বৃহস্পতিবার ● ১৪ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » প্রস্তুত ‘পুষনী গুচ্ছগ্রাম’
প্রস্তুত ‘পুষনী গুচ্ছগ্রাম’
ষ্টাফ রিপোর্টার :: ‘কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণানুযায়ী গৃহহী নদের বরণ করতে প্রস্তুত সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ‘পুষণী গুচ্ছগ্রাম’।
সরকারের অর্থায়নে গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় (ক্লাইমেট ভিকটিম রিহ্যাবিলিনেশন) প্রকল্পের আওতায় ৪৬ লক্ষ্য ৬৬ হাজার ৫শত টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছে এ গুচ্ছগ্রাম। উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের গোবিন্দ নগর গ্রামে এক একর খাস জমিতে ২৫টি গৃহহীন পরিবার বসবাসের উপযোগী করে প্রস্তুত রাখা করা এটি।
সরেজমিন গুচ্ছগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গুচ্ছগ্রামে গৃহহীনদের বরণ করতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এক একর ভূমিতে সারিবদ্ধ ভাবে রয়েছে টিন শেডের তৈরি ২৫টি ঘর ও একটি মাল্টিপারপাস হল। প্রত্যেক ঘরে রয়েছে দু’টি করে কামরা। আছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা, রান্নাঘর, সুপেয় পানি ও গোসলখানা। গ্রামের মধ্যখানে রাখা হয়েছে শিশুদের খোলার মাঠ।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে ‘পুষণী গুচ্ছগ্রাম’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কাজের ধীর গতির কারণে সম্প্রতি এটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এর সাথে সাথেই নেয়া হয় গৃহহীনদের তালিকা। ২৫টি পরিবারের তালিকা যাচাই-বাচাই করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলেই মনোনীত পরিবারদের হস্তান্তর করা হবে ঘর।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তালুকদার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, সরকারের এ প্রকল্প হাসি ফুটিয়েছে গৃহহীনদের মধ্যে।
প্রকল্পের সদস্য সচিব উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, আমরা আশাবাদী ‘পুষণী গুচ্ছগ্রামে’ হতদরিদ্র পরিবারগুলো তাদের সন্তানাদি নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল বলেন, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ডিসি স্যারের অনুমতি পেলে এ মাসেই ঘর হস্তান্তর করা হবে।
চাঁদাবাজীর মামলায় মাদ্রাসা সুপার হোমাইদী কারাগারে
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে মাজার কর্তৃপক্ষের কাছে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ইলিয়াস আলী আল হোমাইদী’কে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের পিটাকরা গ্রামের মৃত সিকন্দর আলীর পুত্র ও মৌলভীবাজার জেলার জগৎপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার। গতকাল বুধবার সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৪র্থ আদালতে হাজির হয়ে ওই মামলার ৪জন আসামী জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তিনজনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন এবং প্রধান আসামী ইলিয়াস আলী আল হোমাইদী (৪৫)’র জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতের প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী ফরহাদ আহমেদ।
মামলার জামিনপ্রাপ্ত অভিযুক্তরা হলেন- পিটাকরা গ্রামের আলকাছ আলী (৫০), মোহাম্মদ আলী (৩০) ও মৃত ইরফান আলীর পুত্র জাহির আলী (৬০)। মামলার অপর অভিযুক্ত জাহির আলীর পুত্র আয়না মিয়া পলাতক রয়েছেন।
জানা যায়, বিশ্বনাথ উপজেলার পিটাকরা গ্রামের মৃত আব্দুল মুতালিব উরফে কটাই মিয়ার পুত্র ও স্থানীয় শাহ্ সুনামদী (রহ:) সহ তিন ওলীর মাজারের মোতাওয়াল্লী আখতার হোসেন বাদি হয়ে প্রতিপক্ষের ইলিয়াস আলী আল হোমাইদী সহ ৫জনকে অভিযুক্ত করে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগে আদালতে সম্প্রতি একটি জিআর মামলা দায়ের করেন। এরপর আদালতের নির্দেশে গত ৩ নভেম্বর মামলাটি বিশ্বনাথ থানায় রেকর্ড (এফআইআর) করা হয়। বিশ্বনাথ থানার মামলা নং- ৫ ও জিআর- ২৩৫/১৯।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করে হয়, পিটাকরা গ্রামে ‘হযরত শাহ্ সুনামদি (রহ:), হযরত শাহ্ সরবদি (রহ:) ও হযরত শাহ্ সনদাসি’র (র:) মাজার’ নামে তিন ওলীর মাজার রয়েছে। বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসক কার্যালয়ে ‘শাহ্ সুনাম উদ্দিন গং ওয়াক্ফ এষ্টেট’ মাজারটি তালিকাভূক্ত (ইসি নং- ১৫৪০৫) রয়েছে। ওয়াক্ফ প্রশাসক কর্তৃক আখতার হোসেন মোতাওয়াল্লী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ২০১২ সাল থেকে বংশানুক্রমে এই মাজারের রক্ষনাবেক্ষন, উন্নতি, ওয়াজ মাহফিল ও বাৎসরিক উরুস পরিচালনা করে আসছেন। অভিযুক্তরা মাজার বিদ্ধেসী ও প্রায় সময় মাজারের আয় থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন। যুগ যুগ ধরে প্রতি বৎসর পৌষ মাসের ২০ তারিখে মাজার প্রাঙ্গনে উরুস আয়োজন করা হয়। এতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত মাজার প্রেমী ও ভক্তরা সমবেত হন। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৩ জানুয়ারী (২০ শে পৌষ) পূর্ব নির্ধারিত উরুস আয়োজনের জন্য গত ১৭ অক্টোবর বিকেলে মাজার প্রাঙ্গনে পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ সমবেত হন। তখন অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ মাজার প্রাঙ্গনে প্রবেশ করে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এভাবে প্রতি বছর উরুসের আগে ২লক্ষ টাকা করে চাঁদা না দিলে উরুসের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না বলে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন বলে মামলা এজাহারে উল্লেখ করা হয়।