রবিবার ● ১৭ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ, রাতে ধানক্ষেত থেকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার
স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ, রাতে ধানক্ষেত থেকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের শৈলকুপার গাবলা গ্রামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে (১২) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে বাড়ির পার্শ¦বর্তী একটি ধানক্ষেত থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত ধর্ষক রিফাত (১৭)। সে ওই গ্রামের রুহুল মোল্লার ছেলে। ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থী বলেন, তার বাবাকে ডাকতে পাশের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। সে সময় একই গ্রামরে রিফাতসহ তিনজন তার মুখ বেঁধে পাশের মাঠে নিয়ে খারাপ কাজ করে। মুখ বাঁধা থাকায় রিফাত ছাড়া বাকি দু-জনকে সে চিনতে পারেনি। ধর্ষিতার বাবা জানান, রাতে বাড়িতে গিয়ে দেখি মেয়ে ঘরে নেই। এরপর সবাই মিলে খুঁজতে থাকি। পরে বাড়ির পাশের একটি কলাক্ষেতে মেয়েটির কাপড় পড়ে থাতে দেখে গ্রামের অন্যান্য লোকদের নিয়ে অনেক খোঁজা-খুঁজির পর ধানক্ষেতে মুখ বাধা অবস্থায় মেয়েকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় পায়। এরপর সবাই মিলে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। যারা আমার মেয়ের এতো বড়ক্ষতি করল আমরা তাদের কঠোর শাস্তি চাই। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: নাইম সিদ্দিকী জনান, মেয়েটি ধর্ষণ কেস নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। অন্যান্য পরীক্ষা শেষে বলা যাবে প্রকৃতই সে ধর্ষণ হয়েছে কিনা এবং তার কতটুকু ক্ষতি হয়েছে। এদিকে শৈলকুপা থানার ওসি তদন্ত মহসিন হোসেন জানান, ভাটই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় আমরা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ধর্ষক রিফাতসহ তার সহযোগীরা পলাতক রয়েছে। চেষ্টা করছি তাদের আটক করতে।
এক লাফে পিয়াজের কেজি ৩০০ টাকা, মরিচের কেজি ৮টাকা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম। প্রতিদিন প্রকারভেদে মণ প্রতি গড়ে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে পেঁয়াজের দাম। ক্রমাগত দাম বৃদ্ধিতে তা ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন জেলাবাসিরা। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়ছেন নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষগুলো। বর্তমানে পাইকারি প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা আর খুচরা ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা দরে। জেলা শহরের নতুন হাটখোলা বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা নাসির উদ্দিন জানান, পেঁয়াজের দাম আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। সিন্ডিকেট করে বিক্রেতারা দাম বাড়াচ্ছে। সরকার বলছে দাম কমাব কিন্তু কিছুই তো করছে না। যত দুর্ভোগ আমাদের সাধারণ মানুষের। একই অভিযোগ অন্যান্য ক্রেতাদের। তারা বলেন, পাইকারি তো এক দাম আছেই, আবার খুচরা বিক্রেতারা আরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এ যেন রামরাজত্ব, যে যার ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে। পেঁয়াজ বিক্রেতা সোহাগ কুন্ডু জানান, আমদানিকৃত পেঁয়াজ বাজারে আসছে না। আর চাষিরা বাজারে পেঁয়াজ কম আনছে। ফলে চাহিদার তুলনায় জোগান কম হওয়ায় দাম বাড়ছে। নতুন পেঁয়াজ কিংবা এলসি পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। জেলা বিপণন কর্মকর্তা গোলাম মারুফ খান জানান, মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজবাহী বেশ কয়েকটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। কয়েক দিনের ভেতরেই তা খালাস হবে। ফলে হিলি, বেনাপোলসহ বিভিন্ন বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ বাংলাদেশে পৌঁছাবে। তাই আশা করা যাচ্ছে আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, কিছু আগাম জাতের পেঁয়াজও কিছুদিনের ভেতরেই বাজারে আসবে যা দাম কমাতে ভূমিকা রাখবে। এদিকে ঝিনাইদহে মরিচের দাম তলানিতে গিয়ে পড়েছে। বাজারে মরিচ বিক্রি করে জমি থেকে উঠানোর মজুরি খরচই হচ্ছেনা। ফলে অনেক চাষি জমি থেকে মরিচ গাছ তুলে অন্য ফসল করার চেষ্টা করছেন। ভুক্তভোগি কৃষকরা জানান, গতকাল পাইকারি বাজারে সাধারনত মরিচ প্রতি কেজি ৭-৮ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। তবে মরিচের ধরন ভেদে ১৩-১৪ টাকা সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে। অথচ জমি থেকে মরিচ উঠানে প্রতি কেজি হিসাবে শ্রমিককে দিতে হচ্ছে ১০ টাকা। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানিতে মরিচ বিক্রি করতে আসা ফজলুর রহমান বলেন, প্রথম দিকে কয়েক দিন ভালো দাম থাকলেও গাছের বয়স প্রায় শেষের দিকে এখন প্রতিকেজি ৭-৮ টাকা দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই জমি থেকে মরিচের গাছ উঠিয়ে অন্য ফসল করার সিন্ধান্ত নিয়েছি। বাজারের পাইকারি মরিচ ব্যবসায়ি রুস্তম আলি বলেন, এখন বাজারের বিভিন্ন ধরনের মরিচ আসছে। কেউ কেউ গাছ তুলে কাঁচা পাকা, ফুলো মরিচ তুলে নিয়ে আসছে। সে মরিচ গুলো বাজারে চাহিদা কম, আমাদেরও কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই কম দামেই কিনতে হচ্ছে। চলতি মৌসুমে জেলার ৬ উপজেলায় ১৫শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদ হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
ঝিনাইদহ জেলার শ্রেষ্ঠ টিএসআই আমির হোসেন নির্বাচিত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ জেলার শ্রেষ্ঠ টিএসআই নির্বাচিত হয়েছেন মোঃ আমির হোসেন। গত(১৪/১১/১৯) বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনে মাসিক কল্যাণ সভায় মোঃ আমির হোসেনকে সম্মাননা ও স্বারক ক্রেষ্ট প্রদাণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিলু মিয়া বিশ্বাস (বর্তমানে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস (সদর সার্কেল) সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মহাসড়কে অবৈধ যানবহন, থ্রি হুইলার, পিকআপ, ট্রাক,আলমসাধু, নছিমন, করিমন, অবৈধ বিভিন্ন গাড়ি আটক, মটর সাইকেল এ হেলমেট বিহীন চলা সহ.বিভিন্ন যান এ মামলা ও নানাবিধ কাজে সফলতা অর্জন করায় ঝিনাইদহ জেলার শ্রেষ্ঠ টিএসআই নির্বাচিত হয়েছেন। এ বিষয় টিএসআই আমির হোসন বলেন আমাদের সুযোগ্য পুলিশ সুপার স্যার এর সঠিক দিক নির্দেশনায়, আমি চেষ্টা করেছি ভালো কাজ করার জন্য।তিনি আরো বলেন এই সম্মাননা আমার কাজের গতি আরো বাড়িয়ে দেবে। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে মহাসড়কে অবৈধ যানবহন, থ্রি হুইলার, পিকআপ, ট্রাক,আলমসাধু, নছিমন, করিমন, অবৈধ বিভিন্ন গাড়ি আটক, মটর সাইকেল এ হেলমেট বিহীন চলা সহ.বিভিন্ন যান এ মামলা ও নানাবিধ কাজে সফলতা অর্জন করায় মুস্তাফিজ সাদ্দাম শাহরিয়ার জেলার শ্রেষ্ঠ টিএসআই নির্বাচিত হয়েছিলেন।
স্কুলছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে সাইদুর জামান সিফাত নামের ১০ম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে শহরের কালিকাপুর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাইদুর জামান সিফাত শহরের উজির আলী স্কুল এন্ড কলেজের ১০ শ্রেণীর ছাত্র। সে কালিকাপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার মনোয়ার মিয়ার ছেলে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মঈন উদ্দিন জানান, শুক্রবার রাতে সিফাতের বন্ধু মোঃ মাহির সাথে একই এলাকার সুমন ও লিওন নামের দুই যুবকের মারামারি হয়। বিষয়টি তখন মিমাংসা হয়ে যায়। শনিবার সকালে মাহি ও সিফাত শহরের কালিকাপুর মোড়ে বসে মোবাইলে গেম খেলছিল। এসময় সুমন ও লিয়নসহ আরও ২ জন যুবক এসে মাহিকে এলোপাতাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত শুরু করে। সেসময় সিফাত তাদের বাধা দিলে তারা সিফাতকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে সিফাত ও মাহিকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিফাতের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ফরিদপুরে যাওয়ার পথে সিফাতের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান ওসি।
দত্তনগর খামারের বরখাস্তকৃত সেই ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর কৃষি খামারের প্রায় ৪ কোটি টাকার ধান ও গম বীজ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে গোপনে মজুদের বিষয়টি অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ জন্য দুদকের একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মজুদ রাখা ৪ কোটি টাকার ওই ধান ও গম বীজও দুদক জব্দ করেছে। দুদক যশোর সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুস সায়াদাত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুদক কর্মকর্তারা বলেন, দত্তনগর কৃষি খামারে বিভিন্ন প্রকার উচ্চ ফলনশীল শষ্য চাষ করা হয় বীজ তৈরির জন্য। পরে উৎপাদিত এই ধান ও গম পাঠিয়ে দেয়া হয় যশোরের বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে। কিন্তু দত্তনগর কৃষি খামারে উৎপাদিত ধান ও গমের প্রকৃত তথ্য গোপন করা হয়। অর্থাৎ যে পরিমাণ উৎপাদিত হয় কাগজে কলমে তার প্রকৃত চিত্র আড়াল করে কম দেখানো হয়। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে মহেশপুরের দত্তনগর কৃষি খামারে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মজুদ রাখা এ ধরনের প্রায় ৩ কোটি টাকার ১২৯ মেট্রিক টন ধান বীজের বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। দুদক সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরে এ ঘটনার জড়িত ৪ কর্মকর্তা দত্তনগর কৃষি খামারের গোকুলনগর ইউনিটের উপ-পরিচালক তপন কুমার সাহা, করিঞ্চা খামারের উপ-পরিচালক ইন্দ্রজিৎ চন্দ্র শীল, পাথিলা কৃষি খামারের উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান তালুকদার এবং যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মো. আমিন উল্লাহকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। দুদক যশোর সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুস সায়াদাত বলেন, খবর পেয়ে তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং প্রায় ৪ কোটি টাকার ধান ও গম বীজ জব্দ করেন। তিনি আরও বলেন, দত্তনগর কৃষি খামারের এই দুর্নীতির বিষয়টি তারা অনুসন্ধান করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে দুদুকের এই কর্মকর্তা বলেন, এর আগে এ ধরনের দুর্নীতি হয়েছে কি-না এবং এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত তা তারা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে সদর দপ্তর হতে প্রাপ্ত কর্মসুচি বর্হিভুত ভাবে এক’শ ২৯ দশমিক ২২ মেট্রিক টন এস এল ৮ এইচ হাইব্রিড ধান বীজ মজুদ করা হয়। এ বীজের মধ্যে ৭৫ দশমিক ০৭৫ মেট্রিক টন গোকুলনগর খামার, ৩২ দশমিক ১১ মেট্রিক টন পাথিলা খামার ও ২২ দশমিক ০৩৫ মেট্রিক টন করিঞ্চা খামার থেকে কর্তৃপক্ষের কোন অনুমোদন না নিয়ে ও চালান ব্যাতিরেকে যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে পাঠানো ও মজুদ করা হয়। এ খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর উল্লেখিত ৪ কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সচিব আব্দুল লতিফ মোল্লা সাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচারণ, চুরি, আত্মসাৎ, তহবিল তছরুপ ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এবার শৈলকুপায় পেঁয়াজের কেজি ২৮০ টাকা
ঝিনাইদহ :: দেশের অন্যান্য জেলার মত ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পেঁয়াজের বাজারে আগুনঝরা দাম। সাপ্তাহিক বাজার শনিবার ভোর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাধারণ কৃষকের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও লাভ খুঁজতে কোমর বেঁধে হাটে নেমেছে। প্রতিমন সাড়ে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সাথে দূর্গন্ধযুক্ত পঁচানষ্ট, অঙ্কুরিত পেঁয়াজের দাম ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। তবে বাজার ঘুরে বড় কোন আড়তদার, মজুৎদারের গুদামজাত করা পেঁয়াজের দেখা মেলেনি। অপরদিকে পাইকারী বাজারের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খুচরা পেঁয়াজের মূল্য। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, পৌরসভাসহ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের গ্রাম্য হাটবাজারে সম্প্রতি পেঁয়াজ ব্যবসার বাজার নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে। প্রান্তিক কৃষকের ঘরে থাকা পেঁয়াজের পরিমাণ অতিশয় নগন্য অথচ বাজারমূল্য আকাশ ছোঁয়া। ভরা মৌসুমে মূল্যবঞ্চিত কৃষকের মাঝে হতাশা আর নিয়ন্ত্রনহীন বাজার নিয়ে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের আগুন । হাটফাজিলপুর গ্রামের কৃষক আবু সাইদ জানান, পানির দরে পেঁঁয়াজ বিক্রি করেছে প্রান্তিক কৃষকেরা অথচ এখন কৃষিজীবি পরিবারে তেমন পেঁয়াজ না থাকলেও বাজারে রীতিমত হৈচৈ পড়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধিতে অধিকাংশ কৃষকের চেয়ে মজুদদারেরা বেশী আনন্দিত। তাছাড়া অনেক কৃষি পরিবারের নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করার মত পেঁয়াজও নেই বলে মন্তব্য করেন। হাতের নাগালে ছুঁই ছুই করছে নতুন মুড়ি পেঁয়াজ দু’এক সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে আসতে শুরু করবে। ইতোমধ্যেই গত হাটে কিছু মুড়ি পেয়াজ বাজারে উঠেছিলো বলে অনেক কৃষক জানিয়েছেন। শৈলকুপা বাজারের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, এ বছর প্রতিকুল আবহাওয়ার কারনে অনেক ব্যবসায়ীর গোডাউনে হাজার হাজার মন পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়েছে, দূর্ভোগে বহু আড়তদার মজুদারেরা অনেক আগেই পেঁয়াজ ব্যবসার আশা ছেড়ে অন্য কৃষি ফসলের দিকে ঝুঁকেছে পড়েছে। তবে শেষ সময়ে কিছু ব্যবসার আশা জাগলেও সরকারি নিয়ন্ত্রন না থাকায় বাজার হযবরল হয়েছে। তিনি জানান, পেঁয়াজ সংগ্রহের পর থেকেই আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় দিনের পর দিন পেঁয়াজ পচে সয়লাব হয়েছে, অনেক শ্রমিক নিয়ে পেঁয়াজ ছাটাই বাছাই করেও তেমন লাভ হয়নি বরং খরচ পড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। তাঁর মতে শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ পেঁয়াজ নানা কারনে পঁচেই নষ্ট হয়েছে। তাছাড়াও অজানা আতঙ্কে শৈলকুপা বাজারের ব্যবসায়ীগণ তাদের পেঁয়াজ ধরে রাখতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন। পাইকপাড়া গ্রামের চাষী নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক কৃষকই বীজ সংগ্রহের জন্য যে পেঁয়াজ রেখেছিল চড়া বাজার পেয়ে অনেকেই বীজ পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করছে। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কুন্ডু জানান, কৃষকের মাঠে থাকা মুড়ি পেঁয়াজ তুলতে অন্তত আরো দু’এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। বর্তমানে কৃষকের ঘরে থাকা পেঁয়াজের পরিমান কম হলেও ভাল দাম পেয়ে খুশি হয়েছেন অনেকে। শুধু পেঁয়াজ নয় সব কৃষিপন্যই যথাযথভাবে সংরক্ষনের বিষয়ে কৃষকদের আরো যতœশীল হতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।