শনিবার ● ৯ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে দুইপক্ষের সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ আহত-১০
বিশ্বনাথে দুইপক্ষের সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ আহত-১০
ষ্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের বিশ্বনাথে দুই শিশুর ঝগড়া নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ অনন্ত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার সকালে আগের দিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর আগে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় দক্ষিণ সৎপুর গ্রামের দরছ মিয়া ও নূর আলী লোকজনের মধ্যে শিশুদের ঝগড়া নিয়ে সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে দরছ মিয়ার পক্ষে আহত হলেন তার ছোট ভাই সাদিক মিয়া (৩০), ভাতিজা সাইদুল ইসলাম (৪), চাচা হান্নান মিয়া (৩৫), চাচী রুফনা বেগম (৩০) এবং অপর চাচা লোকধন মিযার মেয়ে অঞ্জনা বেগম (৬), নূর আলীর পক্ষে আহত হলেন তার ভাই নূর আমিনের স্ত্রী রহিমা বেগম (৫০) এবং মধ্যস্থতাকারী একই গ্রামের আশরাফ উদ্দিন (৩০)। এরই মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় সাদিক মিয়া ও সাইদুলকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এব্যাপারে দক্ষিণ সৎপুরের ইউপি সদস্য দিলশাদ আলীর ছেলে মনসুর আলী ও মধ্যস্থতাকারী আশরাফ উদ্দিন জানান, শুক্রবার সকালে লোকধন মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া (১২) ও প্রতিপক্ষে নূর আলীর নাতি আকাশ মিয়া (১২) বাড়ির বাহিরে খেলা-ধুলা করছিল। হঠাৎ তাদের দুইজনের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। আর তাদের ওই ঝগড়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের অনন্ত ১০ জন আহত হন।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বিশ্বনাথে ভারতীয় ৬টি গরুসহ আটক দুই
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে ৬টি ভারতীয় গরু-পিকআপ গাড়িসহ দুইজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। আজ শনিবার ভোরবেলায় উপজেলা সদরের বাসিয়া সেতুর সামন থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন-সিলেটের জৈন্তা উপজেলার ওপরপুর (শ্যামপুর) গ্রামের একলিম মিয়ার ছেলে মস্তফা মিয়া একই উপজেলার পশ্চিম বালীপাড়া গ্রামের মনির আহমদের ছেলে কবির আহমদ। আটককৃতদের আসামি করে পুলিশ বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেছে।
পুলিশ জানায়, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলা দিয়ে অবৈধ পথে ভারত থেকে ৬টি গরু নিয়ে আসেন চোরাকারবারীরা। গরুগুলো বিশ্বনাথ উপজেলা সদর হয়ে সিলেট যাওয়ার পথে উপজেলার সদরের বাসিয়া সেতুর সামন থেকে সন্দেহজনকভাবে গরু বোঝাই পিকআপ গাড়ি (সিলেট-ন-১১-১২১২) আটক করা হয়। এসময় দুইজনকে আটক করলেও অপরজন পালিয়ে যায়। আটক গরুগুলো ভারতীয় বলে সনাক্ত করা হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে প্রায় সময় ভারতীয় গরু নিয়ে চোরাকারবারীরা যাতায়াত করে বলে স্থানীয়রা জানান।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, ভারতীয় ৬টি গরু উদ্ধারের বিষয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক দুই ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে জেলা বিএনপি নেতার হাতে উপজেলা সভাপতি লাঞ্ছিত
বিশ্বনাথ :: সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বিশ্বনাথের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীর হাতে বিশ্বনাথ বিএনপির সভাপতি ও বিশ্বনাথ ইউনয়িনের সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন লাঞ্ছিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় সিলেটের বিশ্বনাথ থানার বিপরীতে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আকদ্দুছ আলীর মার্কেটের দ্বিতীয়তলার সরু রাস্তায় জালাল উদ্দিনকে ডেকে নিয়ে লাঞ্ছিত করেন সুহেল চৌধুরী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুহেল চৌধুরী গ্রুপের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, দু’জনের মধ্যে একটু হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তাদের দাবি, সম্প্রতি বিশ্বনাথ বিএনপির নতুন কমিটি গঠন নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, এ ঘটনা নিয়ে বিএনপির সুহেল চৌধুরী গ্রুপ ও জালাল উদ্দিন গ্রুপের নেতাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় দু’গ্রুপের নেতাদের মধ্যে বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে সুহেল চৌধুরী গ্রুপের নেতারা বিশ্বনাথ পুরান বাজারে আর জালাল উদ্দিন গ্রুপের নেতারা বিশ্বনাথ নতুন বাজারে অবস্থান নিতে দেখাগেছে। এ ঘটনার মোকাবেলা করতে বৃহস্পতিবার (৭নভেম্বর) বিকেলে এক জরুরী সভা করেছেন জালাল উদ্দিন পক্ষের নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, গত ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মীনি তাহসিনা রুশদীর লুনার উপস্থিতিতে বিশ্বনাথ বিএনপির নতুন কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার ৮ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সম্পাদকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভায় অভিযোগ উঠে স্থানীয় এমপি গণফেরাম নেতা মোকাব্বির খানের সঙ্গে সুহেল চৌধুরীসহ তার বলয়ের নেতাদের সখ্যতার বিষয়। যে কারণে সুহেল চৌধুরীসহ তার বলয়ের নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আর এতে বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গউছ খানকে আহবায়ক করে ২২ সদস্যের একটি খসড়া কমিটি গঠন করে জেলায় পাঠানো হয়।
ঘটনার সত্যতা জানতে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সুহেল আহমদ চৌধুরী ও বিশ্বনাথ বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তারা দু’জনের কেউই মোবাইলের ফোনকল রিসিভ করেন নি।
তবে, জালাল উদ্দিন গ্রুপের নেতা বিশ্বনাথ বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বশির আহমদ এ প্রতিবেদককে বলেন, লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি তিনি বৃহস্পতিবার সকালে জেনেছেন। আর এ ঘটনার প্রতিবাদে তারা বৈঠকও করছেন। তবে বৈঠকে সিদ্দান্তের বিষয় জানতে চাইলে তিনি সিদ্দান্ত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
বিশ্বনাথ বিএনপির নবগঠিত কমিটির সম্ভাব্য আহবায়ক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গউছ খান কমিটি গঠন ও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, যারা গণফোরামের এমপি মোকাব্বির খানকে নিয়ে সভা-সমাবেশ করে তারা বিএনপির হতে পারে না। তাই সুহেল চৌধুরীসহ তার গ্রুপের নেতাদের বাদ দিয়ে সম্প্রতি তাকে (গউছ খানকে) আহবায়ক করে ২২ সদস্যের একটি কমিটি জেলায় পাঠানো হয়েছে।
বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা বলেন, এখন পর্যন্ত বিএনপির কোন পক্ষই মামলা কিংবা জিডি করতে থানায় যান নি।