সোমবার ● ২৫ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় মহিলা পরিষদের সংবাদ সম্মেলন
গাইবান্ধায় মহিলা পরিষদের সংবাদ সম্মেলন
ষ্টাফ রিপোর্টার :: ‘ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, আসুন এ অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এ উপলক্ষে সংগঠনের জেলা শাখা আজ সোমবার গাইবান্ধা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে পক্ষকালব্যাপী গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের জেলা সভাপতি আমাতুর নুর ছড়া জানান, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন বিরোধী সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য প্রতি বছর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এ উপলক্ষে সারাদেশের ন্যায় গাইবান্ধায়ও ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে অপরাধ রখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, বিভিন্ন রেডিও শো, শিশুর অধিকার ও সুরক্ষা বিষয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং তরুণ-তরুণী সমাবেশ, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ে প্রশাসন, বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারসহ পেশাজীবীদের সাথে মতবিনিময়, আইনগত সহায়তা গ্রহণকারীদের সাথে কর্মশালা, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে গান, কবিতা আবৃত্তি ও আলোচনা অনুষ্ঠান। এছাড়াও মহিলা পরিষদ জেলা শাখা আগামী ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস ও ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক রিকতু প্রসাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মায়া রাণী পোদ্দার, কোষাধ্যক্ষ কানিজ ফাতেমা, লিগ্যাল এইড সম্পাদক মাহফুজা খানম মিতা, সদস্য মোহাজ্জেপা মিষ্টি, প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ মাফরুহা সুলতানা।
গাইবান্ধায় স্বপ্ন প্রকল্পের অবহিতকরণ কর্মশালা
গাইবান্ধা :: অসহায় দরিদ্র নারীদের জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে আত্মনির্ভর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘উৎপাদন ও সম্ভাবনাময় কর্মের সুযোগ গ্রহণে নারীর সামর্থ্য উন্নয়ন শীর্ষক গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আজ সোমবার স্বপ্ন প্রকল্পের অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্বপ্ন প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার বিভাগ যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে। জেলা পর্যায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে গণ উন্নয়ন কেন্দ্র।
কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব শামসুল ইসলাম, স্বপ্ন প্রকল্পের স্বপ্ন প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপক ড. কাজল চ্যাটাজী, আঞ্চলিক সমন্বয়কারী আহমেদুল কবির আকন্দ, গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোছা. রোখছানা বেগম, ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ, ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী আবু রায়হান দোলন, সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, সাঘাটা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বিপ্লব, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভীন আকতার, গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সাবু, গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান আব্দুস সালাম, গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার বিভাগের নুসরাত জাহান, বিটিভি জেলা প্রতিনিধি আবেদুর রহমান স্বপন, বাসস জেলা প্রতিনিধি সরকার শহীদুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা গৌতম চন্দ্র মোদক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুদ দাইয়ান ও ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এই স্বপ্ন প্রকল্পটি সামাজিক সুরক্ষার একটি মডেল প্রকল্প হিসেবে কাজ করবে। যাতে দরিদ্র অসহায় নারীদের জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের আর্থনির্ভর করে গড়ে তোলা যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, স্থানীয় সরকারের বিভাগ কর্তৃক পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই স্বপ্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হবে। এ দুটি উপজেলায় মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ৬১২ জন। প্রতিটি ইউনিয়নে ৩৬ জন অসহায়, হতদরিদ্র, বিধবা তালাকপ্রাপ্তা ও স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা উপকারভোগী নির্বাচন করা হবে। নির্বাচিত উপকারভোগীরা ১৫ মাসের জন্য স্বপ্ন প্রকল্পের আওতায় ওই এলাকার রাস্তাঘাট ও অন্যান্য সরকারি সম্পদ উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবেন। নির্বাচনের এক সপ্তাহ পূর্বে সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকযোগে/ঢোল সহরতের মাধ্যমে প্রচার করা হবে। নির্ধারিত তারিখে লটারির মাধ্যমে মহিলা উপকারভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সম্পন্ন হবে। নির্বাচিত উপকারভোগীদের মধ্যে ১৮ থেকে ২৮ বছরের নারীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এবং প্রশিক্ষণ শেষে তাদের চাকরিতে নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ২৯ থেকে ৪৫ বছরের নারীদের তাদের নিজেদের সক্ষমতার উপর লাগসাই প্রকল্পে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে আত্মনির্ভর করে গড়ে তোলা হবে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এবং ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। কর্মশালায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বিভাগের সরকারি কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, এনজিও কর্মী, দুটি উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধা ছাড়াও জেলার দেশের ২২টি জেলার ১০৬টি উপজেলা, ১ হাজার ৩০টি ইউনিয়নে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের মোট উপকারভোগীর সংখ্যা হচ্ছে ৬৪ হাজার ৯৮০ জন। এতে প্রকল্প ব্যয় হবে ৮৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকার প্রদত্ত ২১ লাখ এবং প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ৬৪ লাখ।
গাইবান্ধায় জমি জবর দখলের অপচেষ্টা
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের পশ্চিমকোমরনই দশানী গ্রামে আব্দুস সাত্তার মিয়ার ছেলে আপেল মাহমুদের বাড়ি সংলগ্ন অর্ধ শতক জমি সন্ত্রাসী কায়দায় জবর দখলের দীর্ঘদিন যাবত অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে প্রতিবেশী মাহাবুর রহমানসহ তার সহযোগীরা।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, এই ঘটনার জের ধরে রোববার বিকেলে একই গ্রামের আবুল কালাম ফন্দুয়ার ছেলে উক্ত মাহাবুর রহমান ও তার পিতা আবুল কালাম ফন্দুয়া, কছিম উদ্দিনের ছেলে আল আমিন, রুহুল আমিন, ফন্দুয়ার স্ত্রী মালেকা বেগমসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রসহ উক্ত জমি জবর দখল করার অপচেষ্টা চালায়। এতে বাধা দিলে উক্ত সন্ত্রাসীরা তাদের বেধরক মারপিট করে এবং গলাটিপে ধরে তাদের হত্যার চেষ্টা চালায়। এতে এক মহিলাসহ ৪ জন গুরুতর আহত হয়। আহতরা হলো- আপেল মাহমুদের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম, পলাশ মিয়া, ভাগ্নে মামুন এবং ভাবী রূপা আকতার। তাদের স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
অভিযোগে আরও জানা গেছে, এই সময় উক্ত সন্ত্রাসীরা আপেল মাহমুদের ভাবী রূপা আকতারের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে এবং তার গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া জাহাঙ্গীর আলমের পকেট থেকে একটি স্যামস্যাম মোবাইলও ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। এব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানায় আপেল মাহমুদ বাদি হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ এখনও তাদের গ্রেফতার করেনি। ফলে থানায় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং হত্যা, মারপিট, মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ তাদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে।