শুক্রবার ● ৬ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে রোগী ও স্বজনরা দালালের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে রোগী ও স্বজনরা দালালের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা
ঝালকাঠি প্রতিনিধি ::ঝালকাঠি ১০০ শয্যা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনেরা দালালের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মূল ফটক থেকে ভেতরের ওয়ার্ড পর্যন্ত পুরো হাসপাতালজুড়ে দালালদের অবাধ বিচরণ ও আধিপত্য বলে অভিযোগ রোগী ও স্বজনদের।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের ভাষ্য, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক,ডায়াগনস্টি সেন্টার ও রোগনির্ণয়কেন্দ্রের নিয়োগ করা এসব দালালের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে হাসপাতালটির স্বাস্থ্যসেবা। মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের অভিযানে দালালের আনাগোনা কিছুটা কমলেও কয়েকবছর থেকে তা আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
২০১৭ সালে র্যাব-৮ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. গাউছুল আজমের নেতৃতে ঝালকাঠির বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছিলো। তখন সদর হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ৯ নারী দালালকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছিলো।
এই দালালরা ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল থেকে রোগী বাগিয়ে নেয়ার কাজে জড়িত। এরা হাসপাতালে আসা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য শহরের স্কায়ার ক্লিনিক, বানী ডায়াগনস্টিক,মৌমিতা ও মমতাজ ডায়াগনস্টিকসহ বিভিন্ন ডায়াগনস্টিকে নিতে প্রলুদ্ধ করে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের মূল ফটক, জরুরি বিভাগের ভেতরে-বাইরে, বহির্বিভাগে চিকিৎসকদের প্রায় প্রতিটি দরজার সামনে ও আন্তর্বিভাগের সবকটি ওয়ার্ডেই দালালদের অপতৎপরতা।
জেলা শহরের পুরাতন কলাবাগান এলাকার মুনিরা বলেন, তাঁর এক নিকট আত্মীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালে প্রতিটি পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও দালালেরা তাঁকে বাইরের রোগনির্ণয়কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার জন্য প্রভাবিত করেন। এধরনের একই অভিযোগ অনেকের।
রোগী ও স্বজনেরা বলেন, দালালেরা প্রথমে নিজেদের হাসপাতালের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। তাঁরা হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কথা বলে রোগী ও স্বজনদের উন্নত চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। রোগীদের হাসপাতালের যন্ত্রপাতি অচল ও নিম্নমানের বলে বেসরকারি রোগনির্ণয়কেন্দ্রে নিয়ে যান। হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীর সঙ্গেও দালালদের সখ্যতা রয়েছে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডাক্তার মো.আবুয়াল হাসান বলেন, সিভিল সার্জন মহোদয়ের পরামর্শে হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছি। প্রশাসনের পাশাপাশি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলে দালালদের অপতৎপরতা বন্ধ হবে।