বৃহস্পতিবার ● ৩১ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » বেদখল হয়ে যাচ্ছে সিন্দুকছড়ি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি
বেদখল হয়ে যাচ্ছে সিন্দুকছড়ি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি
মহালছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলায় অরক্ষিত ও অবহেলায় বেদখল হয়ে যাচ্ছে সিন্দুকছড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটির নামে রেকর্ডভুক্ত জায়গা।
একদিকে জনবল সংকট আর অন্যদিকে অব্যবস্থাপনার কারণে সিন্দুকছড়ি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতে ছাদ থেকে পড়ে ভিতরের কক্ষের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে। এফডব্লিওভি না থাকায় এতে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সহ গ্রামীণ শিশু ও নারীদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রথমদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারি থাকলেও কিছুদিন পরে বদলী হয়ে যাওয়ায় জনবল শূণ্য হয়ে পড়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। বর্তমানে স্বাস্থ্য কেন্দ্রেশুধুমাত্র একজন পরিদর্শক সহ তিন জন ছাড়া আর কেউ নেই । ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আশপাশ ও দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। ফলে সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
বর্তমান গুইমারা উপজেলাধীন সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নটি মহালছড়ি উপজেলাধীন থাকাকালীন সময়ে নির্মাণ করা হয়েছিলো ‘ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি’।
নতুন গুইমারা উপজেলা হলেও এখনো সমস্ত কার্যক্রম মহালছড়ি উপজেলার আওতাভুক্ত রয়েছে সিন্দুকছড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি।
এ বিষয়ে উক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক (এফপিআই) বিনন্দ ত্রিপুরা অভিযোগ করে জানান, এক একর জায়গার উপড় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটির ভবণ নির্মিত হয়েছিল কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে লোকবল না থাকায়় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আশপাশের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটর (এফডব্লিউভি) না থাকায় গর্ভবতী নারীদের পরিচর্যা ও প্রসব পরবর্তী পরিচর্চার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
পুরো ইউনিয়়নের প্রতি মাসে চারটি স্যাটেলাইট ক্লিনিক হওয়ার কথা থাকলেও এখনো একটাও হয়়নি, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও তা নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিন্দুকছড়ি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিত্যাক্ত ভবনের আশেপাশে গরু, ছাগলের বসবাস, ভবণ ঘেষে লাকরী আর মাকড়শার জাল ভরা। অন্যদিকে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির জায়গা বেদখল করতে মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ শুরু করেছে। বসতবাড়ি করে রেখেছে এলাকার লোকজন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সকল আসবাবপত্র ব্যবহার করার মত অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দীর্ঘ দিন যাবৎ এই অবস্থা । বাউন্ডারি প্রাচীর না থাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আশেপাশের এলাকা বেদখল করে বসতি স্থাপন করেছে ছয়-সাতটি পরিবার। অনেকেই এ জায়গা বিক্রি করে চলেও গেছে। স্থানীয়দের ধারণা, এভাবে থাকলে আরো কিছুদিন পর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এই বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সুভাষ বসু চাকমা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির কথা স্বীকার করে জানান, উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মহালছড়ি স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষদ
মহালছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাসেবা জনসাধারণের দোড়গড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে মহালছড়ি স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পরিষদ। বর্তমানে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মান ও ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও এলোপ্যাথি চিকিৎসার তুলনায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান কম। সাধারণের মাঝে সহজলভ্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে গত ২৮ মে ২০১৭ তারিখে মহালছড়ি শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট মহালছড়ি স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। মহালছড়ি স্বাধীনতা হোমিও চিকিৎসা পরিষদ এর কমিটিতে যাঁরা রয়েছেন, প্রকৃতি রঞ্জন দাশ গুপ্ত ( সভাপতি), ডা: সুকৃতি চাকমা ( সাধারণ সম্পাদক), ডা: বিমল চন্দ্র তালুদার (সহ সভাপতি), ডা: নিহার চাকমা (সহ সভাপতি), ডা: সবিনয় চাকমা (সহ সম্পাদক), ডা: প্রীতি রাণী দাশ (মহিলা বিষয়ক সম্পাদক), ডা: ভবতোষ দেওয়ান (প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক), ডা: সাধনা চাকমা (চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক), ডা: অনিল চাকমা (দপ্তর সম্পাদক), প্রসিত বিকাশ খীসা (ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক) ডা: রিপাইন চাকমাকে (সাংগঠনিক সম্পাদক) ও নিলোৎপল খীসা। হোমিও চিকিৎসা শাস্ত্রকে ব্যাপক প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে সেবামূলক নানা কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান সংগঠনের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন দাশ গুপ্ত। এরই ধারাবাহিক কর্মসূচী হিসেবে গত ২৫ অক্টোবর মুবাছড়ি বনবিহারে অনুষ্ঠিতব্য কঠিন চিবর দান উৎসবে মহালছড়ি স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষদ বিনা মূল্যে ঔষুধ বিতরন ও চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এ সময় ৩ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসাসেবা ও বিনামূল্যে ঔষুধ প্রদান করা হয়।
চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী ও সদস্য জুয়েল চাকমা।
সংগঠনের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন দাশ গুপ্ত আরো বলেন, হোমিওপ্যাথিক ঔষধ অন্যান্য ওষুধের তুলনায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম। ভারত ও বাংলাদেশে বহুকাল থেকেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা চলে আসছে। এখন বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদানের জন্য কয়েকটি হোমিওপ্যাথি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। বর্তমানে চিকিৎসা শাস্ত্রের অন্যতম একটি ক্ষেত্র হোমিও চিকিৎসা।
বর্তমানে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মান ও হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলোপ্যাথিক চিকিৎসার তুলনায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় মানুষের জ্ঞান কম কারন মানুষের জানার সুযোগ কম। তাই মহালছড়ি স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষদ হোমিও ঔষধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ ব্যাপক প্রচার ও প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে।