মঙ্গলবার ● ১২ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠিতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে গুচ্ছ গ্রামের ২৭টি ঘর লন্ডভন্ড
ঝালকাঠিতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে গুচ্ছ গ্রামের ২৭টি ঘর লন্ডভন্ড
ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: ঝালকাঠির রাজাপুরের বড়ইয়া ইউনিয়নের বিষখালি নদীর তীরের চরে অবস্থিত চর পালট গুচ্ছ গ্রামের নির্মানাধীন ১৭টি ঘর পুরো বিধ্বস্তসহ ২৭টি ঘর প্রলংয়কারী ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং পানি বৃদ্ধ ও বৃষ্টির পানিতে বালু ও মাটি ধূয়ে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে চর পালট গচ্ছগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটির দাবি করেছেন। এতে যথা সময়ে এ ঘরগুলো ভুক্তভোগীদের মাঝে হস্তান্তর নিয়ে চরম শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি সরকার এ বিষয়ে দ্রুত নজর দিবে এবং ক্ষতি পুষিয়ে যাতে ঘরগুলো পুনরায় নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যায়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বড়ইয়া ইউনিয়নের বিষখালি নদীর তীরের চর ভরাট করে চর পালট গুচ্ছগ্রামে ৭০টি ঘর, টিউভওয়েল ও লেট্রিন নির্মানের জন্য গুচ্ছগ্রাম সিবিআরপি-২ প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। সে অনুয়ায়ী গত সেপ্টেম্বর মাসে চরে বালু ফেলে উচু করে ঘর নির্মান ও লেট্রিনসহ যাবতীয় কাজ শুরু করা হয় এবং নভেম্বরের শেষের দিকে কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করার কথা ছিল। চর পালট গুচ্ছ গ্রামের নির্মান কাজে নিয়োজিত মিস্ত্রী এবং শ্রমিক ফরহাদ হোসেন, জামাল হোসেন ও মোঃ রফিক জানান, ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে নির্মান করা ঘরগুলো একের পর এক মাটিতে ভেঙে পড়ে লন্ডভন্ড হয়ে তছনছ হয়ে গেছে। এতে ঘরগুলোর টিন, পিলার ও লোহার পাত ভেঙে ও নষ্ট হয়ে গেছে। লেট্রিনের মালামাল, চিউভওয়েলের মালপত্রও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে ঝড়ো বাতাসে নিরুপায় হয়ে জীবন বাচাতে নৌকায় ওইখান থেকে চলে যায়। মাটি ও বালু পানিতে ধুয়ে নেমে গেছে। চর পালট গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বাস্তাবায়ন কমিটির সম্পাদক আব্দুল মালেক জানান, ঘরনির্মান ও অণ্য মালামাল ঝড়ে ও পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১৭টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১০টি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং পানিতে প্রায় ১ ফুট মাটি ও বালু ধূয়ে নেমে গেছে। চর পালট গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বাস্তাবায়ন কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য আহসান কবির জানান, চর পালট গুচ্ছগ্রামে ৭০টি ঘর, টিউভওয়েল ও লেট্রিন নির্মানের জন্য গুচ্ছগ্রাম সিবিআরপি-২ প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। সে মর্মে কাজ শুরু করে ৩৫টি ঘরের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, এমতাবস্থায় ঝড়ে ১৭টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১০টি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকার যদি এ ক্ষতির বিষয়ে যদি সরকার নজর না দেয়, তাহলে কোনভাবেই এক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয় এবং সঠিকভাবে সময়ে এ ঘর তৈরি ও সঠিকভাবে কাজ শেষ করা সম্ভব নয় এবং যথা সময়ে উপকারভোগীদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা সম্ভব হবে না। রাজাপুরের ইউএনও মোঃ সোহাগ হাওলাদার জানান, চর পালট গুচ্ছ গ্রামটি বড়ইয়া ইউনিয়নের বিষখালি নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে নির্মান কাজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে এ ক্ষতির বিষয়ে কোন সহায়তা বা বরাদ্দ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী ২৬ নভেম্বর বড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদে যাচাই বাছাই শেষে ঘরের ত্রুত বা সমস্যা সেরেই প্রকৃত উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হব। রাজাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান জানান, বিষখালি নদীর চরে খোলা স্থানে হওয়ায় ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে গুচ্ছগ্রামের নির্মাানধীন ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়া জরুরি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে দ্রুত কাজ নির্মান সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
‘উপকূল দিবস’ চান ঝালকাঠির মানুষ, মানববন্ধন
ঝালকাঠি :: উপকূলবাসী অগ্রগতি ও সুরক্ষার তাগিদে ‘ভয়াল ১২ নভেম্বরকে উপকূল দিবস’ ঘোষণার দাবিতে ঝালকাঠিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঝালকাঠি প্রেস ক্লাব, কালের কণ্ঠ শুভসংঘ, সূর্যালোক ট্রাস্ট ও দুরন্ত ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করে। এতে মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি আক্কাস সিকদারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন দত্ত, টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন হিমু, সাধারণ সম্পাদক দুলাল সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিল, টিআইবির এরিয়া ম্যানেজার মো. রোকনুজ্জমান, সমাজকর্মী জাহাঙ্গীর হোসেন, কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পক্ষ থেকে সাঈদ জুবায়ের, প্রথম আলো বন্ধু সভার পক্ষ থেকে শাকিল রনি ও দুরন্ত ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল নাঈম অন্তু। সমাবেশে বক্তারা ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সুন্দরবনকে একটি রক্ষাকবচ উল্লেখ করে সেটি সুরক্ষার দাবি জানান। ১৯৭০ সালের ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয় সমাবেশ থেকে।
পিতার মাথায় রড ঢুকিয়ে হত্যার ঘটনায় ঘাতক ছেলে গ্রেফতার
ঝালকাঠি :: ঝালকাঠির রাজাপুরের ছোট কৈবর্তখালি গ্রামের ফকির হাট এলাকায় পিতা দেলোয়ার হোসেন খানের মাথায় লোহার রড ঢুকিয়ে হত্যার ঘটনায় ঘাতক ছেলে তরিকুল ইসলাম হৃদয় (২০) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। সোমবার রাত ৯ টার উপজলোর বড় কর্বৈতখালি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত ৮ নভম্বের রাতে হাত খরচের টাকা না দেয়ায় বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে লোহার রড মাথায় ঢুকিয়ে দিলে বরিশাল শেবাচিমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন গভীর রাতে মারা যান দেলোয়ার খান (৪২)। এ ঘটনায় স্ত্রী ফাতিমা ওরফে আল্লাদী বাদী হয়ে ছেলে আসামী করে ১১ নভেম্বর রাজাপুর থানায় মামলা (নং৮) দায়রে করেন। রাজাপুর থানার ওসি জাহদি হোসনে জানান, হৃদয়কে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে বলেও জানান তিনি।