বুধবার ● ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে মাঠের পর মাঠ সর্ষে চাষ
ঝিনাইদহে মাঠের পর মাঠ সর্ষে চাষ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: দক্ষিণের জেলা ঝিনাইদহের ছয় উপজেলার মাঠের পর মাঠ সর্ষে চাষ হয়েছে। এবার কৃষক ও সংশ্লিষ্ট অফিস বাম্পার ফলনের আশা করছেন। দেশের ঋতু পরিক্রমায় হেমন্ত ও শীত ঋতুতে মাঠে মাঠে এই সরিষার চাষ হয়ে থাকে। ফলে এ জেলায় চাষ হওয়া সরিষা দেশের মোট চাহিদার বড় একটি অংশ পুরণে ভূমিকা রাখে বলে জেলার কৃষি অফিস জানিয়েছে।
এ অঞ্চলের প্রত্যান্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ সরিষা ফুলের অপূর্ব হলুদ শোভার চোখ জুড়ানো দৃশ্য আর মন মাতানো গন্ধে প্রকৃতির সৌন্দর্য যেমন বাড়িয়ে দিয়েছে। ঠিক তেমনি অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার হলুদ স্বপ্নে বিভোর এ অঞ্চলের কৃষকরা। চলতি মৌসুমে এ জেলায় ৩ হাজার ৩৩১ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হলেও চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর। কৃষকরা এখনো সরিষা চাষ করছে। ফলে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার বেশি সরিষা চাষ হবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি অফিস। গত মৌসুমে ঝিনাইদহে ৩ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে। ওই বছর ফলন হয়েছিল ৪ হাজার ৫৬ মেট্রিক টন সরিষা। জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আমন ধান উঠার পর ইরি বোরো ধান রোপনের আগে জমি অলস পড়ে থাকে। এ সময়ে শরিষা চাষ করা হয়। ফলে একদিকে যেমন তেলের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনৈতিকভাব লাভবান হয়, অন্যদিকে জমিতে জৈব সারের ঘাটতি পুরণে বিরাট ভূমিকা রাখে। এছাড়া জেলার কালীগঞ্জে অবস্থিত অন্যতম ভারি শিল্প মোবারকগঞ্জ চিনিকল। এসময় মিলটির আখ রোপন মৌসুম। ফলে কৃষকরা আখ রোপনের পর ওই জমিতে সরিষা চাষ করে থাকে। ফলে একই জমিতে আখের সাথে সরিষা চাষের বাড়তি একটি সুযোগ পেয়ে থাকে কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, গত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে সর্ষে চাষ বাড়ছে। উচ্চ ফলনশীল সরিষা ও আবাদ ভালো হওয়ায় গত বছরের থেকে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। আমন ধান কাটার পর মাঠ ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় জমি পড়ে থাকে। এসময় সরিষা চাষ করা হয়। সরিষা তুলে আবার বোরো ধান আবাদ করা যায়। ফলে প্রতিবছরই এ অঞ্চলের কৃষকরা সরিষা চাষ করে থাকে।
ঝিনাইদহে এবারই প্রথম সড়ক সংস্কারকাজে ৩ বছরের গ্যারান্টি
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে ৩ বছরের গ্যারান্টি দিয়ে সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার শুরু হয়েছে। ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কসহ এ জেলার অন্তত ৫টি মহাসড়কের মেরামত, মজবুতিকরণ এবং সংস্কারের কাজ শেষ করা হবে। এবারই প্রথম সড়ক সংস্কারকাজে ৩ বছরের গ্যারান্টি থাকছে। এর মধ্যে সড়কের কিছু হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা ফের সংস্কার করে দেবে। অন্য দিকে জেলা শহরের ধোপাঘাটা ও ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের বড়দা ব্রিজ এবং বিভিন্ন সড়কের ১৮টি কালভার্ট নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সে গুলো যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, এ জেলায় ৪০৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ৫টি জাতীয়, দুটি আঞ্চলিক এবং ১১টি জেলা সড়ক রয়েছে। গেল বর্ষায় ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের ১৭ কিলোমিটার এবং মাগুরা-ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের ৪০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। চলতি বছরের নভেম্বর মাসের শেষ দিকে ঝিনাইদহ-কুষ্ঠিয়া মহাসড়কের আলহেরা বাসস্ট্যান্ড থেকে হামদহ-আরাপপুর, ভাটই বাজার, গাড়াগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডসহ ৯ কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। এ সড়কটি রাজধানীসহ উত্তরাঞ্চলের সব জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেছে। জেলা প্রশাসনসহ এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি মেরামত ও সংস্কারের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এএমসি ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকায় সড়কটির কাজ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদ মনসুর বলেন, পদ্মা সেতুতে যে পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে একই পাথর আমরা হামদহ-আরাপপুরসহ ঝিনাইদহ-কুষ্ঠিয়া সড়কের ৯ কিলোমিটার সংস্কার কাজে ব্যবহার করছি। এ সড়ক পদ্মাসেতুর মতো মজবুত এবং টেকসই হবে বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, মোংলা বন্দরের মালামাল পরিবহনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার কাজ শেষ হলে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর এবং ঝুঁকিমুক্ত হবে। ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের বড় একটি অংশ জেলা শহরের মধ্যভাগ দিয়ে গেছে। এ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে মেরামত ও সংস্কারের দাবি করে আসছিলেন পৌরবাসী। কাজ সঠিক ভাবে শেষ হলে পৌর এলাকার সৌন্দর্য বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউর হায়দার জানান, বেইজ টাইপ-১ দ্বারা ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের কয়েক খ-ের ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন অংশের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায় ক্রমে আংশিক মজবুতিকরণ, মেরামত ও বিটুমিন ওয়ারিং কোর্সের কাজ শুরু করানো হবে। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি মানসম্মত এবং টেকসই করার লক্ষ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৩ বছরের গ্যারান্টি বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা জামানত রাখা হয়েছে। মেরামত কাজ শেষ হওয়ার ৩ বছরের মধ্যে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে নিজ দায়িত্বে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কে মেরামত করে দিতে হবে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।
কালীগঞ্জে নারীকে শ্লীলতাহানি, থানায় মামলা আটক ১
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিবাহিত এক নারীকে শ্লীলতাহানি করায় রাজন হোসেন (২০) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে তাকে আটক করা হয়। আটক রাজন উপজেলার কাশিপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে। কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা: মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, গত ১২ ডিসেম্বর বুধবার রাতে কাশিপুরের একটি ওয়াজ মাহফিলে বিবাহিত এক নারীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে তিন যুবক। ১৫ ডিসেম্বর রাতে ওই নারী বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজনকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।