টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রতিদিন, একাধিক উন্নতমানের নতুন পুরাতন ছবি ঘরে বসেই দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া এখন ইউটিউব, ইন্টারনেট থেকে সহজেই পছন্দ মতো সিনেমা নিজের মোবাইলে ডাউনলোডে দেখা যায়। এসব কারণেই সিনেমা হলে দর্শক আসে না। আর দর্শক চাহিদা না থাকায় অর্থ ব্যয় করে ভালো সিনেমাও বানাচ্ছে না পরিচালকরা। এ কারণেই সিনেমা ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসায় ঝুঁকে পড়তে বাধ্য হচ্ছে সিনেমা হল মালিকরা।
জাল নিবন্ধন সনদে চাকরির অপরাধে শিক্ষকের জেল
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এক শিক্ষক প্রতারণামূলভাবে জাল ও ভূয়া নিবন্ধন সনদ দিয়ে সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান এবং সরকারি টাকা আত্মসাৎ করার অপরাধে আদালত তাঁকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। গত ১৪ অক্টোবর উপজেলার ঘগোয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ একেএম মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ওই বিদ্যালয়ের জাল ও ভূয়া সনদ দিয়ে চাকরি নেয়া সহকারি শিক্ষক আতিকা বেগমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। ২০ অক্টোবর আদালতে মামলার হাজিরা দিতে গেলে তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে বিজ্ঞ বিচারক তাঁেক জেল হাজতে পাঠায়।
জানা গেছে, উপজেলার ঘগোয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক আতিকা বেগম গত ২০১০ সালের ৪ অক্টোবর তারিখে সহকারি শিক্ষক (সমাজবিজ্ঞান) পদে যোগদান করেন এবং ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে এমপিও ভুক্ত হন। স্থানীয় কিছু সংখ্যক শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ওই শিক্ষকের ভূয়া নিবন্ধন সনদের বিষয়ে অভিযোগ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) যাচাই বাছাই সাপেক্ষে তাঁর নিবন্ধন সনদ জাল ও ভূয়া প্রমাণিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানকে নিদের্শ দেন।
এনটিআরসিএ এর সহকারি পরিচালক মোক্তাক আহম্মেদের নির্দেশে এবং ম্যানেজিং কমিটির সম্মতিক্রমে অধ্যক্ষ একেএম মিজানুর রহমান গত ১৪ অক্টোবর বাদি হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করে। মামলায় হাজিরা দিতে গেলে বিজ্ঞ বিচারক তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়।
অধ্যক্ষ একেএম মিজানুর রহমান জানান, এনটিআরসিএ এর যাচাই-বাচাই সাপেক্ষে ওই শিক্ষকের নিবন্ধন সনদ ভূয়া ও জাল প্রমাণিত হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে রয়েছেন।