শুক্রবার ● ৬ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » নওগাঁ » শীতের আগমনীবার্তায় ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ তৈরি কারিগরদের
শীতের আগমনীবার্তায় ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ তৈরি কারিগরদের
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: ভোরের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল আর সবুজ ঘাসের ডগায় ছড়িয়ে পড়া শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে নওগাঁর আত্রাইয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে শীত নিবারণের উপকরণ লেপ-তোষক তৈরি। উপজেলা সদরসহ প্রতিটি এলাকার কারিগররা শীত জেকে বসার আগেই এখন লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পারকরছেন।
ঋতু বৈচিত্রে শীত মানেই প্রশান্তির ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ঋতু। উপজেলা জুড়ে শীতের অনেকটা আমেজ শুরু হয়েছে। ভোররাতে হালকা ঠান্ডা আর সকালের মৃদুু শীত শীত ভাব বলে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে শীতের আগমন বার্তা। সেই সাথে ভোরের মিষ্টি রোদে মাঠের সবুজ ঘাসের গায়ে লেগে থাকা শিশির বিন্দুর ঝলকানি শীতের সকালের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে আত্রাইবাসীকে।
আমাদের দেশ ৬ ঋতুর বাংলাদেশে শীতের আগমনী বার্তা শীত কালে হওয়ার কথা থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তা ঋতুর সাথে তাল মিলছে না। গ্রাম বাংলায় আজও প্রবাদ আছে আশ্বিনে গা করে শিনশিন। কিন্তু প্রকৃৃতির লীলা খেলায় কার্তিক মাসের শেষ ভাগে সকাল হলেই ঘন কোয়াশার আচ্ছন্ন আর শীতের আমেজ দেখা যায়। আবার সূর্য উঠার কয়েক ঘন্টার পরেই রোদের তাপে শীত কোয়াশা দুর হয়ে গরমে ঘাম ঝড়ছে এই এলাকার মানুষের। এদিকে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে প্রায় সারা রাত ধরেই মাঝারী ধরণের শীতের কারণে অনেক বাসা-বাড়িতে শীত নিবারণের জন্য হালকা কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু হয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশু ও বৃদ্ধদের শীতজনিত নানা ধরণের রোগের প্রভাব দেখা দিয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কনকনে শীত জেকে বসার আগেই তা মোকাবেলা করার জন্য অধিকাংশ হাট বাজারের লেপ তোষকের কারিগর ও পাড়া-মহল্লার মানুষ বাড়িতে বাড়িতে লেপ-তোষক তৈরি করছে। দিন যতই গড়াচ্ছে শীত ততই বেশি পড়ার আশংকায় উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষেরা নতুন নতুন লেপ তৈরি করছে। লেপ তৈরির কারিগররা শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে অর্ডার নিলেও যথা সময়ে সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। লেপ-তোষক অর্ডার দিতে আশা মানুষের তারাহুরার কারণে উপজেলার বান্ধাইখাড়া,আহসানগঞ্জ,মির্জাপুর-ভবানীপুর হাট, নওদুলি বাজারের শোরুমের ফাঁকা জায়গায় ক্রেতাদের উপস্থিত আর কারিগরদের ধুনুক দিয়ে তুলা ফাটানোর সরগরমেই যেন বলে দিচ্ছে লেপ-তোষক তৈরির ধুম পড়েছে।
আগমনী শীতের কারণে তুলার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাশ্ববর্তী রানীনগর উপজেলার ত্রিমোহনী এলাকায় ৫টি তুলার মিলে উৎপাদিত মানসম্পন্ন তুলা দোকানীদের কাছে সরবরাহ করতে তারা হিমশিম খাচ্ছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি শিমল তুলা ২শত ৭০ টাকা থেকে ২শত ৯০ টাকা, মিলের তুলা ৪৫ টাকা, কারপাস তুলা ১শত ৫০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রেণী ভেদে তুলার দাম মিল মালিকেরা বেশি নিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার ভবানীপুর বাজারের লেপ-তোষক তৈরির কারিগর ছাইদুল ইসলাম জানান, আমাদের পার্শ্ববর্তী উপজেলায় তুলার মিল স্থাপনের পর থেকে আমাদের ব্যবসার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। তুলা, কাপড়, সুতা ও অন্যান্য উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ৪/৫ হাত মাপের মিলের তুলা দিয়ে তৈরি লেপ ১ হাজার ৫০ টাকা এবং তোষক ৮শত ৫০ টাকার মত খরচ পড়ে।