মঙ্গলবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » প্রতিবন্ধিতা জয় করেছে বিশ্বনাথের আজম আলী
প্রতিবন্ধিতা জয় করেছে বিশ্বনাথের আজম আলী
ষ্টাফ রিপোর্টার :: আজম আলী। বয়স ২৮ বছর। বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের গড়গাঁও গ্রামে। প্রায় পাঁচ বছর আগে বাবা আলতাব আলীর মৃত্যু হয়। এরপর শারীরিক এই প্রতিবন্ধী গ্রিলের ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন। প্রায় চার বছর ধরে আজম আলীর উপার্জনেই চলছে তাঁর পরিবার।
শারীরিক প্রতিবন্ধিত্বও তাঁর এই কাজে বাধা হতে পারেনি। পায়ের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়ানোর শক্তি-সামর্থ্য নেই তাঁর। তবুও তিনি থেমে নেই। জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে সব বাধা-বিপত্তি পেছনে ফেলে বেছে নিয়েছেন জটিল ও কঠিন এই কর্মজীবন। নিজের বউ-বাচ্চা না থাকলেও মা, তিন ভাই ও দুই বোন রয়েছে। বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নকিখালি বাজারের ইউসুফ আলীর ওয়ার্কশপে গিয়ে কাজ করেন তিনি। মাসে বেতন পান তিন হাজার টাকা।
আজম আলী জানান, জন্মের পর থেকেই তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাঁর দুটি পা অচল। বাবা মারা যাওয়ার পর বাধ্য হয়ে এই কাজে যোগ দেন। প্রতিদিন সকালে কাজে যান, ফেরেন বিকেলে। প্রতিবন্ধী ভাতা আর এই কাজের টাকায় কোনোমতে সংসার চলে। মাঝেমধ্যে শরীর খারাপ থাকলে কাজ করতে পারেন না। তখন সংসারে সমস্যা দেখা দেয়। নিজের একটি দোকান থাকলে সুবিধা হতো। কিন্তু তাঁর সেই সামর্থ্য নেই বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন পরিশ্রমী এই মানুষটি। সদিচ্ছা থাকলে মানুষ অনেক কিছুই করতে পারে তার দৃষ্টান্ত দুটি পা অচল প্রতিবন্ধী আজম আলী।
আজম আলী আরো জানান, তাঁর মতো প্রতিবন্ধীরা সমাজের চোখে অবহেলিত হিসেবে বিবেচিত। তবে তিনি সমাজের চোখে বোঝা হয়ে বাঁচতে চান না। নিজের কর্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে একজন আত্মনির্ভরশীল মানুষ হিসেবে বাঁচতে চান এই সোনার বাংলাদেশে। তবে এলাকার বিত্তবানদের কাছ থেকে বা সরকারি কোনো সহায়তা পেলে তিনি নিজে ব্যবসা করার ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান।
স্থানীয় নকিখালি বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ কাওছার খান বলেন, আজম আলী প্রতিবন্ধী হলেও সমাজের বোঝা নয়। সে নিজে কাজ করে সংসার চালায়। প্রতিদিন তাঁকে কর্মস্থলে যথাসময়ে আসতে দেখা যায়। কাজের প্রতি তার কোনো অবহেলা নেই।
উপজেলার রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমরা তাঁকে প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের বলেন, আজম আলী চাইলে তাকে সরকারি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
বিশ্বনাথে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক শিক্ষিকা নির্বাচিত
বিশ্বনাথ :: বিশ্বনাথ উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩রা ডিসেম্বর) মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে বাচাই কমিটি এ তালিকা প্রকাশ করেছে। এছাড়া বিদ্যালয়, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নামও প্রকাশ করা হয়।
শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও শিক্ষিকা ঘোষণা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম. নুনু মিয়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্ণালী পাল, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন আহমদসহ প্রশাসনের নেতৃবৃন্দ।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন জানান, প্রধান শিক্ষক হিসেবে উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন মির্জারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যাদু বেন্দু পাল, গড়গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে কুলসুম, দিঘলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. আলমাছ আলী ও রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাহেদা আক্তার।
এছাড়া সিঙ্গেরকাছ (১) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোহাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিনকে শ্রেষ্ঠ সভাপতি ও মুফতিরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোজাম্মেল আলীকে শ্রেষ্ঠ কাবশিক্ষক নির্বাচিত করা হয়।
বিশ্বনাথে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টায় ছাত্রদল নেতা জুনেদ গ্রেফতার
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: মানব পাচার মামলার বাদীকে অস্ত্র দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টায় অভিযোগে থানায় দায়ের করা মামলায় সিলেটের বিশ্বনাথ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম জুনেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার নওধার গ্রামের মৃত আলকাছ আলীর পুত্র।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে থানার পিএসআই ফজলুল হকের নেতৃত্বে নিজ বাড়ি থেকে জুনেদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে গত বুধবার রাতে থানা পুলিশ উপজেলার রাজনগর গ্রামের মৃত আত্তর আলীর পুত্র আবদুল কাদির (৪০), রামপাশা (কোনাপাড়া) গ্রামের মৃত আবদুল মানিকের পুত্র আলী হায়দার মহুরী (৩৮), বিশ্বনাথ নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা আসু মিয়ার পুত্র আবুল কালাম (৩০)’কে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, রেজাউল ইসলাম রাজুর দায়ের করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত উপজেলার কাঠলীপাড়া গ্রামের মৃত চমক আলীর পুত্র রফিকুল ইসলামকে প্রধান অভিযুক্ত করাসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ ও ১০/১১ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত রেখে গত ১৬ মে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে এ মামলা দায়ের করেন।
বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তধীন রয়েছে। এ মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামসহ অপর আসামিরা বাদী (রাজু) ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রাণী করাসহ প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে আসছে।
এমতাবস্থায় গত ২৭ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নিজ বাড়িতে থাকা বাদীকে মামলার প্রথম সাক্ষী দেলোয়ার হোসেন মোবাইল ফোনে তাকে জানায় উক্ত মামলার অভিযুক্ত আলী হায়দার মহুরী ও রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত আবদুল কাদির ও আবুল কালাম যোগাযোগ করে বাদী (রাজু) ও সাক্ষী দিলোয়ার হোসেনকে অস্ত্র দিয়ে একটি মিথ্যা মামলায় জড়ানোর জন্য গত এক সপ্তাহ পূর্বে ২ লাখ টাকায় চুক্তি করেছে। সেই মোতাবেক প্রধান অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম, গ্রেফতারকৃত আলী হায়দার মহুরী ও অপর অভিযুক্ত শাহিন আহমদ তাদেরকে (কাদির ও কালাম) ১ লাখ ২০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়েছে। কিন্তু টাকা ভাগভাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে সমস্যা হওয়ায় কাদির ও কালাম অপর অভিযুক্ত আলী হায়দার মহুরীর কাছে টাকা ফেরত চায়।
বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় রামপাশা বাজারের সবুজ মিয়ার চায়ের দোকানে অভিযুক্ত কাদির, আবুল কালাম অপর অভিযুক্ত আলী হায়দার মহুরীকে ডেকে এনে বাদিকে অস্ত্র মামলায় জড়ানোর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এসময় তাদের মধ্যে কথাকাটাটি সৃষ্টি হলে সাক্ষীসহ স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে বাদী রেজাউল ইসলাম রাজুকে বিষয়টি অবহিত করলে বাদি তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তারকৃত আলী হায়দার মহুরীর কাছ থেকে বিস্তারিত জানেন। তিনি তাৎক্ষনিক বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বাদী রেজাউল ইসলাম রাজুকে মিথ্যা অস্ত্র মামলায় জড়ানোর পায়তারার কথা স্বীকার করে গ্রেফতারকৃতরা (আবদুল কাদির, আলী হায়দার মহুরী, আবুল কালাম)। এরপর রাজু মানব পাচারকারী রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরোও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার অপর আরেক অভিযুক্ত হলেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী (চেরাগী) গ্রামের সৈয়দ আলীর পুত্র শাহিন আহমদ (৩০)।