বুধবার ● ২৭ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » এমপি লিটন হত্যা মামলার রায় কাল বৃহস্পতিবার
এমপি লিটন হত্যা মামলার রায় কাল বৃহস্পতিবার
ষ্টাফ রিপোর্টার :: বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রয়াত এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলার রায় আগামী কাল বৃহস্পতিবার (২৮ নবেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক এর আদালতে ঘোষণা করা হবে। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের আইনজীবিদের দীর্ঘ ১৮ মাস যুক্তিতর্কের পর এই রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন বিচারক।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই হত্যাকান্ডের পর পুলিশ দুটি মামলা দায়ের করে। একটি অস্ত্র মামলা ও অপরটি হত্যা মামলা। অস্ত্র মামলায় একমাত্র আসামি ওই আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল আব্দুল কাদের খানকে ইতোপূর্বে গত ১২ জুন যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় হত্যা মামলাটির রায় ২৮ নবেম্বর বৃহস্পতিবার প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এ ঘটনায় অজ্ঞাত পাঁচ-ছয় জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করে লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী বুলবুল। তদন্ত শেষে এই হত্যা মামলায় কাদের খানসহ আট জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
স্থবির গাইবান্ধা জেলা পরিষদের কার্যক্রম : উন্নয়ন ব্যাহত
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা জেলা পরিষদের সকল কার্যক্রম ২০১৮ সাল থেকে দু’বছর যাবৎ স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে জেলা পরিষদের আওতাধীন সকল উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। অথচ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পরিষদের সদস্যরা এব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
উল্লেখ্য, জেলা পরিষদ প্রতি অর্থ বছরে সরকারি বরাদ্দ ও নিজস্ব অর্থায়নে জেলার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া প্রতি বছর দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা, শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষাবৃত্তি ও আর্থিক অনুদান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সহায়তা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। তদুপরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা, খেলাধুলার উন্নয়নে বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, দুস্থ নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও অনুদান প্রদানসহ নানা কল্যাণমূলক কাজ করে থাকে। কিন্তু গত ২০১৮ সাল থেকে শুধুমাত্র স্টাফ এবং পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্যদের মাসিক বেতন-ভাতা ও আনুসাঙ্গিক খরচ নির্বাহ ছাড়া আর কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি। দু’বছর যাবৎ উল্লেখিত খাতে অর্থ বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সহায়তা প্রদান না করায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তির দুর্ভোগসহ উন্নয়ন কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে।
এছাড়াও জেলা পরিষদের ঠিকাদারের দীর্ঘদিনের বিল, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার বিজ্ঞাপনের বিলও প্রদান করা হচ্ছে না। সম্প্রতি সড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, ভবন নির্মাণের জন্য সড়ক জনপথ বিভাগ, এলজিইডি, পৌরসভাসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুরোধে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জেলার বিভিন্ন সড়কে ২ হাজার ৪শ’ ৭০টি গাছ কাটার জন্য টেন্ডার প্রদানসহ আইনানুগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ২৮টি প্যাকেজে গাছ কাটার নিয়োগপ্রাপ্ত ঠিকাদাররা এ সমস্ত গাছের মূল্য পরিশোধ করার পরেও গাছ কাটতে না পারায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা গেছে, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে আর্থিক ব্যয় নির্বাহের ক্ষমতা, বিল পাশসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসনিক ক্ষমতা ন্যাস্ত। কিন্তু গাইবান্ধা জেলা পরিষদে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাউকে নিয়োগ দিলে তারা যোগদান করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। আবার কেউ যোগদান করলেও তিনি অন্যত্র দ্রুত বদলী হয়ে যান এবং স্বল্পকালিন অবস্থাকালিন সময়ে উল্লেখিত উন্নয়ন কার্যক্রমে অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত কোনো প্রকার কাজই করেন না। মূলত এ কারণেই উল্লেখিত সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে জনকল্যাণমূলক এই প্রতিষ্ঠানটি স্থবির হয়ে পড়েছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবর রহমান বদলী হয়ে যাওয়ার পর মূলত সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৮ সালের ১০মে পর্যন্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ হোসেন। পরে দেলোয়ার হোসেন ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত এবং মির্জা মুরাদ হাসান বেগ একই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এবং হালিমুল রাজিব ১৪ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। বাকি মাঝামাঝি সময়গুলোতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোছা. রোখছানা বেগম দায়িত্ব পালন করেন এবং এখন পর্যন্ত তিনি উক্ত পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে বহাল আছেন। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসের পর থেকে এ পর্যন্ত উক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ যারাই সংশ্লিষ্ট পদের দায়িত্ব পালন করেছেন তারা অজ্ঞাত কারণে শুধুমাত্র বেতনভাতা ছাড়া অন্য কোনো বিলেই স্বাক্ষর বা উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে আগ্রহ প্রকাশ করেন নাই। ফলে জেলা পরিষদের সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জেলা পরিষদ সুত্রে জানা গেছে।
এব্যাপারে জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল যোগদান করার পর এ পর্যন্ত শুধুমাত্র ঠিকাদারের জামানতের ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ফেরত দেয়া ছাড়া আর কোনো প্রকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করা সম্ভব হয়নি। অথচ প্রতিটি খাতের সকল প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ দু’বছর যাবত জেলা পরিষদে জমা রয়েছে।