বুধবার ● ১১ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » অবৈধ ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ প্রশাসন নির্বকার
অবৈধ ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ প্রশাসন নির্বকার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটা আছে ১০টি। এ সব ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য ৬ লাখ মন কাঠ পোড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৩ টি ফিক্সড চিমনি’র ভাটাতেও পুড়বে ৩ লাখ মন কাঠ। আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যে এই সকল ভাটাগুলো কাঠ মজুদ করেছে এবং তা জ্বলানী হিসেবে ব্যবহার শুরু করেছে ভাটা মালিকরা। অথচ ইটের ভাটায় কাঠ পোড়ানো যাবে না, সরকারের এমন কঠোর আইন রয়েছে। সরেজমিন বেশ কয়েকটি ভাটা ঘুরে দেখা গেছে শত শত মন কাঠ মজুদ করা রয়েছে। ভাটার চিমনিতে ধুয়া বের হচ্ছে, আর পুড়ছে কাঠ। মহেশপুরের নেপা মোড়ে রয়েছে সোহাগ ব্রিকস্। ব্যারেল চিমনি’র এই ভাটার চারিদিকে কয়েকশত মন কাঠ রয়েছে। শ্রমিকরা জ্বালানী হিসেবে এই কাঠ ব্যবহার করছেন। একই এলাকায় রয়েছে মাছুম ব্রিকস্, সেখানেও কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। খোসালপুরে রয়েছে ব্যারেল চিমনি’র ভাই ভাই ব্রিকস্, তারাও পোড়াচ্ছেন কাঠ। ব্যারেল চিমনি’র আরো কয়েকটি ব্রিকস্ রয়েছে। তারাও ব্যাপক হারে কাঠ মজুদ করেছে। স্থানিয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নস্তি গ্রামে শাকিল ব্রিকস্, শ্যামকুড়ে এস.বি.এম ব্রিকস্, গাড়াবাড়িয়া এলাকায় রিপন ব্রিকস্, কুসুমপুর এলাকায় এম.এ.আর ব্রিকস্ কর্তৃপক্ষও প্রতিদিন শত শত মন কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। মহেশপুরে তিনটি ফিক্সড চিমনি’র ভাটা রয়েছে। যার মধ্যে জুয়েল ভাটায় প্রচুর পরিমানে কাঠ মজুদ দেখা গেছে। একই ভাবে যাদবপুরের বাহার ব্রিকস্ ও পদ্মপুকুরের রাফি ব্রিকস্ এ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। এ সকল ভাটার কোনো অনুমোদন নেই বলে জানিয়েছেন ভাটা মালিকদের একটি সুত্র। তাদের ভাষায় জিকজ্যাক ভাটা ছাড়া অন্য কোনো ভাটার অনুমোদনের সুযোগ নেই। সরকার ব্যারেল বা ফিক্সড চিমনি’র কোনো ভাটার অনুমোদন দিচ্ছে না। ভাটা মালিকদের একজন জানান, তারা জিকজ্যাক ভাটা পরিচালনা করেন। এই ভাটায় কয়লা ব্যবহার হয়ে থাকে। জিকজ্যাক ভাটায় ইট পোড়ানোর খরচ একটু বেশি হওয়ায় অনেকে করতে চান না। সুত্র জানায় ব্যারেল বা ফিক্সড চিমনি’র ভাটার চেয়ে জিকজ্যাক ভাটায় ইট পোড়াতে তাদের ইট প্রতি ২ টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়। এতে তারা ব্যবসায়ী ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। কম টাকায় ইট তৈরী করে তারা কম টাকায় বিক্রি করছেন, আর তারা ওই টাকায় বিক্রি করতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। ভাটাগুলোতে ইট পোড়ানোর সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি ভাটায় এক বছরে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার মন কাঠ পুড়বে। এই হিসাবে ব্যারেল চিমনি’র ১০ ভাটায় পুড়বে প্রায় ৬ লাখ মন কাঠ। আর তিনটি ফিক্সড চিমনি’র ভাটায় পুড়বে আরো ৩ লাখ মন মাঠ। এ হিসাবে এ বছর মহেশপুরে অবৈধ ১৩ ভাটায় প্রায় ৯ লাখ মন কাঠ পোড়ানো হবে। ভাটায় কাঠ সরবরাহ করেন গোলাম সরোয়ার জানান, সারা বছর তারা ভাটা মালিককে কাঠ দিয়ে থাকেন। গাছ কাটা ক্ষতিকর জেনেও জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে তারা এই কাজ করেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে র্যাডো ব্রিকস্ এর মালিক আব্দুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, শুধু কাঠ নয় মাঝে মধ্যে ময়লাও পুড়িয়ে থাকি। এভাবে কাঠ পোড়ানো ঠিক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন সবাই করছে তাই তিনিও করছেন। ফিক্সড চিমনি’র জুয়েল ভাটার মালিক মশিয়ার রহমান জানান, আগামী বছর তিনি জিকজ্যাক ভাটা করবেন। এ বছর এভাবে চালানো ছাড়া উপায় নেই। বিষয়টি নিয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সুজন সরকার জানান, দ্রুত এ বিষয়ে তারা ব্যবস্তা গ্রহন করবেন।
প্রসাধনীতে বাজার সয়লাব, ক্রেতারা হচ্ছে প্রতারিত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের বিভিন্ন বাজারের সমস্ত দোকান গুলোতে নিম্নমানের ত্বক ফর্সাকারী প্রসাধনীসহ বিভিন্ন প্রকারের নাম সর্বস্ব প্রসাধনিতে সয়লাব হয়ে গিয়েছে। তবে এসব প্রসাধনীর কোনটা আসল, কোনটা নকল তা চেনার উপায় নেই। আর মান নিয়ে তো প্রশ্ন আছেই। স্বল্পসময়ে ‘সুন্দরী’ হওয়ার বাসনায় রাতারাতি ত্বকের পরিবর্তন করার তাড়নায় নারীরা এসব প্রসাধনী ব্যবহার করে শুধু ঠকছেনই না, ত্বকের ক্ষতিও করছেন। তবে এ বিষয়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা একে অপরকে দায়ী করেছেন। এতে করে রীতিমত ক্রেতারা হচ্ছে প্রতারিত। ঝিনাইদহের বারোবাজারের বাসিন্দা এমএম কলেজে অনার্সের ছাত্রী সুমাইয়া নিদ্রা জানান, বিদেশি এক ক্রিম দেখে আগ্রহ নিয়ে কিনেছিলাম মেদ কমানোর জন্য। দোকানদার বলছিল, তিন মাসের মধ্যে স্লিম হওয়া যাবে, না হলে পণ্য ফেরত নেবে। কিন্তু কাজতো হয়নি। পরে জেনেছি সেটা দেশি পণ্য। এদিকে বিদেশি বলে দেশি পণ্য বিক্রি করেন অনেক দোকানদার। এ বিষয়ে এক দোকানদার বলেন, দেশি পণ্য বিভিন্ন কোম্পানি দিয়ে যায়, বাইরেরগুলো ব্লাকের (চোরাইভাবে) মাধ্যমে কেনা হয়। পণ্যের প্যাকেটের গায়ে উৎপাদিত দেশের নাম লেখা থাকে। ক্রেতা যদি না দেখেন; এর দায়তো দোকানদারের না। ব্যবসায়ী ইকরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা জেনেবুঝে খারাপ পণ্য ক্রেতাদের কেন দিব? বরং বিভিন্ন পার্লারে, মেলায় কম দামে নিম্নমানের ও মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রি হয়। ক্রেতারা অনেক সময় একটার সাথে আরেকটা ফ্রি পাওয়ার জন্য সেগুলো ক্রয় করেন। ফলে ত্বকে সমস্যা হলে দোষ দেয় আমাদের।’ অন্যদিকে, দেশি নাকি বিদেশি কোন পণ্যের চাহিদা বেশি এ বিষয়ে এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা দেশি-বিদেশি সব পণ্যই আনি। যে কাস্টমার যেমন চায় তেমন বিক্রি করি। মানের প্রশ্নে বললেন, অবশ্যই বিদেশি জিনিসের মান ভাল। একই জিনিস দেশে তৈরি করা হলেও মান সমান হয় না। জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত প্রসাধনীর কারখানা রাজধানী ও তার আশপাশে। যদি জানা যায় যশোরে উৎপাদন করা হচ্ছে তবে আমরা তদারকি করতে পারি। তবে আমরা মাঝে মধ্যে বাজারগুলোতে অভিযান পরিচালনা করি। অনুমোদন ছাড়া পণ্য পেলে জরিমানা আদায় করা হয়। পাশাপাশি সচেতনতামূলক কাজ করি।’