বৃহস্পতিবার ● ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » চলনবিলের ফসলের মাঠ হলুদ চাদরে ঢাকা
চলনবিলের ফসলের মাঠ হলুদ চাদরে ঢাকা
পাবনা প্রতিনিধি :: শীতের শিশির ভেজা সকালে কুয়াশার চাদরে ঘেরা চলনবিল অঞ্চল বিস্তীর্ন প্রতিটি মাঠজুড়ে কেবল চোখে পড়ে সরিষার হলুদ ফুলের চাঁদরে ঢেকে গেছে দিগন্ত বিস্তৃত প্রকৃতি। প্রান্তর জুড়ে উঁকি দিচ্ছে শীতের শিশির ভেজা সরিষা ফুলের দোল খাওয়া গাছগুলো। সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুল শীতের সোনাঝরা রোদে ঝিকিমিকি করছে। এ এক অপরুপ সৌন্দর্য। যেন প্রকৃতি কন্যা সেজেছে “গায়ে হলুদ বরণ সাজে”। চারপাশের মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত চলনবিল ফসলের মাঠ।
চলনবিলের প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধানো বর্ণিল সমরাহ। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পন এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মূহুর্ত। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই ফুলগুলোকে।
গত ক’বছর ধরে সরিষা চাষে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ায় সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন চলনবিল অঞ্চলের কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে চলনবিল অঞ্চলে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হানা না দেওয়ায় এবং সরিষা চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় সরিষার পাশাপাশি আলু, গম ও ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এই সরিষা যথা সময়ে ঘরে তুলতে পাড়লে এবং বিক্রয় মূল্য ভাল পেলে বিগত দিনের লোকসান পুষিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।
শুরুতেই সরিষা ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে সরিষা চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে সরিষা ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
যথা সময়ে সরকারী পর্যায় থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে মান সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে সরিষার বীজ সহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হলেও মাঠ পর্যায়ে বেশ কিছু জমি চাষের উপযুগী না হওয়ায় কিছু কৃষকরা ঠিক সময়ে সরিষা বপণ করতে পাড়েনি। ফলে তারা অন্যান্য রবিশস্য চাষের দিকে ঝুকছেন।
এব্যাপারে বিলচলন ইউনিয়ন চরপাড়া গামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে আমি তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। ফলন ভালো হলে প্রতি একর জমিতে অন্তত ৮/১০মন হারে সরিষা উৎপাদন হবে।
এবিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আছাদুল্লাহ জানান, এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে, তবে এইসময় যদি একটা হালকা বৃষ্টি হতো তাহলে ফলন আরো ভালো হতো। অনেক কৃষক সরিষা জমিতে সেচ দিচ্ছে। এবার সরিষা আবাদি কৃষকরা বাড়তি মুনাফা পাবে বলে মনেকরছি।