শুক্রবার ● ৩ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » ঢাকা » দমন করে শাসন করতে যেয়ে সরকার দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে : সাইফুল হক
দমন করে শাসন করতে যেয়ে সরকার দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে : সাইফুল হক
ঢাকা :: আজ ৩ জানুয়ারি শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশী জুলুম-নির্যাতন-হস্তক্ষেপ অসাংবিধানিক ও বেআইনী ঘোষণা করে তা বন্ধে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন এবং বলেছেন নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ রুদ্ধ করা হলে রাষ্ট্র ও সমাজে চরম অগণতান্ত্রিক, চরম দক্ষিণপন্থী ফ্যাসিস্ট শক্তির উত্থানের জমিন তৈরী হয়। ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের নিয়মতান্ত্রিক পথ বন্ধ করা হলে তাতে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের সুযোগই কেবল বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন, গেল ৩০ ডিসেম্বর বিরোধী বাম জোটের কালো পতাকা মিছিলে পুলিশের বেপরোয়া হামলা-আক্রমন ও নেতাকর্মীদের অনেককেই গুরুতর আহত করা সরকারের দুর্বলতা ও ‘নার্ভাসনেসেরই’ বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, সরকার যত গণবিরোধী ও গণবিচ্ছিন্ন হয়ে উঠছে ততই তারা দেশকে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করছে। দমন করে শাসন করাকে সরকার নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় সরকার পুরোপুরি আমলা-প্রশাসন নির্ভর হয়ে পড়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে তারা এখন চরম কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী শাসন চালু করেছে; মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার ঘোষণার বিপরীত ধারায় দেশ পরিচালনা করছে; দেশ, দেশের জনগণ ও তাদের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত নিয়ে বিপজ্জনক রাজনৈতিক জুয়া জেলা হচ্ছে।
তিনি ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন নির্বাচন কমিশন তাদের স্বাধীন সাংবিধানিক ভূমিকাকে বিসর্জন দিয়ে সরকারি দলের অনুগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সরকারি দলের আকাঙ্খা বাস্তবায়ন করাই তাদের ধ্যান-ধারনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনী ব্যবস্থার ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্যতা ধ্বংস করে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থা তারা ভেঙ্গে দিয়েছে। ফলে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় বা স্থানীয় সরকারের কোন নির্বাচনই অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবার সুযোগ নেই।
সমাবেশে তিনি বলেন, সরকারের ক্ষমতার পিছনে জনগণের ম্যান্ডেট না থাকায় বিজেপি’র মুসলমান বিদ্বেষী ও বাংলাদেশ বিরোধী সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতিকেও সরকার বিরোধীতা করতে পারছে না; বরং ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার ভারত তোষণের নীতি অব্যাহত রেখেছে। এই অবস্থায় তিনি দেশ, জনগণ ও দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত রক্ষায় বিদ্যমান কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণসংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানান।
পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আকবর খান, আবু হাসান টিপু, মাহমুদ হোসেন, রাশিদা বেগম, মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, স্নিগ্ধা সুলতানা ইভা, শ্রমিক নেতা সাইফুল ইসলাম, অরবিন্দু বেপারী বিন্দু, পার্টির সংগঠক ইমরান হোসেন ও হুমায়ুন মুজিব প্রমুখ।
সমাবেশে বহ্নিশিখা জামালী বলেন, সরকার এতটাই বেসামাল যে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ-মিছিলকেও তারা ভয় পায়। ৩০ ডিসেম্বর সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকিসহ নেতাকর্মীদের উপর আক্রমন সরকারের সাহসের পরিচয় নয়।
আকবর খা বলেন, রাজপথে গণসংগ্রামে সরকারকে পরাজিত করা ছাড়া ভোটাধিকার-গণতন্ত্র কিছুই প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড, পল্টন, বিজয়নগর প্রদক্ষিণ করে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।