সোমবার ● ১১ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ঢাকা » তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের মানববন্ধন
তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের মানববন্ধন
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক প্রণীত খসড়া ‘জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি ২০১৯’ চূড়ান্তকরণে তামাক কোম্পানির মতামত গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানোর জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১৮টি তামাকবিরোধী সংগঠন সম্মিলিতভাবে আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচিতে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, হেলাল আহমেদ, প্রত্যাশা; মোখলেসুর রহমান, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন; শুভ কর্মকার, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট; বজলুর রহমান, টিসিআরসি; শামিমুল ইসলাম, এসিডি; হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, বিইআর; খন্দকার রিয়াজ হোসেন, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি; শামিমুল ইসলাম, বিসিসিপি ও নাজমুল হাসান, ইপসা প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধি দল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি চূড়ান্তকরণে এনবিআর এর তামাক কোম্পানির পক্ষাবলম্বন এফসিটিসি’র লংঘন। তামাক নিয়ন্ত্রণের আন্তর্জাতিক চুক্তি WHO Framework Convention on Tobacco Control (FCTC) এর প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের বিশেষ সুনাম সারাবিশ্বে রয়েছে। FCTC আর্টিক্যাল ৫.৩ এর ১৩ ধারায়, তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে সরকারকে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত থাকতে সুপারিশ করা হয়েছে। FCTC এর স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ও পদক্ষেপসমূহ তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক ও অন্যান্য স্বার্থ থেকে সুরক্ষা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর উচিত হবে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপমুক্ত থাকা এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি চূড়ান্তকরণে তামাক কোম্পানির মতামত গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ না করা। পাশাপাশি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার মাধ্যমে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের পথ সুগম করতে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, এসিডি, ইপসা, নাটাব, প্রত্যাশা, টিসিআরসি, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, বিইআর, তাবিনাজ, বিসিসিপি, এইড ফাউন্ডেশন, সুপ্র, বিটা, প্রজ্ঞাসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের অর্ধশতাধিক প্রতিনিধি এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর ১ লক্ষ ২৬ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতায় বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়, যা তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের চেয়ে অনেক বেশি। তামাক ব্যবহারজনিত এই ক্ষয়ক্ষতি এবং ভয়াবহতা উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং এলক্ষ্য অর্জনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করে।