শুক্রবার ● ১ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ঢাকা » অধিকার আদায়ে দেশব্যাপী শ্রমজীবীদের সংগ্রাম জোরদার করার ডাক : সাইফুল হক
অধিকার আদায়ে দেশব্যাপী শ্রমজীবীদের সংগ্রাম জোরদার করার ডাক : সাইফুল হক
ঢাকা প্রতিনিধি :: সরকার গরীব-মেহনতিদের সমর্থন চায়, কিন্তু অধিকার দেয় না মন্তব্য করে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও খেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল হক বলেছেন, ভোটের অধিকার না থাকায় গরীবেরা আরো নিঃস্ব হয়েছে, তাদের রাজনৈতিক-সামাজিক গুরুত্ব কমে গেছে। সরকারের কথিত উন্নয়ন গ্রামীণ জীবনমান বৃদ্ধি করেনি অধিকার আদায়ে গ্রামাঞ্চলে লড়াই-সংগ্রাম জোরদার করতে হবে।
আজ শুক্রবার সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়নের জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও খেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল হক এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ভোটের অধিকার হরণ করে গরীবদেরকে আরো নিঃস্ব, মর্যাদাহীন ও দুর্বল করা হয়েছে। ভোটের অধিকার না থাকায় কৃষক- খেতমজুরসহ শ্রমজীবী- মেহনতি মানুষের রাজনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব কমে গেছে। তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য গরীবদের সমর্থন চায়, কিন্তু তাদেরকে অধিকার দিতে চায় না। তিনি বলেন, দেশে চরম দারিদ্র বেড়েই চলেছে, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যও তীব্র হচ্ছে। ২০ লাখ পরিবারের মাসে গড় আয় মাত্র ৭৪৬ টাকা। গরীবদের তুলনায় ধনীরা ১১৯ গুন বেশী আয় করছে। সরকারের কথিত উন্নয়নের রাজনীতি এক দেশে দুই অর্থনীতি, দুই সমাজ কায়েম করেছে। খেতমজুরসহ মেহনতি মানুষের একাংশের অবস্থা এতই ভয়ংকর যেকোন দুর্যোগে আবার তারা দারিদ্রসীমার নীচে নেমে যাচ্ছে।তাদের জন্য বরাদ্দ করা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিসমূহ বেশুমার দুর্নীতি ও দলবাজির কারণে ব্যর্থতায় পর্যবসীত হয়েছে। তিনি গ্রামীণ প্রকল্পের চুরি-দুর্নীতি-দলীয়করণরোধে ইউনিয় পর্যায়ে গণতদারকি ব্যবস্থা কার্যকর করার দাবি জানান। একই সাথে তিনি খেতমজুরদের জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চয়মতা স্কীম ও পল্লী রেশনিং ব্যবস্থা চালুর আহ্বান জানান। তিনি অধিকার আদায়ে দেশব্যাপী খেতমজুরসহ গ্রামীণ শ্রমজীবী ও উৎপাদক চাষীর সংগঠন ও সংগ্রাম জোরদার করার ডাক দেন।
তোপখানা রোডে বিএমএ ভবন সংলগ্ন চত্ত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
খেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সংহতি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, কৃষক ও খেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, কৃষক ও খেতমজুর ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদশে কৃষক ও খেতমজুর ফোরামের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর সভাপতি বহ্নিশিখা জামালী, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অরবিন্দু বেপারী বিন্দু, বিপ্লবী ছাত্র সংহতির রফিকুল ইসলাম অভি ও বিপ্লবী কৃষক সংহতির সভাপতি আনছার আলী দুলাল প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন খেতমজুর নেতা আকবর খান। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সজীব সরকার রতন।
জাতীয় সঙ্গীতের সাথে সাথে জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়।
উদ্বোধনী অধিবেশনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, সরকারের কথিত উন্নয়নের ছোয়া কৃষক খেতমজুরদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে পারেনি। স্থানীয় সরকারেও কৃষক খেতমজুরদের প্রতিনিধিত্ব নেই। ভূমিগ্রাসীরা এখনও অধিকাংশ খাস জমি দখল করে আছে। গ্রামাঞ্চলে জুলুম-নির্যাতনেও গ্রামের গরীবদেরকে হয়রানির শিকার হতে হয়। বক্তারা এই অবস্থা পরিবর্তনে গ্রামীণ খেতমজুর, ভূমিহীন ও কৃষককে প্রতিবাদ প্রতিরোধে জেগে ওঠার আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে খেতমজুরদের বাঁচার দাবিতে বর্ণাঢ্য র্যালী ঢাকার রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।
বিকেলে সেগুনবাগিচায় স্বাধীনতা হলে খেতমজুর ইউনিয়নের কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়।