মঙ্গলবার ● ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » কৃষক কাদিরের নকশী কাঁথার মাঠ
কৃষক কাদিরের নকশী কাঁথার মাঠ
উবায়দুল্লাহ রুমি, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :: মানসিক ভাবনা আর ভালোবাসার নিদর্শনের রূপ মাঠে ফুঁটিয়ে তোলেছেন কৃষক আব্দুল কাদির (৪০)। ৩৫শতক জমিতে শৈল্পিক বুননে ফসলের মাঠকে করে তুলেছেন দৃষ্টি নন্দন। প্রতিদিন শত শত মানুষ কৃষক কাদিরের ক্ষেত দেখতে ভীড় করছেন। এই কৃষকের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের পাড়াখালবলা গ্রামে। তিনি হাজী তারা মিয়ার দ্বিতীয় পুত্র। সরেজমিন মাঠে গিয়ে কৃষক কাদিরের সাথে কথা হলে তিনি জানান, তাঁর গ্রামে একটি বন্ধু মহল ডিজিটাল ক্লাব আছে। তিনি সেই ক্লাবের উপদেষ্টা সদস্য। ক্লাবের সদস্যরা তাঁর কাছে ডিজটাল পদ্ধতির কিছু করে দেখানোর জন্য আবদার করে। ক্লাবের সদস্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করতে লাগলেন কি করা যায়। হঠাৎ তার মাথায় এলো স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে পাওয়া রবি শস্য সরিষার প্রদর্শনি প্লটে চিত্র কলার আলোকে বীজ বপন করে কিছু নতুনত্ব সৃষ্টি করা যায় কিনা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্লাবের সদস্যদের সহায়তায় ৩৫শতক জমিতে হাল চাষ করে জমির বুকে চিত্রাংকন করেন। তারপর চিত্র রেখার মাঝে বারী-১৫ জাতের সরিষা বীজ বপন করেন। জমিতে সেই বীজ গজানোর পর পুরো ক্ষেত যেন জীবন্ত ছবির রূপ ধারন করে। বন্ধু মহল ক্লাবের সদস্যরা ক্ষেতের নাম দিয়েছেন নকশী কাঁথার মাঠ। ফসলের এই কারুকার্যময় চিত্ররূপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা দেখার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার শত শত মানুষ ক্ষেতের পাশে ভীড় করছেন। ক্ষেত ঘুরে দেয়া যায় দু’পাশে রয়েছে দু’টি নৌকা, জাতীয় ফুল শাপলা, চার কোণে চারটি লাভ চিহ্ন এবং ক্ষেতের মধ্যখানে একটি বড় লাভ চিহ্ন। যার ভিতরে রয়েছে কৃষক আব্দুল কাদিরের নাম। জমিতে এই নান্দনিক ছবি আঁকার পেছনে যুক্তি কি? জানতে চাইলে কাদির জানান, নৌকা আমি ভালোবাসি। নৌকা হলো আমার প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা ও গণমানুষের প্রতীক। শাপলা হলো আমাদের জাতীয় ফুল। ফুলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই শাপলা আঁকা। ক্ষেতের চার কোণে ও মধ্য ভাগে লাভ চিহ্ন আঁকার ব্যপারে জিজ্ঞাস করা হলে কাদির হেঁসে বলেন এর পেছনে একটি মজার গল্প রয়েছে। গল্পটি হলো কিশোর বয়সে উপজেলার সোহাগী গ্রামের এক কিশোরীর প্রেমে পড়েছিলাম। তখন সেই প্রেমের সেতু বন্ধন রচিত হয়েছিল চিঠির মাধ্যমে। প্রেমিকা আমাকে যখন চিঠি লিখতো তখন চিঠির চার কোণে চারটি এবং মাঝখানে একটি বড় লাভ চিহ্ন এঁকে দিতো। লাভ চিহ্নের ভেতরে লেখা থাকতো প্রেমিকার ও আমার নাম। কিশোর বয়সের সেই লাভ চিহ্নকে ফসলের জমিতে ফুঁটিয়ে তুলে ভালোবাসার প্রতি সম্মান দেখালাম। আমার প্রেমিকার নাম মকসুদা বেগম। ভালোবেসে তাকে বিয়ে করে সুখে সংসার করছি। আমাদের সংসারে এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। মাকসুদা আমার কাছে মমতাজের মত। সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রীর ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ পৃথিবী বিখ্যাত সুরম্য তাজমহল তৈরী করেছিলেন। আমি গরীব, আমার সামর্থ্য নেই, কিন্তু আমার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কমতি নেই। তাই তাজমহল বানাতে না পারলেও জমিতে সেই লাভ চিহ্নের নকশা এঁকে প্রেমের নিদর্শন হিসেবে প্রেয়সীকে লেখা চিঠির মতোই নিজের জমিতে প্রেমপত্র এঁকেছি। কৃষক আব্দুল কাদির আরো জানান, জমিতে দৃষ্টিনন্দন ফসল ফলানোর পর মানুষের কৌতূহল দেখে ক্লাবের সদস্যরাও আমার ক্ষেতের আদলে তারাও ফসল আবাদের প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন। গ্রামের যুবকরা বাজে নেশা ছেড়ে যদি কৃষি কাজে মনোযোগী হয়ে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয় তাহলেই আমার প্রয়াস স্বার্থক হবে বলে মনে করি। এব্যপারে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, কৃষক আবদুল কাদির মানসিক ভাবনার সফল বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন নিজের ফসলের মাঠে। তার ব্যতিক্রমী উদ্যোগটি প্রশংসনীয়।
ঈশ্বরগঞ্জে শীতার্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :: ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ী ইউনিয়নের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজ “আমাদের আঠারবাড়ী” এর উদ্যোগে ২০০ অসহায় শীতার্থ মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। জানা যায় আজ মঙ্গলবার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ী ইউনিয়নের ১১টি গ্রামে পেইজের এডমিন এবং স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে হত দরিদ্র অসহায় মানুষদের মাঝে ২শত কম্বল বিতরণ করেন। কনকনে শীতে গরম কাপড় কম্বল পেয়ে শীতে বিপন্ন নারী পুরুষ ফেসবুক পেইজ “আমাদের আঠারবাড়ী” এর প্রতি গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেন। শ্রীফলতলা গ্রামের অসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধী মরাজেন্নেছা (৫৫), রহিমা খাতুন (৬০), রফিজ উদ্দিন (৭০), বিউটি বেগম (৪৫), শিখা রাণী (৫৩), শ্যামল চন্দ্র (৪২) বলেন, ফেসবুক পেইজ “আমাদের আঠারবাড়ী” যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে তেমনি অন্যান্য সংগঠন যদি আমাদের মত অসহায়দের পাশে দাঁড়ায় তবে গ্রামীন জনপদের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তীব্র শীতে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। “আমাদের আঠারবাড়ী” পেইজের এডমিন অনিক কুমার নন্দী বলেন, আমাদের আর্থিক সামর্থ সামর্থ্য নেই কিন্তু অসহায় মানুষদের সাহায্য করার মনোবলের কোন ঘাটতি নেই। সুধী মহলে “আমাদের আঠারবাড়ী” ফেসবুক পেইজ আর্ত্মানবতার সেবার কাজের শতভাগ সততার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমরা সমাজের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তা নিয়ে আগামী দিনে বড় কোন কর্মসুচী নিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করেন আতিকুর রহমান সোহাগ, কাউসার আহমেদ আকাশ, আজিম, সম্রাট, পুনম, পুনক প্রমুখ।
ঈশ্বরগঞ্জে পুরস্কার বিতরণ
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির ৪৯তম শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০১৯ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ৩১ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন। প্রধান অেিতথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুছ সাত্তার, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান এ,কে,এম ফরিদ উল্লাহ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার পলি প্রমুখ।