সোমবার ● ১৮ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে বিএনপি’র ২৪ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
বিশ্বনাথে বিএনপি’র ২৪ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
ষ্টাফ রিপোর্টার:: সিলেটের বিশ্বনাথ থানা পুলিশের এস.আই দিদারুল ইসলাম বাদী হয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২৪ নেতাকর্মীর ওপর বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে আরো ২০/২৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলা নং ১৬। পুলিশ রবিবার রাতে বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাজ্জাদ আলী শিপলু ও ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন টিটুকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদেরকে আজ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার আসামীরা হলেন,বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন, ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন টিটু, সেচ্ছাসেবক দল নেতা সাজ্জাদ আলী শিপলু, বিএনপি নেতা হাজী মো. আব্দুল হাই, যুবদল নেতা আবু সুফিয়ান, বিএনপি নেতা বসির আহমদ, আহমদ নূর উদ্দিন, যুবদল নেতা সুরমান খান, বিএনপি নেতা খোয়াজ আলী, বাবুল মিয়া, পরতাব আলী, জুনেদ মিয়া, ছাত্রদল নেতা খালেদ আহমদ, মতিউর রহমান সুমন, রাসেল আহমদ, রিপন মিয়া, ময়নুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা কাওছার খান, কয়েস মিয়া, চেরাগ আলী, জিলু মিয়া, যুবদল নেতা নানু মিয়া, পাবেল আহমদ, আব্দুর রুপ।
এজাহার সূত্রে জানাগেছে, ১৫ (৩) ১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইন, সরকারি সম্পত্তি ও জনগণের চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতাসহ নাশকতা মূলক কার্যকলাপ সংগঠন করার অপরাধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। থানা পুলিশ ঝটিকা অভিযান চালিয়ে ৩জনকে গ্রেফতার করে।
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম মুসা বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ৩জন বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ট্রাকচাপায় বাইসাইকেল আরোহী নিহত
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজীতে ট্রাকচাপায় আতাউর রহমান (১৫) নামের বাইসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। সে স্থানীয় লামাকাজী ইউনিয়নের আতাপুর গ্রামের ইসমাইল আলীর পুত্র ও লামাকাজী বাজারস্থ সালমা এন্টার প্রাইজের কর্মচারী বলে জানা গেছে। আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১১টায় সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের লামাকাজী পয়েন্টে এ দূর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আতাউর রহমান সিলেট সদর উপজেলার মোল্লাগাঁও গ্রামে দোকানের মালামাল পার্সে করে বাইসাইকেলে ফিরছিন। সকাল ১১টায় সে লামাকাজী পয়েন্টে পৌছামাত্র পিছন দিক থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশা ধাক্কা দিলে তার বাইসাইকেল থেকে সড়কে পড়ে যান আতাউর রহমান। তখন সিলেট থেকে ছেড়ে আসা সুনামগঞ্জগামী একটি ট্রাক (ঢাকা-মেট্রো-ট ২০-২৩২৫) তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান আতাউর। এসময় স্থানীয় জনতা ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করেন। খবর পেয়ে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।
বিশ্বনাথে প্রাচীন হাঁস-মুরগির হাট
বিশ্বনাথ :: থৈ-থৈ আর খুখুরু-কু ডাকে এখনও সরব রয়েছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের বৈরাগী বাজারের প্রায় শত বছরের প্রাচীন হাঁস-মুরগীর হাট। সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও পূর্বের ধারাবাহিকতায় এখনও জমজমাট রয়েছে ‘মাকুন্দা নদী’র তীরে গড়ে উঠা প্রাচীন হাটটি। হাঁস-মুরগী ক্রয়-বিক্রয়ের পাশাপাশি অনেক সৌখিন মানুষ নিজেদের অবসর সময়ে বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস-মুরগী দেখে সময় কাটানোর জন্যও অনেকে বাজারে যান।
দীর্ঘকাল ধরে সপ্তাহের প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার বসে বৈরাগী বাজারের প্রাচীন হাঁস-মুরগীর হাট। যুগ যুগ ধরে চরে আসা হাটে যত হাঁস-মুরগী পাওয়া যায়, উপজেলার আর কোন বাজারে তেমনটি পাওয়া যায়না। তাই প্রতি হাট বারে দূর-দূরান্ত থেকে যেমন হাঁস-মুরগীর ব্যাপারী, খামারী ও গৃহস্থরা নিজেদের হাঁস-মুরগী নিয়ে বাজারে আসেন সেগুলো বিক্রি করার জন্য, তেমনি ক্রেতারাও আসেন দাম যাচাই-বাচাই করে নিজেদের চাহিদা মতো পছন্দের হাঁস-মুরগী ক্রয় করতে।
খামারে উৎপাদনকৃত হাঁস-মুরগীর চেয়ে প্রাচীন এ হাটে স্থানীয়ভাবে পালনকৃত হাঁস-মুরগীর সংখ্যা বেশি থাকে। আর মানুষের কাছে খামারের চেয়ে স্থানীয়ভাবে পালনকৃত হাঁস-মুরগীর কদর বেশি থাকায় হাট বারে বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশিই থাকে। এছাড়া এ হাটে হাঁস-মুরগীর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকারের পাখিও পাওয়া যায়। যদিও পাখি শিকার আইনত অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।
সরেজমিন বৈরাগী বাজারের হাঁস-মুরগির হাটে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ-শিশুরা নিজেদের পরিবারে পালনকৃত হাঁস-মুরগী-পাখি এবং ব্যাপারী-খামারীরা ফার্মে পালনকৃত হাঁস-মুরগী নিয়ে বাজারে এসেছেন। এর মধ্যে দেশী মুরগ-মুরগী, কর্ক, পাতি হাঁস, চীনা হাঁস, রাজ হাঁস ও কবুতর রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ হাঁস-মুরগী ক্রয় করতে এসেছেন হাটে। ক্রেতারা দামদর করে ক্রয় করছেন আর মনের আনন্দে তা নিজেদের কাঙ্খিত দামে বিক্রয় করছেন বিক্রেতারা। অন্যান্য বাজারের চেয়ে এই হাটে হাঁস-মুরগির দামও তুলনামূলক অনেক কম বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথ উপজেলায় যে কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী বাজার রয়েছে, এরমধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে বৈরাগী বাজার। আর প্রায় শত বছর পূর্বে বৈরাগী বাজারে মাকুন্দা নদীর তীরে স্থানীয়রা গড়ে তুলে ছিলেন হাঁস-মুরগীর হাটটি। আর সপ্তাহের প্রতি রোবিবার ও বৃহস্পতিবার বসে হাট। আর হাটের দিন দুপুর থেকে বিভিন্ন এলাকার লোকজন নিজেদের পালনকৃত কিংবা খামারের হাঁস-মুরগী-পাখি নিয়ে বাজারে আসেন ক্রয়-বিক্রয় করতে। তবে হাঁস-মুরগী ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য নদীর তীরবর্তী ‘চরবাজার’ নামে একটি স্থান নির্ধারিত আছে।
আবদুর রহিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, এ হাটে গৃহপালিত হাঁস-মুরগী বেশি পাওয়া যায় বলেই এর অন্য রকম এক ঐতিহ্য রয়েছে। ফার্মের চাইতে গৃহপালিত হাঁস-মুরগীর স্বাদই আলাদা। তাই আমি প্রায়ই খাবারের জন্য হাঁস-মুরগী ক্রয় করতে এ হাটে আসি।
বাজারে আসা বিক্রেতা গৃহিনী সেলিনা বেগম জানান, বাড়িতে পালনকৃত ৪টি মুরগী হাটে নিয়ে এসে দুটি ৪শত টাকা করে ও অন্য দুটি ৬শত টাকা করে বিক্রি করেছি। রোকসানা সুলতানা নামের আরেক গৃহিনী জানান, বাড়িতে পালনকৃত ৬টি হাঁস হাটে এনেছেন বিক্রি করার জন্য, আর এগুলো বিক্রি করা হয়ে গেলে সেই টাকা দিয়ে পরিবারের জন্য নিত্যাপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করবেন।
স্থানীয় মুরব্বী আছমত আলী নামের ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ জানান, কয়েক যুগ ধরে প্রতি সপ্তাহে দু’দিন (রবিবার-বৃহস্পতিবার) এই হাঁস-মুরগীর এ হাট বসে। এলাকার লোকজন ও ব্যাপারীরা নিয়ে আসেন হাঁস-মুরগী-পাখি। তবে বাজারে স্থানীয়ভাবে পালনকৃত হাঁস-মুরগীর চাহিদাই বেশী। তাই হাঁস-মুরগী ক্রয় করতে দূর দূরান্ত থেকেও লোকজন আসেন প্রাচীন এ হাটে।
বিশ্বনাথে রাস্তার কালভার্টের অভাবে দুর্ভোগে এলাকাবাসী
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের ৭-৮ ও ৯নং ওয়ার্ডস্থ বিশ্বনাথ-রামপাশা সড়কের কাদিপুর-ইলামেরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় সংযোগ রাস্তার মধ্যখানে একটি কালভার্টের অভাবে এলাকাবাসী রয়েছেন দুর্ভোগে। এ রাস্তা দিয়ে রামপাশা ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। এতে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয় এলাকার কৃষক ও স্থানীয় কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। রাস্তার মধ্যখানে একটি কালভার্ট না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে এলাকার কৃষক ও শিক্ষার্থীরা ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলে করে আসছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখাযায়, বিশ্বনাথ-রামপাশা সড়কের কাদিপুর নামক স্থান থেকে ইলামেরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সামন পর্যন্ত এ রাস্তাটি রয়েছে। রাস্তাটি এখনও পাঁকাকরণ হয়নি। রাস্তার মধ্যখানে একটি কালভার্ট নেই। কালভার্ট না থাকায় স্থানীয় শিক্ষার্থী ও কৃষকদের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায়। রাস্তার দুই পাশে প্রচুর ধানী জমি রয়েছে। আর এসব জমিতে চাষাবাদ করতে কৃষকদের পুহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। এ রাস্তার দিয়ে রামপাশা ইউনিয়নের কাদিপুর, দশদল, লামারচক, আজিজনগর, ইলামেরগাঁও, পুরান, আনরপুর, দশপাইকা, বিশঘর গ্রামবাসী চলাচল করেন। প্রতিদিন স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু কার্লভাট না থাকায় প্রতিনিয়তই তারা পড়ছেন মহা বিপদে। বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ইলামেরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কৃষকরা।
কাদিপুর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে এলাকার শিক্ষার্থী ও কৃষকরা যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তার মধ্যখানে একটি কার্লভাট না থাকায় আমাদের পুহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। অনেক বৃদ্ধা কৃষক এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন ঝুঁকি নিয়ে। এ রাস্তার মধ্যখানে একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্র্তপক্ষে কাছে তিনি দাবি জানান।
শিক্ষার্থী রিপা বেগম বলেন, আমি প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। কিন্তু রাস্তার মাঝখানে এসে ভয় লাগে। রাস্তার মাঝখানে কার্লভাট কিংবা ছোট একটি ব্রীজ না থাকায় আমাদের কষ্ঠ করে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করতে হয়। আমাদের দাবি আমরা যাতে সুন্দর ভাবে পড়াশোনার জন্য বিদ্যালয়ে যেতে পারি সেজন্য যাতে কার্লভাট নির্মান করা হয়।
রামপাশা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাছির মিয়া বলেন, সম্প্রতি সরকারের বরাদ্ধ থেকে ওই রাস্তায় কিছ ু মাটি ভরাট করি। যার ফলে এ রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারছেন। কিন্তু রাস্তার মধ্যখানে একটি কালভার্ট নির্মাণ খুবই জরুরী। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের আলোচনা করেছি।
একই ইউপির অপর সদস্য ইছাক আহমদ জানান, এ রাস্তার মধ্যখানে কালভার্ট নেই। সত্যি এটি একটি মরণফাঁদ। রাস্তার মধ্যস্থল হওয়া এটার দিকে কারো তেমন খেয়াল নেয়া হয়নি। আমাদের ইউপি চেয়াম্যান এবং সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ রাস্তা মধ্যখানে কালর্ভাট নেই জানানো হয়। এ রাস্তার দুটি কালর্ভাটের প্রয়োজনী বলে তিনি জানান।
এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ওই রাস্তার মধ্যখানে একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য উপজেলার সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করি।