সোমবার ● ৬ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ৩২ বছরেও সেতু পুনঃ নির্মাণের পদক্ষেপ নেই
৩২ বছরেও সেতু পুনঃ নির্মাণের পদক্ষেপ নেই
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কালিরবাজার সংলগ্ন মানস খালের উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটির এখন নড়বড়ে অবস্থা। ওই সাঁকোর মাঝখানের বেশ কয়েকটি বাঁশের জাকলা ভেঙ্গে যাওয়ায় সেটি এখন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তারপরও ওর উপর দিয়েই ঝুকি নিয়ে স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী যাতায়াত করছে।
প্রধানের বাজার থেকে ঘাগোয়া ইউনিয়ন সদর রূপারবাজার হয়ে গাইবান্ধা জেলা সদর কিংবা গিদারী ইউপি সদর থেকে প্রধানের বাজার হয়ে কামারজানি বন্দর অথবা গুরুত্বপূর্ণ জনপদ কাউন্সিলের বাজার বোর্ড অফিস যেতে এ এলাকার মানুষের এই সাঁকোই একমাত্র ভরসা। এ সাঁকোর উপর দিয়ে গিদারী ও ঘাগোয়া ইউনিয়নের প্রধানের বাজার, সোনালেরভিটা, খলিসার পডল, বারটিকবী, খরিয়ার চর, ঝাকুয়ারপাড়া, বালিয়ার ছড়া, রহমাননগরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ১০টি গ্রামের প্রায় ১১ হাজার মানুষ ওই পথে গন্তব্যস্থলে যেতে এই সাঁকো দিয়েই আসা-যাওয়া করে। শুকনো মৌসুমে সাঁকোর নীচ দিয়ে যাতায়াত করা গেলেও বেশীর ভাগ পথচারী ঝুঁকি সত্ত্বে সাঁকোর উপর দিয়েই চলাচল করে। বর্ষাকালে এর বিকল্প কোনো সুযোগ নেই।
এলাকাবাসী জানায়, ১৯৮৮ সালের প্রলয়ংকারী বন্যায় এই সাঁকোর জায়গায় রংপুর জেলাবোর্ড নির্মিত একটি সেতু বন্যার পানির তোড়ে বিধ্বস্ত হয়ে ভেসে যায়। সেই সেতুর অস্তিত্ব আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কিন্তু এরপর ওই স্থানে আর কোন সেতু নির্মাণেরও উদ্যোগ নেয়া হয়নি। স্থানীয় জনগনের আবেদন নিবেদন কোন দপ্তরকেই নাড়া দিতে পারেনি। তাই স্থানীয় জনগন নিজেরাই যাতায়াতের সুবিধার্থে ব্রীজের জায়গায় সাঁকো নির্মাণ করে। সাঁকোটি ভেঙ্গে পড়লে বা ক্ষতিগ্রস্থ হলে নিজেরাই মেরামত বা পুনঃনির্মাণ করে রহমত আলী নামে ওই এলাকার এক কৃষক জানিয়েছেন। তবে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুনর রশিদ ইদু মিয়া দাবী করেন ইউনিয়ন পরিষদ থেকেই ওই সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হয়।
সাঁকো সংলগ্ন কালিরবাজারের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মিঠু মিয়া জানান, বিভিন্ন সময়ে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধি এলে তাদের কাছে সেতুটি পুনঃনির্মানের দাবী জানাই আমরা। কিন্তু ৩২ বছরেই ওই সেতুটি পুনঃনির্মানের কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
গিদারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইদু বলেন, বিভিন্ন সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সদর উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ, উপ-জেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), এলজিইডি’র গাইবান্ধা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় এবং জেলা প্রশাসনকে এলাকার জনগনের দুর্ভোগের বিষয়টি অবহিত করে সেতু নির্মাণের দাবী জানানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও এ সমস্যার সমাধান হয়নি।
এব্যাপারে সদর উপ-জেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ মোল¬¬া জানান, সাঁকোর স্থলে ৪৫ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মানের প্রস্তবনা প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত সেতু নির্মানের কাজ শুরু করা হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গাইবান্ধায় প্রস্তুতিমূলক সভা
গাইবান্ধা :: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আজ সোমবার গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন।
সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের দিন থেকে আগামী ১৭ মার্চ মুজিব বর্ষ শুরু উপলক্ষে গাইবান্ধা পৌর পার্কের শহীদ মিনার চত্বরে স্থাপিত কাউন্ট ডাউন সূচনা বোর্ডের উদ্বোধন করা হবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার সাংবাদিকদের নিয়ে কর্মসূচি সম্পর্কে অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলন, বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন, ৩টা ১৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল চত্বর থেকে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে বর্ণাঢ্য র্যালী, বিকাল ৪টায় পৌর পার্কে সূচনা বোর্ডের উদ্বোধন, প্রামান্য চিত্র প্রদর্শনী, সাড়ে ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সারাদেশব্যাপী একযোগে মুজিববর্ষের কাউন্ট ডাউন সূচনা বোর্ডের উদ্বোধনী প্রদর্শন এবং সন্ধ্যা ৬টায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোছা. জেবুন নাহার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর কবির, সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সভাপতি কেএম রেজাউল হক, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সাবু, মুক্তিযোদ্ধা ওয়াশিকার মো. ইকবাল মাজু, মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর, বিটিভি জেলা প্রতিনিধি আবেদুর রহমান স্বপন, বাসস জেলা প্রতিনিধি সরকার মো. শহিদুজ্জামান, সাংবাদিক এবিএম ছাত্তার, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক প্রমতোষ সাহা, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের জেলা সভাপতি আলমগীর কবির বাদল, জেলা শিক্ষা অফিসার মো. এনায়েত হোসেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. হোসেন আলী, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. তোফায়েল হোসেন খান প্রমুখ।
শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি বিপাকে গাইবান্ধার মানুষ
গাইবান্ধা :: তৃতীয় দফায় আবারও হিমেল হাওয়াসহ ঘন ঘন কুয়াশা পড়া অব্যাহত থাকায় গাইবান্ধা জেলার জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। আজ সোমবার সারাদিন কোথাও সূর্যের মুখ দেখা মেলেনি। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে গোটা গাইবান্ধা জেলা। সেইসাথে হিমেল হাওয়া বইতে থাকে। হঠাৎ করে শীত শুরু হওয়ায় এবং রাতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশা পড়ায় এ জেলার মানুষরা চরম বিপাকে পড়ে। হঠাৎ শুরু হওয়া এই শীতে জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ছিন্নমুলসহ চরাঞ্চলের মানুষরা বেশী দুর্ভোগের কবলে পড়ে। শীতে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা এতে কষ্ট পাচ্ছে বেশি। শহরের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে এখন মানুষের উপচে পড়া ভীড়। এই সুযোগে গাউন মার্কেট ও গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ব্যবসায়িরা কাপড়ের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে। ফলে অর্থাভাবে দরিদ্র মানুষদের পক্ষে শীতের কাপড় সংগ্রহ করা খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে ব্রহ্মপুত্র-যমুনাসহ অন্য নদ-নদীতে নৌ চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। ফলে মূল ভূমির সাথে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। রাতে ঘন কুয়াশার কারণে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চরাঞ্চলের মানুষদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকায় সরিষা গাছের ফুল ঝড়ে পড়ছে ও আসন্ন ইরি-বোরো বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকায় আলু কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হচ্ছে।