বুধবার ● ৬ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সুরমা নদীর তীরের ভাঙন রক্ষায় একনেকে ১২০ কোটি ৮২ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন
সুরমা নদীর তীরের ভাঙন রক্ষায় একনেকে ১২০ কোটি ৮২ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন
ষ্টাফ রিপোর্টার :: সিলেট সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলায় মাহতাবপুর, দশগ্রাম, ও রাজাপুর পরগণার বাজার এলাকায় সুরমা নদীর উভয় তীরের ভাঙন রক্ষায় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধিনে এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (০৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরস্থ পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। সভায় মোট ৬টি প্রকল্প অনুমোদন। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
অনুমোদিত বাকি ৫টি প্রকল্পসমূহ হলো- রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রকল্প, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প ‘যশোর (রাজারহাট)-মনিরামপুর-কেশবপুর-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়ক (আর-৭৭৫) উন্নয়ন প্রকল্প, ফেনী-সোনাগাজী-মুহুরী প্রকল্প সড়কের ৩০ কি.মি. এ ৩৯১.৩৪ মিটার দীর্ঘ মুহুরী সেতু এবং বক্তারমুন্সী-কাজিরহাট-দাগনভূঁঞা সড়কের ১৩তম কিলোমিটারে ৫০.১২ মিটার দীর্ঘ ফাজিলাহাট সেতু নির্মাণ প্রকল্প, কক্সবাজার জেলার একতাবাজার হতে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি পর্যন্ত সড়ক (জেড-১১২৫) উন্নয়ন প্রকল্প, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ‘আগারগাঁওস্থ শেরে বাংলা নগরে পর্যটন ভবন নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প।
উল্লেখ্য, সুরম নদী অব্যাহত ভাঙনে ২০০০ সাল থেকে এপর্যন্ত বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী এলাকায় কবরস্থান, মাজার, মসজিদ, বাজারসহ প্রায় শতাধিক বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। মাথা গোজাঁর ঠাঁই হারিয়ে গৃহহারা হয়েছেন স্থানীয় মাহতাবপুর ও শাহপুর গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার। ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের দূর্ভোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, আতংকে রয়েছেন নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো। নদীর ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী।
২০১০ সালে সিলেট-২ আসনের ততকালীন সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরীর আহবানে নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন ততকালীন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদার। তিনি পরিদর্শন করে ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেও সেই সরকারের আমলে প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। এরপর ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল ততকালীন সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়ার আহবানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ততকালীন মন্ত্রী ব্যরিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, প্রতিমন্ত্রী বীরপ্রতিক নজরুল ইসলাম (অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্ণেল), মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহা-পরিচালক, অতিরিক্ত মহা-পরিচালক, সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। নদী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে বলে পরিদর্শনকালে জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। এরপর নদীর তীর ভাঙন রোধে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেয় প্রকল্পের। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলায় দশগ্রাম, মাহতাবপুর ও রাজাপুর পরগণার বাজার এলাকায় সুরমা নদীর উভয় তীরের ভাঙন রক্ষায় মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।