শুক্রবার ● ১৫ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ফেঞ্চুগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান জিলুর বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর ভুক্তভোগির লিখিত অভিযোগ
ফেঞ্চুগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান জিলুর বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর ভুক্তভোগির লিখিত অভিযোগ
ফেঞ্চুগঞ্জ :: সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বয়স্ক ভাতা উত্তোলনের কাগজ আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগি সৈয়দ সুমন মিয়া উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ জিলুর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করেছেন।
অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত সৈয়দ আব্দুল মুকিদ আলীর ছেলে সৈয়দ সুমন মিয়া তার মায়ের বয়স্ক ভাতা উত্তোলনের জন্য তার মা মৃত থাকায় মায়ের নমিনী হিসেবে তার ছোট ভাই সৈয়দ শিপন আহমদকে নিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসে যান। সমাজসেবা অফিস থেকে বয়স্ক ভাতা উত্তোলনের জন্য একটি ফরম পূরণ ও ওই ফরম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য/সদস্যা দিয়ে সত্যায়িত করার জন্য বলা হয়। ৩ অক্টোবর তারিখে ফরমটি সত্যায়িত করার জন্য উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে নমিনী সৈয়দ শিপন আহমদ ওই দিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৭ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর চেয়ারম্যান আহমদ জিলু অফিসে আসলে তার কাছে যান। ফরম বের করে সৈয়দ শিপন চেয়ারম্যান জিলুর হাতের দেয়ার পর, তিনি ফরমটি অস্পষ্ট বলে মাটির মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দেন। এসময় শিপন তার বড় ভাই সৈয়দ সুমনকে ফোন দেন। সৈয়দ সুমন চেয়ারম্যান আহমদ জিলুকে ফোন দিয়ে ফরমটি উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে সংগ্রহকৃত ও ফরমের লিখা অস্পষ্ট নয় বলে জানান। চেয়ারম্যান জিলু কোনো ভাবেই সত্যায়িত করে দেয়া যাবে না জানিয়ে তৎক্ষনাৎ ফোন কেটে দেন। সৈয়দ সুমন আবারো চেয়ারম্যান জিলুকে ফোন দিয়ে তার ভাই বিদেশ যাত্রী, বিদেশে যাওয়ার সব কাজ শেষ হয়ে গেছে, কাগজটি না আটকিয়ে সত্যায়িত করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এসময় তিনি সৈয়দ সুমনকে চেনেন না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সৈয়দ সুমন স্থানীয় ইউপি সদস্য রায়হান আহমদকে ফোন দিয়ে কাগজটি সত্যায়িত করে দেয়ার অনুরোধ জানালেও চেয়ারম্যান জিলু বিষয়টি এড়িয়ে যান। ভূক্তভোগী সৈয়দ সুমন তৎকালীন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জসিম উদ্দিনকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানান। পরে তিনি অন্যত্র বদলী হয়ে যান। পরে সৈয়দ সুমন আবারো উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে বিষয়টি জানালে কর্তব্যরতরা খুবই দুঃখ্য প্রকাশ করেন এবং কম্পিউটার থেকে একটি অরিজিনাল কপি প্রিন্ট করে দেন। ফরম পূরণ করে নমিনী সৈয়দ শিপন আবারো ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান জিলু ইউপি সদস্য রায়হান আহমদের স্বাক্ষর আনার পর তিনি সত্যায়িত করে দেবেন বলে জানান। ইউপি সদস্য রায়হানের কাছে গেলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া আমি স্বাক্ষর করতে পারব না। সৈয়দ সুমন আবারো উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে বিষয়টি বললে দায়িত্বরত অফিসার স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্যার কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিয়ে আসার জন্য বলেন। মহিলা ইউপি সদস্য সাথী রাণী দাসের কাছে গেলে তিনি ফরমটি সত্যায়িত করে দিতে পারবেন না বলে জানান। অভিযোগ পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় আহমদ জিলুর পক্ষে কাজ না করায় অভিযোগকারী সৈয়দ সুমনকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। এমনকি বর্তমানে চেয়ারম্যান জিলু অভিযোগকারীর মায়ের বয়স্ক ভাতার কাগজটি সাইন না করে আটকে রেখেছেন বলেও অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ জিলুর বক্তব্য নিতে তার মুঠো ফোনে একাধিক বার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।