রবিবার ● ১৭ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা হচ্ছে
রাঙামাটিতে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা হচ্ছে
ষ্টাফ রিপোর্টার :: বাংলাদেশে কোন দল সরকার গঠন করলে রাতারাতি ভোল পাল্টে সরকারী দলে ভিড়ে যায় অন্য দলের অনেক নেতাকর্মী। দলের নেতাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে অন্য দল থেকে অনুপ্রবেশকারীরা সুযোগ সন্ধানী হয়ে ওঠে। তিক্ত এমন অভিজ্ঞতা থেকে এবার অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন। তৃতীয় দফায় সরকার গঠনের পরে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সারাদেশে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা তৈরী করতে এরমধ্যে মাঠে নেমেছে কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা। দায়িত্ব পাওয়া গোয়েন্দা সংস্থা গুলোকে অনুপ্রবেশকারীদের নাম ঠিকানাসহ বেশ কিছু বিষয় খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় । তালিকায় থাকছে সুাবধাবাদীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা আওয়ামীলীগ নেতাদের নাম ও দলীয় পদবী পরিচয়। নির্দেশনা অনুযায়ী আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছেন কিংবা আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে যারা, তাদের নাম ঠিকানা ও দলীয় পরিচয় চিহ্নিত করছে এসব গোয়েন্দা সংস্থা।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় অন্য দল থেকে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী নেতা কর্মীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তারমধ্যে প্রাথমিক তালিকায় সাবেক রাঙামাটি স্থানীয় সরকার পরিষদের (বর্তমান রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ) চেয়ারম্যান বিলাইছড়ি উপজেলার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য রবীন্দ্র লাল চাকমা, রাঙামাটি জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সাবেক সংসদ সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সমঅধিকার নেতা ওয়াদুদ ভুইয়ার কাছের মানুষ বলে পরিচিত বর্তমান রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন ভুইয়া বেলাল, জেলা শ্রমিক দলের সাধারন সম্পাদক বর্তমান রাঙামাটি আসবাবপত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুর শুক্কুর, রাঙামটি কলেজের সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা পরবর্তী জেলা যুবদলের সহ সাধারন সম্পাদক বর্তমান রাঙামাটি পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন টিটু, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তৃনমুল দলের আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, সাবেক জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আবু সৈয়দ, রাঙামাটি পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের বিএনপির সাবেক সভাপতি বর্তমান ভেদভেদী ব্যবসায়ী কল্যান সমিতির সভাপতি আলি আজগর, জেলা যুবদল নেতা সাহিদ ও সাজু এছাড়া জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এর যুব সংগঠন যুব সমাজের রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মিলন ও বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের রাঙামাটি জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি রাঙামাটি জেলা জামায়াতে ইসলামের সাবেক আমীর ও রাঙামাটি স্থানীয় সরকার পরিষদের (বর্তমান রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ) সাবেক সদস্য মরহুম এএসএম শহীদুল্লাহর বড় ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন আওয়ামীলীগে যোগদান করেছেন।
জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগসহ রাঙামাটি পার্বত্য জেলার দশটি উপজেলায় আঞ্চলিক দল ও তৃনমুল পর্যায়ে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয় বিস্তারিত জানা না গেলেও কাপ্তাই, কাউখালী, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, লংগদু. বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, বরকল ও সদর উপজেলায় অনুপ্রবেশকারীরা জনপ্রতিনিধির চেয়ার দখল করে রয়েছেন। এরমধ্যে রাঙামাটি জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সাবেক সংসদ সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সমঅধিকার নেতা ওয়াদুদ ভুইয়ার কাছের মানুষ বর্তমান রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন ভুইয়া বেলালের মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র নিয়ে উভয় দল আওয়ামীলীগ-বিএনপিতে বিতর্ক রয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলার প্রবীন একজন মুক্তিযোদ্ধা জানান। এবিষয়ে মো. বেলায়েত হোসেন ভুইয়া বেলাল দ্বিমত পোষন করেন।
তবে এসব অনুপ্রবেশকারী নেতাদের বিরুদ্ধে আওয়ামীরীগের নাম ভাঙ্গিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড বা বাড়তি সুবিধা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আওয়ামীলীগে যোগদানের বিষয়ে অনুপ্রবেশকারী অধিকাংশ নেতা সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, গায়েবী মামলা, হামলা ও নানা হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে দল পরিবর্তন করেছি অন্য সুবিধা লাভের আশায় নয়।
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
বার্তা বিভাগ :: রাঙামাটিতে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা হচ্ছে শিরোনাম সংবাদের একাংশের প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন ভুইয়া বেলাল তিনি মুঠোফোনে সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, তিনি কোন সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না এবং আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী নয়। ছাত্র জীবনে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন।
রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি বলেন, তিনি একজন ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচয় দিতে স্বাছন্দবোধ করেন। তিনি আরো বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সরকারী কোন সুযোগ নিই না।
এছাড়া খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সাবেক সংসদ সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সমঅধিকার নেতা ওয়াদুদ ভুইয়ার কাছের মানুষ বলে যে তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তথ্যটি সঠিক নয়। আমি নিজের পরিচয়ে পরিচিত।
এদিকে রাঙামটি কলেজের সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা পরবর্তী জেলা যুবদলের সহ সাধারন সম্পাদক বর্তমান রাঙামাটি পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন টিটু জানান, আমরা আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী নয়, আওয়ামীলীগে যোগদানকারী।
রাঙামাটিতে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা হচ্ছে শিরোনাম সংবাদের একাংশে রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন ভুইয়া বেলাল এর নাম আসায় তথ্যগত ভুলের কারণে সিএইচটি মিডিয়া বার্তা বিভাগ দুঃখ প্রকাশ করছে।