রবিবার ● ২৪ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটির কাউখালীতে রোহিঙ্গাদের বসতি গড়ে উঠছে
রাঙামাটির কাউখালীতে রোহিঙ্গাদের বসতি গড়ে উঠছে
শফিউল আলম :: চট্টগ্রাম ও রাঙামাটি জেলার রাউজান এবং কাউখালি উপজেলার পাহাড়ী এলাকায় মায়নায়নমার থেকে আসা রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্যদের বসতি গড়ে উঠছে।
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় হলদিয়া ইউনিয়নের বৃন্দ্বনপুর, বানারস, অলির টিলা, দক্ষিন ক্ষিরাম, হলদিয়া রাবার বাগান, ডাবুয়া ইউনিয়নের মেলুয়া, রাধামধবপুর, ডাবুয়া রাবার বাগান, ৭নং রাউজান ইউনিয়নের পুর্ব রাউজান, মুখছড়ি, চিকনছড়া, ভোমরঢালা, কদলপুর ইউনিয়নের শমশের পাড়া, ভোমর পাড়ার পুর্ব পাশে জয়নগর বড়ুয়া পাড়ার পুর্বে, হজরত আশরফ শাহ মাজারের উত্তরে, পুবে, পাহাড়তলী ইউনিয়নের জগৎপুর আশ্রমের পাশর্বর্তী পাহাড়ী এলাকায় গড়ে উঠেছে রোহিঙ্গা পরিবারের বসতি।
এছাড়া রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাউখালী উপজেলায় পাহাড়ী এলাকা বেতবুনিয়া ইউনিয়নের ডিলাইট এলাকায় লোকমান চৌধুরীর খামারবাড়ী, তালতলায় কবির আহম্মদের খামার বাড়ী ও মেলুয়ায় লোকমান চৌধুরীর খামার বাড়ীতে রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্যরা পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে বসবাস করে আসছে।
রাউজানের পাহাড়ী এলাকায় বসবাসকারী রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকার ঠিকানা দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড তৈয়ারী করে রোহিঙ্গেরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে পরিচয় দিয়ে আসছে।
সরেজমিনে পরিদর্শন কালে এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে , রাউজানের ডাবুয়া ইউনিয়নের কলমপতি এলাকার মৃত কামাল ফকিরের কন্যা বাচু আকতারকে রোহিঙ্গা এক নাগরিক বিয়ে করে বিয়ের পর রোহিঙ্গা নাগরিক সাগর পথে মালয়েশিয়ায় চলে যায়। মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে রোহিঙ্গা নাগরিক তার স্ত্রী বাচু আকতারকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যায়।
রাউজানের ৭নং রাউজান ইউনিয়নের পুর্ব রাউজান মুখছড়ি এলাকায় রোহিঙ্গা নাগরিক নুর মোহাম্মদ, সুলতান আহম্মদ, রফিক এলাকার লোকজনের দখলে থাকা সরকারী খাসঁ জমি ক্রয় করে ঘরবাড়ী নির্মান করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। রোহিঙ্গা নাগরিক সুলতান আহম্মদের স্ত্রী জায়দা বেগম বলেন পুর্বে মায়নমার থেকে আসা নুরুল ইসলামের দখল করা ৮ শতক সরকারী খাসঁ জমি ২লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করে ঘরবাড়ী নির্মান করে রাউজান রাবার বাগান এলাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। জায়দা বেগম ও তার স্বামী সুলতান আহম্মদ, নুর মোহাম্মদ, রফিক ও তাদের পরিবারের সদস্য কয়েকজন চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী খুলশি এলাকায় তাদের ঠিখানা দিয়ে গত ৯ নভেম্বর ২০১৬ জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ড তৈয়ার করে। জায়দা বেগমের পিতার নাম জাতীয় পরিচয় পত্রে লিখা রয়েছে মীর আহম্মদ, মাতার নাম দয়াল খাতুন। ভোটার আইডি কার্ড নং ৭৭৭৩৪৮৫১৩৬।
রোহিঙ্গা নাগরিক সুলতান আহম্মদ, নুর মোহাম্মদ, রফিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা রাউজান ও কাউখালী পাহাড়ী এলাকায় বসবাসকারী রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্যরা অনেকেইে দেশের বিভিন্ন এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশের ভোটার আইডি কার্ড তৈয়ার করে তারা সকলেই বাংলাদেশী নাগরিক বলে পরিচয় দিয়ে এলাকায় বসবাস করছে।
গত ২০ নভেম্বর বুধবার ভোররাতে রাউজানের পুর্ব রাউজান দুর্গম পাহাড়ী এলাকার ঘোড়া শামশুর টিলা থেকে রাউজান থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান অস্ত্র ও অস্ত্র তৈয়ারীর সরঞ্জাম উদ্বার করে। অস্ত্র উদ্বার অভিযান চলাকালে পুলিশ পুলিশের তালিকাভুক্ত দুর্ধষ ডাকাত আলমকে গ্রেফতার করে। অভিযান চলাকালে দুর্ধষ ডাকাত আলম ও তার সহযোগিদের সাথে পুলিশের বন্দ্বুকযুদ্ব সংগঠিত হয় । এতে রাউজান থানার ওসি কেপায়েত উল্ল্রাহ সহ চার পুলিশ আহত হয় । অস্ত্র উদ্বার অভিযানে দুর্ধষ ডাকাত আলম ধরা পড়লে ও তার সহযোগিরা গহির জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পালিয়ে যায়। দুর্ধষ ডাকাত আলম ওতার সহযোগিদের আস্তানা রাউজানের পুর্ব রাউজান ঘোড়া শামশুর টিলার পাশে কয়েকজন রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্য বসতি গড়ে তোলেছে। রোহিঙ্গা যুবকেরা দুর্ধষ ডাকাত আলমের সাথে অস্ত্র তৈরীর কাজে জড়িত থাকতে পারে বলে আহত ওসি কেপায়েত উল্ল্যাহ ও এলাকার লোকজন ধারনা করছেন।
রোহিঙ্গারা বসতি গড়ার পর থেকে চট্টগ্রামের রাউজান ও রাঙামাটির কাউখালীতে বন উজার এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
বন বিভাগ চট্টগ্রাম উত্তর ইছামতি রেঞ্জের আওতাধিন রাউজান ঢালারমুখ বন বিভাগের ষ্টেশন অফিসার আবুদুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে বন বিভাগের পাহাড়ী জমিতে রোহিঙ্গা পরিবারের বসতি প্রসঙ্গে বন বিভাগ চট্টগ্রাম উত্তর ইছামতি রেঞ্জের আওতাধিন রাউজান ঢালারমুখ বন বিভাগের ষ্টেশন অফিসার আবুদুর রশিদ বলেন রাউজানের পুর্ব রাউজান, কদলপুর এলাকার পাহাড়ী এলাকায় বন বিভাগের পাহাড়ী জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বনায়ন করা হয়েছে। রাউজানের পাহাড়ী এলাকায় বন বিভাগের অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈয়ার করার কাজ চলছে বন বিভাগের পাহাড়ী জমিতে রোহিঙ্গা বা যে কোন কেউ অবৈধ দখল করে বসতি নির্মান করলে তা উচ্ছেদ করে বনায়ন করা হবে। ছবি : সংগ্রহিত