সোমবার ● ২৫ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » নাটোরের নলডাঙ্গা থানার ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু
নাটোরের নলডাঙ্গা থানার ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু
আব্দুল মজিদ, নাটোর প্রতিনিধি :: নাটোরের নলডাঙ্গা থানার ওসি সুবীর দত্তের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি সহ সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে৷ গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওসি সুবীর দত্তের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী ও সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করার খবর প্রচারিত হলে নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নাটোর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে সে সব বিষয়ে তদন্ত করার এই নির্দেশ দিয়েছেন। ২৪ জানুয়ারী তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম। নলডাঙ্গা থানার ওসি সুবীর দত্তের বিরুদ্ধে চাঁদাবজি ও নির্যাতন নিয়ে বেশ কয়েকটি খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পুলিশ সুপার সংবাদকর্মীদের সাথে নিয়ে ভূক্তভোগীদের সাথে কথা বলেন৷ এসময়ে ওসির বিরুদ্ধে প্রাথমিক ভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন৷ পরে সমসখলসি গ্রামের নির্যাতিত রাশিদা বেগম, শফিকুল ইসলাম লালু ও সোহেল খান ওসির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করলে সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে তদন্ত করে আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার৷ এ বিষয়ে নাটোরের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ওসির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত করছেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট দাখিল করবেন৷ পুলিশ সুত্র জানায়, নলডাঙ্গা থানার ওসি সুবীর দত্ত এর আগে একবার নাটোর সদর থানার এসআই থাকা অবস্থায় তার বিরম্নদ্ধে চাঁদাবাজি ও নির্যাতনে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার বেশ কিছু অভিযোগে তাকে নাটোর জেলা থেকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়৷ সর্বশেষ খুলনা জেলার কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক তদবিরে তার শশুর বাড়ি নাটোরে এসে গত বছরের ১২ আগষ্ট নলডাঙ্গার থানার ২১তম ওসির দায়িত্ব নেন৷ যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় সাধারণ মানুষদের ওপর তার চাঁদাবাজি ও নির্যাতন৷ ভুক্তভোগীরা জানান, কোন মামলা না থাকলেও মামলা রয়েছে বলে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা অভিযোগে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ওসি সুবীর দত্তের হুকুমে৷ এরপর জামায়াত-শিবিরের নাশকতা, হিরোইন, ফেন্সিডিল ও ইয়াবা সহ বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার জন্য চাপ দেওয়া হয়৷ টাকা না দিলে ওই সব মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করার হুমিক দেন সুবীর দত্ত৷ এসব মামলা থেকে রেহাই পেতে এবং সম্মান হারানোর ভয়ে অনেকেই তার চাহিদা মতো টাকা দিতে বাধ্য হন৷ সরেজমিনে নলডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা যায়, নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবীর দত্তের অত্যাচার আর চাঁদাবজির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছেন সাধারণ মানুষ৷ ওসি সুবীর দত্ত এখন সাধারণ মানুষের কাছে এক আতঙ্কের নাম৷ এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার শ্যমল কুমার মুখার্জী বলেন, পুলিশ জনগনের সেবক, পুলিশের কাছে সাধারণ মানুষ হয়রানি হবে এটা মেনে নেওয়া যায়না৷ আগামী দিনে নাটোর জেলার কোন মানুষ পুলিশের হাতে এ ধরনের হয়রানীর শিকার হলে ভূক্তভোগী যেনো বিষয়টি তাত্ক্ষণিক সরাসরি তাকে অবগত করেন৷