সোমবার ● ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ধর্ম » চাটমোহরে বড়দিন উদযাপনে চলছে নানা প্রস্তুতি
চাটমোহরে বড়দিন উদযাপনে চলছে নানা প্রস্তুতি
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: পাবনার চাটমোহর যীশু খ্রীস্টের জন্মতিথি ‘বড়দিন’ উদযাপনকে সামনে রেখে খ্রীস্টান পল্লীতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। উপাসনালয় সহ বাড়ি আলোকসজ্জা, গোশালা তৈরী, ক্রিস্টমার্স ট্রি সাজানো সহ নানা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ১৫ টি গ্রামের খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। যিশু খ্রিষ্টের বানী জগতে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হোক, সবার মাঝে ভাতৃত্ব মিলন বজায় থাকুক-এমন প্রত্যাশা পুরোহিতদের। বড়দিন উৎসব শান্তিপূর্ন উদযাপনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। চাটমোহরে এবার ১১টি গীর্জায় বড়দিনের প্রার্থণা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।দুই হাজার বছর আগে বেথেলহেমের এক গোশালায় মাতা মেরির গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন যিশু খ্রীস্ট। সেই থেকে প্রতিবছর ২৫ ডিসেম্বর সারাবিশ্বের খ্রীস্ট ধর্মাবলম্বীরা মহাসমারোহে পালন করেন যিশু খ্রীষ্টের জন্মদিন। যিনি মানুষকে দেখিয়ে ছিলেন মুক্তি ও কল্যাণের পথ। সেই যিশু খ্রীষ্টের জন্মতিথি ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপনে চাটমোহরে ১৫ টি গ্রামে এখন উৎসবের আমেজ। খ্রীস্টান পল্লীতে চলছে নানারকম প্রস্তুতি। গীর্জা গুলো সাজানো হচ্ছে নানা রং বেরংয়ের সাজে। এছাড়া বাড়িঘর আলোকসজ্জা, গোশালা তৈরী, ক্রিস্টমার্স ট্রি সাজানোসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। আল্পনার রঙে গীর্জা ও বাড়ির আঙিনা সেজেছে নতুন সাজে। স্বজনদের সাথে বড়দিনের আনন্দ ভাগাভাগি করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ইতিমধ্যে বাড়িতে এসেছেন কর্মজীবি মানুষ। বড়দিন ঘিরে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে বাড়ির গৃহিনীদের ব্যস্ততাও কম নয়। বড়দিন ঘিরে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে বাড়ির গৃহিনীরা বাড়িঘর আলোকসজ্জা আর পিঠাপুলির আয়োজন করেছেন। তাদের প্রত্যাশা সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ন পরিবেশে উদযাপন করবেন শুভ বড়দিনের উৎসব।
চাটমোহর মথুরাপুর ও ভাদড়া গ্রামের মালতী কস্তা ও মার্টিন গোমেজ জানান, বড়দিন উপলক্ষ্যে আমাদের প্রত্যেকের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। সেকারণে আমরা সাধ্যমতো প্রত্যেক বাড়িতে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা করেছি। আল্পনা আঁকা হয়েছে বাড়ির আঙিনা, দেয়াল সহ বিভিন্ন স্থানে। প্রভু যিশু খ্রিস্ট বেথেলহামের যে গোশালায় জন্মেছিলেন, তার আদলে প্রত্যেক বাড়িতে গোশালা স্থাপন ও সেটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
রিনা রোজারিও বলেন, বড়দিনের আনন্দ ভাগ করে নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে এসেছেন। আমরা ঘর সাজিয়েছি, ক্রিস্টমাস ট্রি সাজিয়েছি, গোশালা তৈরী করেছি। অতিথিদের জন্য পিঠাপুলি, পায়েশসহ বিভিন্ন খাবার তৈরী করেছি। বড়দিন ঘিরে আমরা সপ্তাহব্যাপী অনেক রকমের আয়োজন করা হয়েছে। এসব আয়োজনের মধ্যে নগর কীর্তন, বড়দিনের উপাসনা, কেক কাটা, পিঠা পর্ব, প্রীতিভোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। আমরা আশা করি প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ন পরিবেশে আমরা এবারের বড়দিনের উৎসব উদযাপন করতে পারবো।
চাটমোহরের মথুরাপুর ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদা দিলীপ এস কস্তা বলেন, আমাদের পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং অন্তরের অন্ধকার দুর করে আলোর পথ দেখানোর বানী নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন যিশু খ্রিষ্ট। তিনি আরো বলেছেন, মানুষে মানুষে মিলন, শান্তি যেন স্থাপিত হয় গোটা বিশ্বে। ভালবাসার মধ্য দিয়ে যাতে সেই শান্তি স্থাপন করতে পারি সে লক্ষ্যে এবার বড়দিন উদযাপিত হবে।
চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দিন বলেন, আসন্ন বড়দিন শান্তিপূর্ন পরিবেশে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে বড়দিন উদযাপন করতে পারে সেজন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সকল চার্চে, গীর্জায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকি পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। পাশাপাশি আগাম তথ্য পাওয়ার জন্য সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে।