সোমবার ● ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের মানববন্ধন
গাইবান্ধায় ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের মানববন্ধন
গাইবান্ধা :: ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়, লটারীর নামে কৃষকদের সঙ্গে প্রহসন বন্ধ, ঘুষ ছাড়া সামাজিক সুরক্ষার কার্ড এবং শীতার্ত অসহায় মানুষদের পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র প্রদানের দাবিতে আজ সোমবার সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট গাইবান্ধা সদর উপজেলার উদ্যোগে গাইবান্ধা শহরের ডি.বি রোডে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কৃষক ফন্ট্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং গাইবান্ধা জেলা বাসদ সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী, কৃষক নেতা সুকুমার চন্দ্র মোদক, এন্তাজ আলী, নুরুল আমিন, আফরোজা বেগম প্রমুখ। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম গাইবান্ধা জেলার আহবায়ক ইসরাত জাহান।
মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন, সরকার লটারীর মাধ্যমে ধান কেনার নামে কৃষকদের ঠকাচ্ছে। কৃষিবিদদের মতে, এবার সারা দেশে প্রায় আড়াই কোটি মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদিত হয়েছে। সরকার আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মাত্র ৬লাখ মেট্রিক টন। যা খুবই নগণ্য। বক্তাগণ প্রত্যেক কৃষকদের কাছ থেকে তার উৎপাদিত ধানের শতকরা ৩০ ভাগ ক্রয় করার দাবি জানান। তারা বলেন, এবারের বাজেট ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে প্রতি ইউনিয়নের জন্য ১ কোটি করে টাকা বরাদ্দ করলে সব ইউনিয়নেই সরকারি ক্রয় কেন্দ্র এবং খাদ্য গুদাম নির্মাণ করা সম্ভব। তারা আরও বলেন, দেশের ১০টি দরিদ্র জেলার মধ্যে গাইবান্ধা একটি। এই জেলার অসহায় শীতার্ত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র এবং গ্রামীণ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিধিদের বিচার দাবি করেন। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সদর ইউএনও’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি ও কার্ড বঞ্চিত প্রায় দুই শতাধিক দুঃস্থ, বয়স্ক, বিধবাদের নামের তালিকা প্রদান করা হয়।
নিয়োগ বাণিজ্যে ২০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা শহরের উত্তর ধানঘড়া সরকারপাড়ায় অবস্থিত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিষ্টিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুর রশিদ সরকারকে বেআইনীভাবে সভাপতি পদ থেকে বহিস্কার এবং নতুন কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া কমিটির প্রথম সহ-সভাপতি ও নির্বাহী সচিব ওই সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে বেআইনীভাবে জাহানারা বেগমকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করে। ওই প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে উক্ত বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে ২২ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এব্যাপারে হাইকোর্টে গত ২৪ অক্টোবর রিট পিটিশন (নং ১০৪০৩/১৯) দায়ের করলে বিচারপতি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন। চলতি বছরের ২৪ নভেম্বরের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করলেও নির্দেশকে উপেক্ষা করে বহাল তবিয়তে উক্ত অবৈধ কমিটি ও প্রধান শিক্ষক যথারীতি দায়িত্ব পালন করছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বি মিয়া ও সংরক্ষিত আসনের এমপি অ্যাড. উম্মে কুলছুম স্মৃতির সুপারিশে উত্তর ধানঘড়া সরকারপাড়ায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিষ্টিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করা হয়। বিদ্যালয়টির শুরু থেকে শহরের পশ্চিমপাড়ার আইয়ুব আলী সরকারের ছেলে মো. আব্দুর রশিদ সরকারকে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত করে জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপ-পরিচালকের অনুমতিক্রমে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। সেই থেকে সভাপতি হিসেবে আব্দুর রশিদ সরকার সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বিদ্যালয়টি এমপিওভূক্তি কাজের জন্য আব্দুর রশিদ ঢাকায় গমনকালে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ তার ব্যাগটি হারিয়ে যায়। এব্যাপারে ২০১৮ সালের ১০মে সদর থানায় একটি জিডি (৫১৩/১৮) করা হয়। এই সুবাদে কমিটির ১নং সহ-সভাপতি ও নির্বাহী সচিব ঈর্ষান্বিত হয়ে আব্দুর রশিদের অজান্তে নির্বাহী কমিটির সভাপতি পদ থেকে তাকে নিয়ম বর্হিভূতভাবে বাতিল করেন।
এছাড়া বিদ্যালয়ের হারিয়ে যাওয়া কাগজপত্রের পরিবর্তে নতুন কাগজপত্র প্রস্তুতির অনুমোদনের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে আবেদন করেন। আবেদনের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় উক্ত প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগমসহ সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক, উপ-পরিচালক গাইবান্ধা, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাইবান্ধাকে বিবাদী করে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। যা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, উপজেলা সমাজসেবা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়ে অবগত করেন।
গাইবান্ধায় কিশামত বালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের কিশামত বালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন তোড়ন ও আলোক সজ্জার মধ্য দিয়ে আজ সোমবার নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পবিত্র কোরআন তেলায়াত, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, কেক কাটা, সহকারি শিক্ষক কম নৈমিত্তিক ভোগ করায় সম্মাননা, শ্রেষ্ঠ মা’কে সম্মাননা, বিদায়ী শিক্ষার্থী ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সার্বিক সহযোগিতায় ও শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন কমিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বর্ষপূতি উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে বিদ্যালয় সংলগ্ন মোল্যাবাজারসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শেষে বিদ্যালয় চত্বরে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. শামীম প্রামানিক বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. হোসেন আলী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি সদর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আরজুমান আরা গুলেনুর, বিশেষ অতিথি সহকারি শিক্ষা অফিসার মো. মাসুমুল ইসলাম, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম শরিফুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষক মশিউর রহমান, প্রাক্তন শিক্ষক আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান, সদস্য আব্দুল লতিফ, ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম লুডু প্রমুখ। শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন মুরাদ আল কিবরিয়া ও শিরিন খাতুন।