মঙ্গলবার ● ৫ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » বাগেরহাটে ঝুঁকিপূর্ন ভবনে চলছে কমিউনিটি ক্লিনিক
বাগেরহাটে ঝুঁকিপূর্ন ভবনে চলছে কমিউনিটি ক্লিনিক
বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পূর্ব পঞ্চকরন কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম চলেছে ঝুঁকিপূর্ন ভবনে।স্বাস্থ্য সেবা নিতে আশা রোগীদের ভোগান্তি চরমে। ২ বছর পূর্বে এ ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হলেও এ ভবনে চলছে স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম। এলাকাবাসির দাবি নতুন একটি ভবনের।
প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে এ কমিউনিটি ক্লিনিকে ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন গ্রামীন জনপদের মা ও শিশুরা। যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকায় রয়েছে স্থানীয়রা।
গতকাল সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার পঞ্চকরণ ইউনিয়নের পূর্ব পঞ্চকরণ গ্রামে ২০০১ সালে নতুন ভবনে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয়। কয়েক বছর যেতে না যেতেই লবনাক্ততার কারনে পলেস্তরা খসে পড়ে বেরিয়ে এসেছে ইট। মূল ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায় ক্লিনিকের দু’টি কক্ষ। ভবনটিতে নেই কোন দরজা জানালা, পলিথিন দিয়ে ডেকে রাখা হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র।
ক্লিনিকে কর্মরত রয়েছেন ৩ জন। সিএইচ সিপি নুসরাত জাহান, স্বাস্থ্য সহকারি আফিফা তাজরিনী ও পরিবার পরিকল্পনার সাজেদা আক্তার। এদেরমধ্যে উপস্থিত রয়েছেন চিকিৎসক নুসরাত জাহান ও পরিবার পরিকল্পনার মাঠ কর্মী সাজেদা আক্তার। আফিফা তাজরিনী সপ্তাহে ২দিন আসেন শনি ও মঙ্গলবার।বাকি দিনগুলো তার ফিল্ডে কার্যক্রম। প্রতিদিন গড়ে এখানে ৪০-৫০ জন রোগী চিকিৎসা নেন।
চিকিৎসক নুসরাত জাহান জানান, পঞ্চকরণ ও পুটিখালী দু’টি ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী এ ক্লিনিকটি এ কারনেই প্রতিনিয়ত রোগীর সংখ্যা বেশী হচ্ছে বিশেষ করে সাধারণ রোগী গর্ভবতী মায়েদের এনসি সেবা ও পিএনসি সেবা ও শিশুদের ওজন উচ্চতা পরিমাপসহ চিকিৎসা দেওয়া হয়। সরকারিভাবে মায়েরদের জন্য আয়রন, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট দেওয়া হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে সর্দি, জ্বর, কাশি ও ডায়রিয়ার ওষুধ ও ভিটামিন এ ক্যাপসুল দেওয়া হয়।
কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল খান, ইউপি মেম্বর ডা. আব্দুস ছোবাহান, মিলন শেখ, শিক্ষক আলম হাওলাদার, মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার, যুবলীগ নেতা মিলন শেখ ও নারী নেত্রী রেনু বেগমসহ একাধিক স্থানীয়রা জানান, এ ইউনিয়নের চিকিৎসাক্ষেত্রে এ কমিউনিটি ক্লিনিকটি জনগুরুত্ব বহন করে আসছে।
পার্শ্ববতী পুটিখালী ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রাম ও পঞ্চকরণ ও খারইখালীর ৩ গ্রামের মানুষ এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন অনেক দূর দূরান্ত থেকে। দীর্ঘ ৫-৬ বছর ধরে এ জরাজীর্ণ ভবনে চলছে স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম। বিষয়টি চেয়ারম্যান মেম্বরসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হলেও হয়নি কোন প্রতিকার। তারা এ কমিউিনিটি ক্লিনিকটি নতুন একটি ভবনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।
এ সর্ম্পকে পঞ্চকরণ ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার জানান, এ ইউনিয়নের ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে পূর্ব পঞ্চকরন ক্লিনিকটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ন, বিষয়টি লিখিত আকারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিতসহ নতুন ভবনের জন্যও আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, পূর্ব পঞ্চকরণ কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এ ক্লিনিকের কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য পার্শ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এ উপজেলার ঝুঁকিপূর্ন ভবনগুলোর নতুন করে পুর্ননিমানের জন্য গত বছর একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে।